"সোনালীর" অতীত
আজিজুর রহমান
(ছোট গল্প) গাজীপুর
আশ্বিনের মেঘ ধূয়া আকাশ, সারাদিন টিপ টিপ বৃষ্টির সাথে হাল্কা দক্ষিনা বাতাস বইছে। রাতে সেদিন আধফালি চাঁদ উঠেছিল আকাশে।
হাসানের ফোনে অনবরত রিং টং বেজেই চলছে।
রাত প্রায় দশটা বেজে ত্রিশ মিনিট হবে।
হ্যালে হাসান ভাই ------
সত্যি আগামী কাল আসবেন হাসান ভাই,
কথা গুলো গভীর আবেগ নিয়ে বলছে সোনালী।
কথা যখন দিয়েছি ইনশাল্লাহ্ আসবো।
জীবনের কিছু অলেখা কবিতা থাকে,যা আর পড়ে দেখা হয় না, থেকে যায় মনের অগোচরে।
পৃথিবীতে অদেখা কিছু মায়া ভিষন ভাবে আকড়ে
ধরে, যা না ছেড়ে আসা যায়, অথবা মাড়িয়ে যাওয়া যায় না ।
ফুফাতো ভাই শাহীনের পরিচিত এই সোনালী।
শাহীন বাংলা লিং টাওয়ারের নেট ওয়ারের কাজ
করতো, আর সেই সুবাদে বিভিন্ন জিলায় থানায় যাওয়া হত। রং নম্ভর অথবা কি ভাবে পরিচিত সে আজও জানা হয় নি। ওরা কথা বলছিলো আমি সেদিন শূনার দর্শক ছিলাম মাত্র।
হাসান কেমন আছো ভাই, কার সাথে কথা বলছো ?
আমার বন্ধুর সাথে, তুমি কথা বলবা ভাই।
না আমি চিনি না কি কথা বলবো !
শেষ পর্যন্ত জেল খানার মাঠে বেশ কিছুক্ষন কথা বলেছিলাম।
তারপর,
সেই থেকে কথা বলা আর আজ এই পর্যন্ত।
নাটরের লাল পুরের আব্দূল পুর রেল ষ্টেশনের
কাছেই সোনালীদের বাড়ি। কিন্তু নানা বাড়ি মহর কয়া থেকেই পড়া লেখা করে। জীবন বড় বৈচিত্রময়
চলার প্রতিটি বাঁকে স্মৃতির আখড়া পড়ে থাকে।
শতদিনের কত কথার বিড়ম্ভনায় একদিন মনলোভা
মন।
শত মাইলের ব্যবধানকে অতিক্রম করে সামনে
দাড় করিয়ে দেয়। জীবন উপলদ্ধির উৎকুন্ঠো দাড়ে।
অপেক্ষিত নয়ন সুশীতল হয়, শুধু এক নজর দেখিবার তরে। হাজার উৎকুন্ঠার মধ্য দিয়ে বিরহের
এই জ্বালা শেষ হল ১০/০৯/২০০৮ এর সকালে।
সকাল দশটায় ইশ্বরদীর রেল জংশনের ওভার বিজ্রের উপর অপেক্ষারত হাসান, পরনে কমলা কালারের হাফ গেন্জি এবং কালো প্যান্ট পায় সু।
সকালে বেশ খানিক বৃষ্টি ঝরে গেছে এখন আকাশ
বেশ হাল্কা সাদা সাদা মেঘ উড়ে পাড়ি জমায় দূর
অজানায়।
পুর্ব আকাশে তখনো সূর্য উকি দেয়নি,
মানুষ ছুটে চলছে তার নিজ নিজ গন্তর্বে।
অপেক্ষা বড়ই বিভান্তিকর বিষয় আবার অচেনা কোন ষ্হানে দাড়িয়ে থাকাও কষ্টকর।
বুকের ধূকধূকানী ক্রশম বেড়েই চলছে, কিন্ত অচেনা একটা সুখ তারই পাশে অনুভব করছে হাসান।
সোনালী জীবন বড়ই অদ্ভূত তাই তোমাকে আর ভুলা হল না।
ছিপ ছিপ জল কেলিয়ে নদীর ঠিক মাঝ খানে যেখানে ডাহুকেরা ভীড় জমায় না।
ঠিক সেই খানে দুঃখ গুলো জমে থাকে নদীর মত করে। জীবন তেমন বহতা নদীর মত কিছু দুঃখ
জমে থাকে বুকের ঠিক মাঝ খানে।
অপরিচয়ের পথ ধরে চলতে চলতে একদিন পরিচয়ের মুহুর্ত গুলো স্মৃতির অঙ্গিনায় দোলা দিয়ে যায় দক্ষিনা হাওয়ার সাথে।
স্মৃতির অষ্টোপ্রহরে ঈশ্বরদীর রেল জংসন,
ঘুরে দেখা জীবনের একটা স্মৃতির পট ভূমি মাত্র।
যেখানে কেউ নেই, আছে শুধু বেদনা ভরা সোনালীর অতীত ।
সোনালী নামের সেই মেয়েটি, যে আমাকে মায়ার টানে টেনে নিয়ে গিয়ে ছিল ঈশ্বরদীর রেল জংসন।
সুদূর ফরিদপুর জিলার চরভদ্রাসন উপজিলার শহর তলীতে আমার বসবাস। এই চর ভদ্রাসন উপজিলা প্রায় অর্ধেকটা পদ্মা নদীতে বিলিন
তার পরও আভিজার্তে একটা রুপ এখনো বিরাজমান।
পৃতিলতার মেল বন্ধনে সমভাগে জীবন এগিয়ে
চলছে বটে !
স্মৃতির পাতায় হারিয়ে যাওয়া কিছু স্মৃতি খুজে ফিরা মাত্র।
--------------চলবে