### এক অচেনা পথিকের গল্প
একদা এক গ্রামে ছিল একটি বিশাল বটগাছ। সেই বটগাছের নিচে প্রতিদিন বিকেলে গ্রামের মানুষেরা জটলা করত, গল্প করত আর সুখ-দুঃখের কথা বলত। সেই গ্রামের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছিল এক দীর্ঘ পায়ে-চলা পথ। সেই পথে রোজ কত পথিক আসত আর যেত, কেউ বিশ্রাম নিত, কেউ শুধু চলে যেত।
একদিন বিকেলে, সূর্য যখন পশ্চিমে হেলেছে, এক অচেনা পথিক এসে বটগাছের নিচে বসল। তার পরনে ছিল সাধারণ পোশাক, মুখে ক্লান্তির ছাপ, কিন্তু চোখে ছিল এক অদ্ভুত দীপ্তি। গ্রামের মানুষেরা তাকে দেখে প্রথমে একটু অবাক হলো, কারণ এমন পথিক তারা আগে দেখেনি।
এক বৃদ্ধ কৃষক এগিয়ে গিয়ে বললেন, "কোথা থেকে আসছেন বাবা? অনেক দূর থেকে এসেছেন বলে মনে হচ্ছে।"
পথিক হেসে বলল, "অনেক দূর থেকে, কিন্তু এর চেয়েও বেশি দূর যেতে হবে।"
গ্রামের মানুষেরা কৌতূহলী হয়ে উঠল। একজন যুবক জিজ্ঞেস করল, "আপনি কি কোনো সাধু, না অন্য কিছু?"
পথিক এবার শান্ত স্বরে বলতে শুরু করল, "আমি শুধু একজন পথিক। জীবনটাই আমার কাছে এক দীর্ঘ পথযাত্রা। আমরা সবাই এই পথের পথিক। আমরা আসি, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিই, তারপর আবার যাত্রা শুরু করি।"
তার কথা শুনে গ্রামের মানুষেরা অবাক হয়ে গেল। তারা ভাবতে শুরু করল, এই সাধারণ চেহারার মানুষটি কত গভীর কথা বলছে!
পথিক কিছুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, "আমাদের জীবনের লক্ষ্য কী জানেন? শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। পথে কত বাধা আসবে, কত কষ্ট আসবে, কিন্তু থামা যাবে না। কারণ, প্রতিটা অভিজ্ঞতাই আমাদের কিছু না কিছু শেখায়।"
সেদিন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। চাঁদ উঠছিল আকাশে। পথিক ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল। গ্রামের মানুষেরা তাকে অনুরোধ করল আরও কিছুক্ষণ থাকতে, কিন্তু পথিক বিনয়ের সঙ্গে বলল, "আমার পথ এখনও শেষ হয়নি। আমাকে যেতে হবে।"
সে হাসল, তারপর ধীরে ধীরে সেই দীর্ঘ পথের দিকে হেঁটে চলে গেল। গ্রামের মানুষেরা মুগ্ধ হয়ে দেখল সেই অচেনা পথিকের চলে যাওয়া। তারা সেদিন বুঝল, জীবন মানে শুধু বেঁচে থাকা নয়, জীবন মানে অবিরাম এগিয়ে যাওয়া। সেই বটগাছের নিচে বসে তারা সেই রাতের নীরবতায় পথিকের কথাগুলো বারবার মনে করল, আর যেন নতুন করে জীবনের অর্থ খুঁজে পেল।
Ashfaqur Rahman Sarthak
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?
Md Joynal abedin
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?