যাকাত ইসলামিক বিধান অনুসারে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট অংশ ধন-সম্পদের দান করার প্রক্রিয়া, যা গরিব-দুঃখী মানুষদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে করা হয়। এটি ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ এবং মুসলিমদের ওপর এটি ফরজ।
যাকাতের মূল উদ্দেশ্য: যাকাতের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টন এবং গরিবদের সাহায্য করা। এটি ধনী মুসলিমদের কাছে একটি আত্মবিশ্লেষণের সুযোগ তৈরি করে, যেখানে তারা তাদের ধন-সম্পদের অংশ অন্যদের জন্য দান করে।
যাকাতের পরিমাণ: যাকাতের পরিমাণ সাধারণত সম্পদের ২.৫%। এটি মুসলিমদের কাছে অবশ্যই দেওয়া উচিত যদি তাদের কাছে নিদিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকে। সাধারণত যে পরিমাণ সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ হয়, তা হল ৮৫ গ্রাম সোনা বা তার সমমূল্য অর্থ।
যাকাত প্রদানের শর্ত: ১. ধনী ব্যক্তি: যে ব্যক্তি নিত্যদিনের খরচ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য ব্যয় করে, তার অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। ২. ঋণমুক্ত অবস্থা: ঋণের বোঝা না থাকলে যাকাত দিতে হবে। ৩. এক বছর অতিবাহিত হওয়া: যাকাতের জন্য সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হতে হবে।
যাকাতের গন্তব্য: যাকাত নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীকে প্রদান করতে হয়, যেমন:
গরিব
মিসকিন (অত্যন্ত দরিদ্র)
যাদের উপর ঋণ রয়েছে
আল্লাহর পথে সংগ্রামী
মুসাফির (ভ্রমণকারী)
যাকাতের গুরুত্ব: যাকাত শুধুমাত্র অর্থের দানে সীমাবদ্ধ নয়, এটি মুসলিমদের অন্তরে দয়া, সহানুভূতি এবং সাম্য প্রতিষ্ঠা করে। এটি সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করে এবং মুসলিমদের মধ্যে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা নিশ্চিত করে।
এই দানের মাধ্যমে সমাজে সম্পদের অপ্রতুলতা দূর করা সম্ভব, যার ফলে ইসলামিক সমাজে ভারসাম্য বজায় থাকে।
উপসংহার: যাকাত মুসলিমদের আত্মবিশ্বাস, নৈতিকতা এবং ধর্মীয় দায়িত্ববোধের পরিপূর্ণ প্রতিফলন। এটি কেবল একজন মুসলিমের ব্যক্তিগত দান নয়, বরং একটি সামগ্রিক সমাজব্যবস্থার উন্নতির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।