“হযরত উসমান (রাঃ): বিনয়ের প্রতীক ও শহীদ খলিফা”

হযরত উসমান (রাঃ)-এর বিনয় ও শহীদি মৃত্যু

ইসলামের ইতিহাসে হযরত উসমান (রাঃ)-এর নাম চিরকাল স্মরণীয় থাকবে তার বিনয়, দানশীলতা ও শহীদি মৃত্যুর কারণে। তিনি ছিলেন তৃতীয় খলিফা এবং রাসূল (সাঃ)-এর জামাতা— দু’বার! তাই তাঁকে বলা হয় "জুন নুরাইন" — দুই আলোয়ের অধিকারী।

 

? উসমান (রাঃ)-এর বিনয়:

 

তিনি অত্যন্ত লাজুক ও কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন। রাসূল (সাঃ) বলতেন: “আমি এমন কাউকে দেখিনি যার লজ্জাশীলতা ফেরেশতার মত, যেমন উসমান।”

? (মুসলিম)

 

একবার রাসূল (সাঃ) একটি কূপের (বিরে রুমা) কথা বলেন, যা মুসলমানদের জন্য দরকার ছিল। তখন উসমান (রাঃ) নিজ খরচে কূপটি কিনে মুসলমানদের জন্য দান করে দেন। আবার, যখন তাবুক যুদ্ধে অর্থের প্রয়োজন হয়, তিনি একাই ৯৫০টি উটে মাল বোঝাই করে পাঠান। রাসূল (সাঃ) খুশি হয়ে বলেন: “আজ থেকে উসমান যা ইচ্ছা করুক, তার কোনো ক্ষতি নেই।”

? (তিরমিজি)

 

? কুরআনের সংরক্ষণ:

 

খলিফা হওয়ার পর উসমান (রাঃ) কুরআনের পাঠভেদ রোধে এক মহা উদ্যোগ নেন। তিনি মূল mushaf অনুযায়ী একাধিক অনুলিপি তৈরি করিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রের বড় বড় শহরে পাঠিয়ে দেন। এ কারণে আজকের আমরা "উসমানী কুরআন" ব্যবহার করি।

 

⚔️ শহীদি মৃত্যু:

 

উসমান (রাঃ)-এর সময় ছিল ফিতনার সূচনা। কিছু বিদ্রোহী বাইরের অঞ্চল থেকে মদিনায় এসে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। উনি বিনয়ের সাথে বলেন — “আমার খলিফাত্ব থেকে পদত্যাগ করলে যদি ফিতনা থেমে যায়, আমি প্রস্তুত। কিন্তু রাসূলের জুতার স্থানেও আমি পদত্যাগ করতে চাই না।”

 

তাকে ঘিরে রাখা হয়, খাবার পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়, এমনকি নামাজেও বাধা দেওয়া হয়। তবুও তিনি রক্তপাত করতে চাননি। তিনি নিজ হাতে কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন যখন এক বিদ্রোহী তার মাথায় আঘাত করে।

উসমান (রাঃ)-এর রক্ত গড়িয়ে পড়ে কুরআনের আয়াতে —

"আল্লাহ যথেষ্ট তোমার জন্য।"

? (সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৭৩)

 

সেই রক্তমাখা কুরআনের পৃষ্ঠা আজও তুরস্কের এক জাদুঘরে সংরক্ষিত।

 

? শিক্ষণীয় দিক:

 

হযরত উসমান (রাঃ)-এর জীবন আমাদের শেখায়—

 

বিনয় মানে দুর্বলতা নয়, বরং শক্তির প্রকাশ।

 

যে আল্লাহর পথে খরচ করে, সে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হয়।

 

ফিতনার সময়েও ন্যায় পথে থাকা একজন মু’মিনের গুণ।


MD Maruf

57 博客 帖子

注释