পরিচয় ও মর্যাদা
নাম ও অবস্থান: “মিকাইল” শব্দের অর্থ “যাকে আল্লাহ সমর্থন দিয়েছেন”। جبريل (আ.)-এর পরে মালায়িকা-দের দ্বিতীয় প্রধান হিসেবে মিকাইল (আ.)-এর নাম এসেছে (তিরমিযি ৮৮৩)।
আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য: কুরআনের (সুরা বাকারা ২:৯৮) আয়াতে বলা হয়েছে, মিকাইল-কে শত্রু বলে ধরা কেবল ঈমানহীনদের কাজ; এর মাধ্যমে তাঁর মর্যাদা স্পষ্ট।
দলনেতা: কিছু হাদিসে বর্ণিত—বিজয়ী লশ্করের সাফল্যের আগেই মিকাইল (আ.) তাঁদের জন্য অনুগ্রহ ও দোয়া নিয়ে অবতরণ করেন (মুসলিম ১৭৬৩)।
দায়িত্ব ও কর্মক্ষেত্র
দায়িত্ব ব্যাখ্যা প্রভাব
মেঘ ও বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ আল্লাহ্র হুকুমে কোথায় বৃষ্টি হবে, কতটুকু হবে, কখন হবে—সেটির ব্যবস্থাপনা কৃষি ও পানিসম্পদে ভারসাম্য, মানুষ-পশুর জীবনরক্ষার উপকরণ
রিজিক বণ্টন ফসল, ফল-মূল, শস্য, পশুচারণ—সব রিজিকের তদারকি জীবনের আর্থ-সামাজিক চাকা সচল রাখা
রহমতের দূত মু’মিন-দের দোয়া ও তাওবা কবুলের সুবর্ণ মুহূর্তে রহমতের বৃষ্টি নামানো অন্তরে সান্ত্বনা ও আল্লাহ-র করুণা অনুভব
শিক্ষণীয় দিক
1. রিজিকের হাকিকত: আমাদের প্রয়াস জরুরি হলেও রিজিকের প্রকৃত নিয়ন্তা আল্লাহ; মিকাইল (আ.)-এর দায়িত্ব তা-ই স্মরণ করায়।
2. নিজস্ব ভূমিকা: প্রতিটি সৃষ্টি-র নিজস্ব দায়িত্ব আছে—মানুষকেও তাই নিজ কাজ নিষ্ঠা ও আমানতের সঙ্গে করতে হবে।
3. রহমতের আশা: যখন আকাশে মেঘ জমে, তখন তা কেবল প্রকৃতিই নয়—আল্লাহ-র রহমতের আগমনবার্তা; তাই হতাশ হওয়ার নয়, শোকর আদায়ের সময়।
উপসংহার
মিকাইল (আলাইহিস সালাম) কেবল বৃষ্টির ফেরেশতা নন; তিনি আল্লাহ-র করুণার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। তাঁর কর্মকাণ্ড আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ইবাদত, দোয়া ও পরিশ্রম সমান তালে চালিয়ে যেতে হবে, কারণ শেষ পর্যন্ত অনুগ্রহ আসে মহান রবেরই পক্ষ থেকে। তাঁর (আ.) বিস্ময়কর দায়িত্ব সম্পর্কে জানা আমাদের ঈমানকে মজবুত করে, কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগায় এবং ভবিষ্যতের প্রতি আশাবাদী রাখে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে মিকাইল (আ.)-এর আনায়ত্ত রহমত থেকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন—আমিন।