এক বৃদ্ধের কথা শুনে রাসূল (সাঃ) হেঁচকি দিয়ে কান্না করছিলেন।কিন্তু কেন?কি ঘটেছিলো বৃদ্ধের সাথে?
একবার রাসূল (সাঃ) এর কাছে এক সাহাবী এসে বললো, হে রাসূল (সাঃ), আমার বাবা আমার সম্পদ খরচ করে ফেলে কিন্তু আমাকে জিজ্ঞেস করে না। রাসূল (সাঃ) উত্তরে বললেন, তোমার বাবাকে ডেকে আনো।
যখন বৃদ্ধ বাবাকে ডাকা হলো, তখন তিনি রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে নবী (সাঃ) কেন আমাকে ডেকেছেন? উত্তর নবী (সাঃ) বললেন, আপনার ছেলে অভিযোগ করছে।
এই কথা শুনে বৃদ্ধ বাবা খুবই কষ্ট পেলেন এবং মনে মনে দু:খে কয়েকটি ছন্দ পড়লেন। পড়তে পড়তে তিনি সভার ভিতরে আসলেন।
যখন তিনি দরজা দিয়ে দরবারে ভিতরে আসলেন, তখন জীবরাঈল (আ আসলেন নবীর কাছে।
বললেন, হে রাসূল (সা, আল্লাহ বলেছেন এই ব্যক্তির সমস্যা পরে শুনবেন, প্রথম ওই কবিতা শুনেন যেটা তিনি ছেলের কষ্টে মনে মনে বলেছেন। উনি সবার সামনে বলেন নি, কিন্তু আল্লাহ শুনেছেন।
অত:পর রাসূল (সাঃ) বৃদ্ধ লোকটিকে বললেন, আপনার সমস্যার কথা পরে শুনি, আগে আপনি ওই কবিতা শুনান যেটা একটু আগে আপনি মনে মনে পড়লেন।
বৃদ্ধ লোকটি বললেন,আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর রাসূল।হে আল্লাহ রাসূল (সাঃ) আমি দুংখে কয়েকটি ছন্দ মনে মনে বলেছিলাম,জোরে বলে নি।
তবুও আপনার আল্লাহ সেটা আরশের উপর থেকে শুনেছেন।সত্যিকার অর্থেই আপনি সত্য এবং আপনার রব সত্য।
রাসূল (সাঃ) বললেন,কি বলেছিলেন?
বৃদ্ধ বললেন আমি মনে মনে বললাম,হে আমার পুত্র,যেদিন তুই জন্ম নিয়েছিলি,সে দিন থেকে আমি নিজের জন্যে জীবনযাপন করা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমরা তোর জন্যে জীবনের সফর শুরু করেছিলাম।
তোকে শীতল ছায়া বসানোর জন্যে,নিজে গরম বাতাসের সাথে লড়েছি।তোকে ঠান্ডা বাতাস থেকে বাঁচানোর জন্যে বরফের মধ্যে কাজ করেছি।তোর একটু হাসি দেখার জন্যে,সারারাত ছটফট করেছি।
নিজের সম্পূর্ণ যৌবনের শক্তি দিয়ে সারারাত নির্বোধ ষাঁড়ের মত খেটেছি,তোকে বড় করার জন্যে।
আমি বৃদ্ধ হতে লাগলাম,তুই যুবক হতে শুরু করলি।আমার কোমর কুঁজো হতে লাগলো তোর কোমর মজবুত হতে থাকলো।
আমার পা থেকে প্রাণ বের হয়ে গেলো,তোর পা শক্ত হলো।আমার হাত কাঁপতে শুরু লাগলো,তোর হাত মজবুত হলো।আমি দুর্বলতায় গড়াগড়ি করতে লাগলাম,তুই অংহকারী হতে লাগলি।
তখন আমার মনে পড়লো,যেমন আমি আমার ছেলের জন্যে ধাক্কা খেতাম,ওর জন্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম,ওর জন্যে আল্লাহর কাছে ছটফট করতাম।আজকে মনেহয় আমার এই পড়ন্ত বয়সে,ও আমার আশ্রয় হবে।
কিন্তু তোর মধ্যে যখন যৌবনের তরঙ্গ দৌড়াচ্ছিলো, আর বার্ধক্য আমাকে খেয়ে ফেললো।যখন যৌবন তোকে সোজা করলো আর বার্ধক্য আমাকে বাকা করে দিলো,কোমর কুঁজো করে দিলো।
তুই আমাকে একদম এমনভাবে দেখতে লাগলি যেন, তুই মালিক আর আমি চাকর।
তোর এমন চাহনি দেখে, আমি আমার ত্রিশ বছরের জীবন ভুলে গেছি। আর বলতে লাগলাম, হ্যাঁ হ্যাঁ আমি বাবা না, আমি চাকর।
হে আমার নবী (সাঃ),আপনিই বলুন,যদি ও আমার সন্তান হতো,তাহলে এভাবে না তাকাতো।
এই ছেলে আমার রাত জেগে ছটফট করাকে ভুলে গেছে,দিনের পর দিন আমার শীত-গরমের সাথে লড়াই করা ভুলে গেছে,নির্বোধ ষাঁড়ের মতো খাটুনিকে ভুলে গেছে,আমার সকল সুখ-দুংখকে দাফন করার কাহিনী ভুলে গেছে।
সব ভুলে আজকে আমার সাথে এমনভাবে কথা বলছে, যেন সে আমার মনিব।ঠিক আছে,আমার সন্তান আমি চাকরই,তুই আমার মালিক কিন্তু প্রতিবেশী তো।
মানুষ তো,প্রতিবেশিকে জিজ্ঞেস করে,কেমন আছে, কোন প্রয়োজন আছে কিনা?মাঝে মাঝে এইটুকুই জিজ্ঞেস করতি।
এই ঘটনা শুনে,আমার নবী (সাঃ) কান্না করতে করতে হেঁচকি দিয়ে ফেলেন।
এরপর রাসূল (সাঃ),ওই ছেলের কাঁদ ধরে বললেন,বাহির হয়ে যাও আমার সামনে থেকে,চোখের সামনে থেকে দূরে চলে যাও।তোমার সকল সম্পদ তোমার বাবার,আর এই বাবাই আজকে তোমার হাতে অপমানিত হলো।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন ইসলামের এক মহান সাহাবী, যিনি তাঁর জ্ঞান, ইবাদত এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসার জন্য সুপরিচিত। তাঁর জীবন ছিল ইসলামের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
নাম: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ।
উপাধি/কুনিয়াত: আবু আব্দুর রহমান।
বংশ: বনু হুজাইল।
ইসলাম গ্রহণ: প্রথম দিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম।
বিশেষত্ব: তিনি ছিলেন কুরআনের হাফেজ এবং শ্রেষ্ঠ কারীদের মধ্যে একজন।
ইসলাম গ্রহণ ও প্রাথমিক জীবন
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) মক্কার একজন রাখাল ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির প্রথম দিকেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাটি খুবই শিক্ষণীয়। একদিন তিনি মক্কায় উট চরাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও আবু বকর (রা.) তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তারা ইবনে মাসউদকে দুধের জন্য একটি বকরির কথা বলেন। ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন যে, এটি তার মালিকের সম্পত্তি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি ছোট বকরি চেয়ে নিলেন যা তখনও দুধ দিতে শেখেনি। রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নামে সেটির ওলানে হাত বুলাতেই সেটি দুধে ভরে গেল। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে ইবনে মাসউদ (রা.) তাৎক্ষণিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্য ও সেবা
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খুবই ঘনিষ্ঠ সাহাবী ছিলেন। তিনি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে অধিকাংশ সময় কাটাতেন। রাসূল (সা.) যখন সফরে যেতেন, ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বিছানা, মেসওয়াক, জুতা ইত্যাদি বহন করতেন। এমনকি তাঁকে 'সাহিবুল নালাইন' (জুতাবাহী) উপাধিতে ডাকা হতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে তাঁর পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই দেখতেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
কুরআন ও হাদিসের জ্ঞান
ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন কুরআনের একজন শ্রেষ্ঠ ক্বারী ও জ্ঞানী। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে নিজে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি রাসূল (সা.)-এর মুখ থেকে ৭০টিরও বেশি সূরা মুখস্থ করেছিলেন। রাসূল (সা.) একবার বলেছিলেন, "যে ব্যক্তি কুরআনকে তাজা অবস্থায় পড়তে চায়, সে যেন ইবনে উম্মে আবদ (ইবনে মাসউদ)-এর কিরাত অনুযায়ী পড়ে।" তিনি অসংখ্য হাদিসের বর্ণনাকারীও ছিলেন এবং ফিকাহ শাস্ত্রেও তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল।
ইবাদত ও বিনয়
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) অত্যন্ত বিনয়ী ও পরহেজগার ছিলেন। তিনি দিনের বেলায় রোজা রাখতেন এবং রাতের বেলায় নামাজে দাঁড়িয়ে কাটাতেন। তাঁর বিনয় এতটাই ছিল যে, তিনি নিজেকে একজন সাধারণ মুসলিমের চেয়ে বেশি মনে করতেন না।
জিহাদে অংশগ্রহণ
তিনি বদর, উহুদ, খন্দক সহ প্রায় সকল যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধে তিনি আবু জাহেলকে হত্যা করে ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
মৃত্যু
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ৩৩ হিজরীতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর জানাজার নামাজ হযরত উসমান (রা.) পড়িয়েছিলেন এবং তাঁকে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর জ্ঞান, ইবাদত, বিনয় এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন ইসলামের এক মহান সাহাবী, যিনি তাঁর জ্ঞান, ইবাদত এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি গভীর ভালোবাসার জন্য সুপরিচিত। তাঁর জীবন ছিল ইসলামের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
নাম: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ।
উপাধি/কুনিয়াত: আবু আব্দুর রহমান।
বংশ: বনু হুজাইল।
ইসলাম গ্রহণ: প্রথম দিকের ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম।
বিশেষত্ব: তিনি ছিলেন কুরআনের হাফেজ এবং শ্রেষ্ঠ কারীদের মধ্যে একজন।
ইসলাম গ্রহণ ও প্রাথমিক জীবন
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) মক্কার একজন রাখাল ছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির প্রথম দিকেই ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনাটি খুবই শিক্ষণীয়। একদিন তিনি মক্কায় উট চরাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও আবু বকর (রা.) তাঁর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তারা ইবনে মাসউদকে দুধের জন্য একটি বকরির কথা বলেন। ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন যে, এটি তার মালিকের সম্পত্তি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) একটি ছোট বকরি চেয়ে নিলেন যা তখনও দুধ দিতে শেখেনি। রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নামে সেটির ওলানে হাত বুলাতেই সেটি দুধে ভরে গেল। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে ইবনে মাসউদ (রা.) তাৎক্ষণিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্য ও সেবা
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর খুবই ঘনিষ্ঠ সাহাবী ছিলেন। তিনি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে অধিকাংশ সময় কাটাতেন। রাসূল (সা.) যখন সফরে যেতেন, ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর বিছানা, মেসওয়াক, জুতা ইত্যাদি বহন করতেন। এমনকি তাঁকে 'সাহিবুল নালাইন' (জুতাবাহী) উপাধিতে ডাকা হতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে তাঁর পরিবারের একজন সদস্য হিসেবেই দেখতেন এবং তাঁকে নিজের ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছিলেন।
কুরআন ও হাদিসের জ্ঞান
ইবনে মাসউদ (রা.) ছিলেন কুরআনের একজন শ্রেষ্ঠ ক্বারী ও জ্ঞানী। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে নিজে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি রাসূল (সা.)-এর মুখ থেকে ৭০টিরও বেশি সূরা মুখস্থ করেছিলেন। রাসূল (সা.) একবার বলেছিলেন, "যে ব্যক্তি কুরআনকে তাজা অবস্থায় পড়তে চায়, সে যেন ইবনে উম্মে আবদ (ইবনে মাসউদ)-এর কিরাত অনুযায়ী পড়ে।" তিনি অসংখ্য হাদিসের বর্ণনাকারীও ছিলেন এবং ফিকাহ শাস্ত্রেও তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল।
ইবাদত ও বিনয়
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) অত্যন্ত বিনয়ী ও পরহেজগার ছিলেন। তিনি দিনের বেলায় রোজা রাখতেন এবং রাতের বেলায় নামাজে দাঁড়িয়ে কাটাতেন। তাঁর বিনয় এতটাই ছিল যে, তিনি নিজেকে একজন সাধারণ মুসলিমের চেয়ে বেশি মনে করতেন না।
জিহাদে অংশগ্রহণ
তিনি বদর, উহুদ, খন্দক সহ প্রায় সকল যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে অংশগ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধে তিনি আবু জাহেলকে হত্যা করে ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
মৃত্যু
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) ৩৩ হিজরীতে মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর জানাজার নামাজ হযরত উসমান (রা.) পড়িয়েছিলেন এবং তাঁকে জান্নাতুল বাকীতে দাফন করা হয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) তাঁর জ্ঞান, ইবাদত, বিনয় এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাঁর জীবন মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ,
পছন্দ হওয়া সত্ত্বেও সামর্থ্যের অভাবে কোনো জিনিস কেনা থেকে বিরত থাকাটা সত্যিই অনেক কষ্টের। এই অনুভূতিটা বিভিন্নভাবে আমাদের মনকে প্রভাবিত করে।
এই কষ্টটা অনেকটা প্রিয় কোনো মানুষের কাছাকাছি গিয়েও তাকে ছুঁতে না পারার মতো। যখন আপনি কোনো একটা জিনিস খুব মন দিয়ে পছন্দ করেন, তখন সেটার সঙ্গে আপনার একধরনের মানসিক বন্ধন তৈরি হয়ে যায়। আপনি মনে মনে সেটার মালিক হয়ে যান, কল্পনা করেন যে জিনিসটা আপনার কাছে থাকলে আপনার জীবনটা কেমন হতো। কিন্তু যখন বাস্তবতার কঠিন দেয়াল সামনে আসে, তখন সেই সব কল্পনা ভেঙে যায়। এটা শুধু একটা জিনিস না পাওয়ার কষ্ট নয়, বরং একটা স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষার অপূর্ণতা।
এই অভিজ্ঞতার আরও কিছু দিক হলো:
হতাশা: যখন আপনার মন আর সামর্থ্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তখন নিজের ওপর একধরনের হতাশা জন্ম নেয়। মনে হয় যেন আপনি আপনার জীবনের কিছু চাওয়া পূরণ করতে পারছেন না।
শূন্যতা: দোকান থেকে খালি হাতে ফিরে আসার সময় একটা শূন্যতা কাজ করে। যে আনন্দের অনুভূতি নিয়ে আপনি জিনিসটা দেখতে গিয়েছিলেন, তার পরিবর্তে একটা অপ্রাপ্তির বেদনা আপনার মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।
আত্মসম্মানে আঘাত: অনেকের ক্ষেত্রে, এই পরিস্থিতিটা আত্মসম্মানেও কিছুটা আঘাত দেয়। সামর্থ্য না থাকাটা কখনো কখনো নিজেকে দুর্বল বা ব্যর্থ মনে করায়, যদিও এটা সম্পূর্ণই আর্থিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
অসহায়ত্ব: পছন্দের জিনিসটা পাওয়ার জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে না পারার অসহায়ত্ব মনকে নাড়া দেয়। এই অনুভূতিটা অনেক গভীর হতে পারে।
এই ধরনের পরিস্থিতিতে, নিজের মনকে বোঝানো জরুরি যে সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা মানে জীবনের সব স্বপ্ন থেমে যাওয়া নয়। আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে এবং ভবিষ্যতে হয়তো আপনি আপনার পছন্দের জিনিসটি কিনতে পারবেন। তখন সেই জিনিসের আনন্দ অনেক বেশি হবে। এই কষ্টটা আসলে আমাদের আরও বেশি পরিশ্রমী এবং ধৈর্যশীল হতে শেখায়।
দুনিয়াবি কাজ সহজ করার জন্য পবিত্র কুরআনে কিছু নির্দিষ্ট সূরা তিলাওয়াতের ফজিলত বিভিন্ন হাদীসে পাওয়া যায়, যেগুলো নিয়মিত পড়লে আল্লাহ তাআলা রিজিক, কাজের সহজতা, হৃদয়ের প্রশান্তি, সমস্যা থেকে মুক্তি দান করেন।
নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা ও হাদীস/আছারের আলোকে ফজিলতসহ দেওয়া হলো:
✪ ১. সূরা ইয়াসীন (সূরা ৩৬)
❝যে ব্যক্তি দিনের শুরুতে সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াত করবে, তার দুনিয়াবি প্রয়োজন পূরণ করে দেওয়া হবে।❞
✅ ফজিলত:
- কাজ সহজ হয়
- রিজিকের দরজা খুলে যায়
- মন শান্ত হয়
📚 **রেফারেন্স* মিশকাতুল মাসাবীহ: ২১৫৪ | দরামী: ৩৪০৭
✪ ২. সূরা আল-ইনশিরাহ (সূরা ৯৪)
❝নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গে রয়েছে স্বস্তি।❞
(আয়াত ৫-৬)
✅ ফজিলত:
- জীবনের টেনশন কমায়
- কাজের জটিলতা দূর করে
- মানসিকভাবে শক্তি দেয়
📚 **রেফারেন্স* কুরআন মাজীদ, সূরা ইনশিরাহ, আয়াত ৫-৬
✪ ৩. সূরা আল-ওয়াকিয়া (সূরা ৫৬)
❝সূরা আল-ওয়াকিয়া হলো রিজিক বৃদ্ধির সূরা।❞
✅ ফজিলত:
- রিজিক বৃদ্ধি
- অভাব-অনটন দূর হয়
- দারিদ্র্য থেকে নিরাপদ রাখা
📚 **রেফারেন্স* ইবনে আসাকির | আল বায়হাকি | ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম এবং অন্যান্য বুযুর্গদের আমল সূত্রে
✪ ৪. সূরা ফাতিহা (সূরা ১)
❝সূরা ফাতিহা হচ্ছে ‘শিফা’ (আরোগ্য) ও কাজের বরকতের সূচনা।❞
✅ ফজিলত:
- যেকোনো কাজ শুরুর আগে পড়লে বরকত হয়
- সমস্যার সমাধান সহজ হয়
📚 **রেফারেন্স* সহিহ বুখারী: ৫০০৭
✪ ৫. সূরা আল-বাকারাহ (সূরা ২)
❝এই সূরা পড়লে শয়তান ঘর থেকে পালায় এবং বরকত নাজিল হয়।❞
✅ ফজিলত:
- বাড়িতে ও জীবনে বরকত আসে
- কাজে শয়তানি বাধা দূর হয়
- দুনিয়াবি সিদ্ধান্তে হেদায়াত মেলে
📚 **রেফারেন্স* সহিহ মুসলিম: ৭৮০
গল্প : বেহালার সুর
একজন শখের সুরকার, পলাশ, এক পুরনো দোকান থেকে একটা অ্যান্টিক বেহালা কিনেছিল। বেহালাটা হাতে নিলেই তার মনে হতো, এর মধ্যে কোনো এক অজানা কাহিনী লুকিয়ে আছে। রাতে যখন সে বেহালাটা বাজাতে বসত, তার আঙুলগুলো নিজে থেকেই এক করুণ, বিষণ্ণ সুর বাজাতে শুরু করত। সুরটা এতটাই মর্মস্পর্শী ছিল যে, পলাশের নিজেরই চোখে জল এসে যেত। একদিন রাতে সুরটা বাজানোর সময় সে দেখল, ঘরের কোণে এক তরুণীর ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে কাঁদছে। পলাশ পরে জানতে পারে, বেহালাটার আগের মালিক ছিল এক তরুণী, যে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এই বেহালা বাজাতে বাজাতেই আত্মহত্যা করেছিল। তার অতৃপ্ত আত্মাই বেহালার সুরে নিজের কষ্ট প্রকাশ করত।
#hauntedviolin #ভৌতিকসুর #অতৃপ্তপ্রেম #সংগীতেরভূত #romantichorror
গল্প : চিত্রকরের শেষ ক্যানভা
একজন উঠতি চিত্রকর হিসেবে সৌরভ বেশ নাম করেছিল। সে সস্তায় একটা পুরনো স্টুডিও ভাড়া নিয়েছিল। স্টুডিওর আগের মালিক, হিরণ্ময় সেন, একজন গুণী শিল্পী ছিলেন, যিনি রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান। স্টুডিও গোছাতে গিয়ে সৌরভ একটা সাদা ক্যানভাস খুঁজে পায়, যেটা ইজেলে দাঁড় করানো ছিল। সে ভাবল, এটাতে নতুন ছবি আঁকবে। কিন্তু পরদিন সকালে এসে দেখে, ক্যানভাসে কয়েকটা কালির আঁচড়। সে ভাবল, হয়তো তার মনের ভুল। কিন্তু প্রতিদিন সকালে আঁচড়গুলো বাড়তে লাগল। ধীরে ধীরে একটা ছবি ফুটে উঠতে লাগল—একটা মানুষের যন্ত্রণাকাতর মুখ। সৌরভ বুঝতে পারল, এটা হিরণ্ময় সেনের মুখ। শেষ রাতে সে দেখল, ছবিটা প্রায় সম্পূর্ণ, ছবির মানুষটা যেন ক্যানভাস থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। ছবির চোখ দুটো জীবন্ত হয়ে উঠেছিল এবং ফিসফিস করে বলছিল, "আমাকে শেষ করো... মুক্তি দাও...।" সৌরভ ভয়ে সেই ক্যানভাস পুড়িয়ে ফেলে।
#ভৌতিকছবি #hauntedpainting #শিল্পীরভূত #রহস্যময়ঘটনা #হররগল্প
গল্প : অভিশপ্ত শাড়ি
পুরনো দিনের শাড়ির প্রতি রেশমার একটা অদ্ভুত টান ছিল। নিউ মার্কেটের এক অ্যান্টিক দোকান থেকে সে একটা টুকটুকে লাল বেনারসি কিনেছিল, সোনালী জরির কাজে ভরা। শাড়িটা গায়ে জড়াতেই তার মনে হলো, এ যেন শুধু কাপড় নয়, একটা ইতিহাস। সেদিন রাতে পার্টিতে শাড়িটা পরে যেতেই সবাই খুব প্রশংসা করল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর থেকেই শুরু হলো বিপত্তি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়িটা খোলার সময় রেশমার মনে হলো, তার প্রতিবিম্বটা হাসছে না, বরং করুণ চোখে তাকিয়ে আছে। রাতে ঘুমানোর সময় সে স্বপ্ন দেখল, সে নিজে নয়, অন্য কোনো এক বধূ ওই শাড়ি পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে এবং তার স্বামী তাকে বিষ খাইয়ে দিচ্ছে। ঘুম ভেঙে সে দেখল, শাড়িটা আলমারিতে নেই, তার বিছানার পাশে সুন্দর করে ভাঁজ করে রাখা। যেন কেউ এইমাত্র রেখে গেল। এরপর থেকে প্রায়ই সে শাড়ির মালিকের শেষ মুহূর্তের যন্ত্রণা অনুভব করত।
#অভিশপ্তশাড়ি #hauntedsaree #ভৌতিকগল্প #হররস্টোরি #bengalihorror
গল্প : শেষ শো
শহরের শেষ সিঙ্গল-স্ক্রিন সিনেমা হল 'মিনার' বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। শেষ শো-তে একটা পুরনো দিনের বাংলা ছবি দেখানো হচ্ছিল। রাত ৯টার শো-তে দর্শক ছিল হাতেগোনা। ছবির নায়ক অনীকও এসেছিল নস্টালজিয়ার টানে। সে যখন হলে ঢোকে, তখন দেখেছিল পেছনের সারিতে এক মহিলা একা বসে আছেন। সিনেমা চলাকালীন অনীকের বারবার মনে হচ্ছিল, পেছনের ওই মহিলা কাঁদছেন। কান্নার শব্দটা কেমন যেন অস্বাভাবিক। ইন্টারভ্যালের সময় আলো জ্বলতেই অনীক পেছনে তাকিয়ে দেখল, চেয়ারটা খালি। সে ভাবল, হয়তো বাথরুমে গেছে। কিন্তু সিনেমা শেষ হওয়ার পরেও মহিলাটি আর ফেরেনি। হল থেকে বেরোনোর সময় সে ম্যানেজারের সাথে কথা বলছিল। ম্যানেজার একটা পুরনো ছবি দেখিয়ে বলল, "এই মহিলার জন্যই হলটা বন্ধ করে দিচ্ছি। ইনি এই হলের মালিকের স্ত্রী ছিলেন। ২০ বছর আগে এই হলেই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। তারপর থেকে প্রায়ই শেষ শো-তে উনি নিজের প্রিয় ছবিটা দেখতে আসেন।"
#সিনেমাহলেরভূত #শেষশো #ভৌতিকঅভিজ্ঞতা #ছমছমেগল্প #hauntedcinema
গল্প : জিনের আতর
পুরনো ঢাকার এক গলি থেকে এক অদ্ভুত সুন্দর শিশি কিনেছিল ফাহিম। বিক্রেতা বলেছিল, এটা নাকি নবাবী আমলের আতর। শিশিটা খুলতেই এক তীব্র, মাদকতাপূর্ণ সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ল। ফাহিম রাতে ঘুমানোর আগে এক ফোঁটা আতর লাগিয়ে নিল। মাঝরাতে তার ঘুম ভেঙে গেল। সে দেখল, ঘরের কোণে এক বিশাল, ধোঁয়ার মতো অবয়ব দাঁড়িয়ে আছে। অবয়বটা বলল, "হাজার বছর পর আমাকে মুক্ত করার জন্য ধন্যবাদ, মালিক। আমি তোমার তিনটি ইচ্ছা পূরণ করব।" ফাহিম প্রথমে ভয় পেলেও, লোভে পড়ে গেল। সে প্রথম ইচ্ছায় প্রচুর ধনসম্পদ চাইল। পরদিন সকালেই সে লটারিতে কোটি টাকা জিতল। দ্বিতীয় ইচ্ছায় সে তার অফিসের সবচেয়ে বড় পদটা চাইল। সেদিনই তার বস হার্ট অ্যাটাকে মারা গেল এবং সেই পদটা ফাহিম পেয়ে গেল। তৃতীয় ইচ্ছা চাওয়ার আগে জিনটা হাসল। বলল, "শেষ ইচ্ছাটা আমি নিজের থেকে পূরণ করি। আমি তোমার শরীরটা চাই।" এই বলে জিনটা ফাহিমের শরীরে প্রবেশ করল। ফাহিমের আত্মা এখন সেই আতরের শিশিতে বন্দী।
#জিন #jinnstory #ভৌতিকগল্প #অভিশাপ #লোভেরফল
MD shuvo ali
Удалить комментарий
Вы уверены, что хотите удалить этот комментарий?
MD shuvo ali
Удалить комментарий
Вы уверены, что хотите удалить этот комментарий?