গল্প : পোড়োবাড়ির রহস্য
দ্বিতীয় পাঠ
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই আমরা পোড়োবাড়ির সামনে পৌঁছালাম। বিশাল লোহার গেটটা প্রায় পুরোটাই মরচে ধরে ভেঙে পড়েছে। আমরা সহজেই ভেতরে ঢুকে গেলাম। চারদিকে ভ্যাপসা, স্যাঁতসেঁতে গন্ধ। মাকড়সার জালে আর আগাছায় পুরো চত্বরটা ভরে আছে। দোতলা বাড়িটার দিকে তাকালেই গা ছমছম করে ওঠে। ভাঙা জানালাগুলো যেন অন্ধকারের চোখ হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা ভেতরে ঢুকতেই একটা হিমশীতল বাতাস আমাদের শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিল। ভেতরের পরিবেশ আরও ভয়ঙ্কর। বিশাল এক হলঘর, দেয়ালে পুরোনো তৈলচিত্রগুলো ঝুলছে, তবে ধুলোর আস্তরণে প্রায় অস্পষ্ট। এক কোণে একটা বিরাট সিঁড়ি দোতলায় উঠে গেছে। আমরা ঠিক করলাম, নিচতলাটা আগে ভালো করে ঘুরে দেখব। হলঘরের একপাশে একটা দরজা সামান্য খোলা ছিল। রাজু এগিয়ে গিয়ে দরজাটা ঠেলতেই বিকট ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ করে খুলে গেল। ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। টর্চের আলো ফেলতেই দেখলাম, ওটা একটা পুরোনো লাইব্রেরি। অসংখ্য বইয়ের তাক, কিন্তু বইগুলো উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে। ঘরের মাঝখানে একটা পুরোনো কাঠের চেয়ার পড়ে আছে, যেন একটু আগেই কেউ ওটাতে বসে ছিল। হঠাৎ করেই চেয়ারটা নিজে থেকে সামান্য নড়ে উঠল। আমরা চারজনেই সেটা দেখলাম। আমাদের বুকের ভেতরটা ধড়াস করে উঠল।
কিন্তু সেটা ছিল নিছকই এক সূচনামাত্র, আসল ভয়টা অপেক্ষা করছিল দোতলার অন্ধকারে।
