AFace1 AFace1
    #spotnrides #uberclone #mobileappdevelopment #taxidispatchsoftware #ridehailingapp
    avancerad sökning
  • Logga in
  • Registrera

  • Dagläge
  • © 2025 AFace1
    Handla om • Kontakta oss • Integritetspolicy • Villkor • Återbetalning • Guidelines • Apps Install • DMCA

    Välj Språk

  • Arabic
  • Bengali
  • Chinese
  • Croatian
  • Danish
  • Dutch
  • English
  • Filipino
  • French
  • German
  • Hebrew
  • Hindi
  • Indonesian
  • Italian
  • Japanese
  • Korean
  • Persian
  • Portuguese
  • Russian
  • Spanish
  • Swedish
  • Turkish
  • Urdu
  • Vietnamese

Kolla på

Kolla på Rullar Filmer

evenemang

Bläddra bland evenemang Mina händelser

Blogg

Bläddra bland artiklar

Marknadsföra

Senaste produkterna

Sidor

Mina sidor Gillade sidor

Mer

Forum Utforska populära inlägg Jobb Erbjudanden Finansiering
Rullar Kolla på evenemang Marknadsföra Blogg Mina sidor Se allt
Washif Rana
User Image
Dra för att flytta omslaget
Washif Rana

Washif Rana

@Washif
  • Tidslinje
  • Grupper
  • Gillar
  • Följande 0
  • Följare 0
  • Foton
  • videoklipp
  • Rullar
  • Produkter
0 Följande
0 Följare
12 inlägg
Manlig
31 år gammal
Bor i Bangladesh
image
Washif Rana
Washif Rana  
15 i ·Översätt

চিলেকোঠার প্রেম

ঢাকার পুরোনো এক বাড়ি। লাল ইটের দেয়ালে শ্যাওলার দাগ, বারান্দায় ঝুলে থাকা মানিকজোড় লতাগুল্ম আর সিঁড়ির মাথায় কাঠের দরজা পেরিয়ে যে ছোট্ট অন্ধকার ঘরটিতে ঢোকা যায়, সেটাই ছিল চিলেকোঠা। সারা বাড়িতে আলো-ঝলমল থাকলেও, চিলেকোঠা যেন আলাদা এক জগৎ—শান্ত, নির্জন, রহস্যময়।

এই বাড়িতেই বড় হয়েছে রিয়াদ। কলেজ থেকে ফিরেই সে প্রায়শই উঠে যেত চিলেকোঠায়। পুরোনো বই, মলিন কাঠের ট্রাঙ্ক, ছেঁড়া পর্দা আর বাতাসে ধুলোর গন্ধ—সব মিলিয়ে তার কাছে চিলেকোঠা ছিল এক আশ্রয়। সেখানে বসেই সে গিটার বাজাতো, কবিতা লিখতো, আর কখনো কখনো জানালার ফাঁক দিয়ে দূরের আকাশ দেখত।

একদিন, ঠিক বিকেল চারটায়, রিয়াদ গিটার হাতে চিলেকোঠায় বসেছিল। হঠাৎই নিচ থেকে হাসির শব্দ ভেসে এল। নতুন ভাড়াটে এসেছে বাড়িতে। আর সেই ভাড়াটের মেয়েটি, নীল শাড়ি পরা, কপালে ছোট্ট টিপ লাগানো, চুপচাপ উঠোনে বসে বই পড়ছিল। রিয়াদ অজান্তেই জানালার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে রইল। হৃদয় হঠাৎ যেন অন্য রকম তালে বাজতে শুরু করল।

মেয়েটির নাম ছিল নীলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, সাহিত্যের ছাত্রী। শান্ত স্বভাব, অথচ চোখে ছিল অদ্ভুত এক গভীরতা। কয়েকদিন এমন চুপচাপ দেখাশোনার পর, এক দুপুরে রিয়াদের সাহস হলো। গিটার বাজাতে বাজাতে নিচু স্বরে গান ধরল—

"তুমি চাইলেই দূরে থাকো, আমি তবু তোমারই থাকি..."

নীলা বই বন্ধ করে আকাশের দিকে তাকাল। তারপর হঠাৎই চিলেকোঠার জানালার দিকে চোখ গেল তার। রিয়াদের চোখের সঙ্গে চোখ মেলাতেই অদ্ভুত এক ঝড় বয়ে গেল দু’জনের ভেতর। সেই মুহূর্তে কিছু বলা হয়নি, কিন্তু যেন অনেক কিছুই বলা হয়ে গেল।

এরপর থেকে চিলেকোঠা হয়ে উঠল তাদের গোপন মিলনক্ষেত্র। সন্ধ্যার পর যখন সবাই ব্যস্ত থাকে, নীলা নিঃশব্দে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে আসত। রিয়াদ অপেক্ষা করত দরজার পাশে। ভিতরে ঢুকলেই বাতাসে মিশে যেত চন্দনের হালকা গন্ধ।

— "তুমি কি প্রতিদিনই এখানে গান বাজাও?" নীলা প্রথমদিন জিজ্ঞেস করেছিল।
— "হ্যাঁ, গান না হলে বাঁচি না। তবে আজ মনে হচ্ছে তোমার জন্যই গাইতে হবে।"
নীলা হেসে বলেছিল, — "তাহলে আমি শুনতে আসব প্রতিদিন।"

সেই থেকে প্রতি সন্ধ্যায় চিলেকোঠা ভরে উঠত গল্প, গান আর মিষ্টি হাসিতে। পুরোনো ট্রাঙ্কের ওপর বসে তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকত। কখনো নীলা তার প্রিয় কবিতা পড়ে শোনাত, আবার রিয়াদ গিটারের তারে ভালোবাসার সুর ছড়িয়ে দিত।

কিন্তু প্রেম যত গভীর হচ্ছিল, ততই ভয় ঢুকছিল রিয়াদের মনে। কারণ নীলার পরিবার খুবই রক্ষণশীল। নীলা জানত, তারা কখনোই রিয়াদকে মেনে নেবে না। তবুও সে প্রতিদিন চিলেকোঠায় আসত, যেন সেখানে আসলেই পৃথিবীর সব বাঁধা ভেঙে যায়।

এক রাতে, বৃষ্টির শব্দে গোটা বাড়ি কাঁপছিল। বিদ্যুৎ নেই, চিলেকোঠায় শুধু একটি মোমবাতির আলো। নীলা সেদিন একটু কেঁদেছিল।
— "রিয়াদ, যদি কোনোদিন আমাদের আলাদা করে দেয়?"
রিয়াদ তার হাত ধরে বলেছিল, — "চিলেকোঠা আমাদের সাক্ষী। যতদিন বাঁচব, তোমাকে ছেড়ে যাব না।"

নীলার চোখ ভিজে উঠলেও ঠোঁটে ফুটে উঠেছিল একটুকরো হাসি।

কিন্তু সুখ যেন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। কয়েক সপ্তাহ পর নীলার পরিবার হঠাৎই তাকে গ্রামে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কারণ এক ধনী ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার বিয়ের কথা পাকাপাকি হয়েছে। নীলা চুপচাপ খবরটা রিয়াদকে জানাল চিলেকোঠায়।

সেদিন রাতে দু’জনেই কিছুক্ষণ নীরব ছিল। তারপর নীলা বলল—
— "যদি আমি না ফিরি, তুমি কি আমাকে মনে রাখবে?"
রিয়াদ ভাঙা গলায় বলল—
— "তুমি তো আমার প্রতিটি গানে, প্রতিটি লাইনে। তোমাকে ভুলতে গেলে আমাকে বাঁচতে হবে না।"

পরদিন নীলা চলে গেল। বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে গেল, আর চিলেকোঠা যেন অন্ধকারে ডুবে গেল। রিয়াদ প্রতিদিন সেখানে বসে গিটার বাজাত, কিন্তু সুর আর গলায় উঠে আসত না।

মাস কেটে গেল। হঠাৎ একদিন দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। রিয়াদ সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠল। চিলেকোঠার দরজা খুলতেই—নীলা। চোখে অশ্রু, হাতে একটি ছোট ব্যাগ।
— "আমি পালিয়ে এসেছি। ওরা আমাকে বিয়ে দিতে চাইছিল, কিন্তু আমি শুধু তোমাকেই চাই।"

রিয়াদ কিছু বলল না, শুধু তাকে জড়িয়ে ধরল। বাইরে তখন বৃষ্টি পড়ছিল, কিন্তু ভেতরে চিলেকোঠা ভরে উঠেছিল নতুন আলোর স্রোতে।

সেদিন থেকেই চিলেকোঠা আর শুধু ধুলোমাখা ঘর রইল না। সেটা হয়ে উঠল দুই হৃদয়ের মিলনক্ষেত্র, যেখানে ভালোবাসা সব বাঁধা অতিক্রম করে টিকে থাকে।

রিয়াদ পরে প্রায়ই বলত—
"নীলা, এই চিলেকোঠাই আমাদের প্রেমের আকাশ। এখানে শুরু, এখানেই অনন্ত।"

Tycka om
Kommentar
Dela med sig
Washif Rana
Washif Rana  
15 i ·Översätt

স্মৃতির ডায়েরি

মনে হয় প্রতিটি মানুষের জীবনে কিছু স্মৃতি থাকে যেগুলো কখনো মুছে যায় না। ঠিক তেমনই একটি গল্প শুরু হয় এক পুরোনো ডায়েরি থেকে।

রিমা একদিন আলমারি গুছাতে গিয়ে একটি পুরোনো খাতা হাতে পেল। ধুলো জমে থাকা মলাটে বড় বড় অক্ষরে লেখা— “স্মৃতির ডায়েরি”।
তার বুক কেঁপে উঠলো। এই ডায়েরি সে শেষ লিখেছিল প্রায় দশ বছর আগে। ছোটবেলা থেকে তার অভ্যাস ছিল প্রতিটি অনুভূতি কাগজে লেখা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ব্যস্ততা, দায়িত্ব আর বাস্তবতার জালে সে আর লিখতে পারেনি।

ডায়েরির প্রথম পৃষ্ঠা খুলতেই লেখা ছিল—

“আজ আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিন। ক্লাসে নতুন একজন এসেছে। নাম আরিয়ান। হাসিটা যেন আকাশ ভরা রোদের মতো।”

রিমার ঠোঁটের কোণে অজান্তেই হাসি ফুটলো। মনে পড়লো, হ্যাঁ, তখনই প্রথম আরিয়ানকে দেখেছিল। শহর থেকে গ্রামের স্কুলে ভর্তি হয়েছিল সে। অন্যরকম একটা ব্যক্তিত্ব ছিল ওর। সবাই মিশে যেত সহজে, কিন্তু রিমার ভেতর কেমন যেন অজানা টান কাজ করতো।

ডায়েরি ওল্টাতে ওল্টাতে রিমা যেন সময়ের গহ্বর পাড়ি দিলো।

এক পাতায় লেখা—
“আজ বৃষ্টির দুপুরে আমরা দুজন স্কুল ফাঁকি দিয়ে নদীর ধারে গিয়েছিলাম। আরিয়ান হঠাৎ বললো— ‘রিমা, তুই কি কখনো ভেবেছিস, স্মৃতি যদি ছবি হতো, আমি প্রতিদিন তোকে আঁকতাম।’ আমি কিছু বলিনি, শুধু মনে মনে ভয় পেয়েছিলাম, যদি এই দিনগুলো হঠাৎ একদিন ফুরিয়ে যায়।”

রিমার চোখ ভিজে গেলো। সত্যিই তো, সেই দিনগুলো একদিন হঠাৎ করেই শেষ হয়ে গিয়েছিল।

আরেকটি পাতায় লেখা ছিল—
“আজ স্কুলের শেষ দিন। সবাই খাতায় খাতায় শুভেচ্ছা লিখছে। আরিয়ান আমার ডায়েরির শেষ পাতায় লিখলো— ‘জীবন যদি গল্প হয়, তুই হবি আমার সবচেয়ে প্রিয় অধ্যায়। তবে মনে রাখিস, কিছু গল্পের শেষ থাকে না, শুধু স্মৃতিই বেঁচে থাকে।’”

এই লাইনগুলো পড়তে পড়তে রিমা আর চোখের জল সামলাতে পারলো না। সত্যিই তো, আরিয়ানের সাথে তার দেখা হওয়া শেষ হলো সেদিনই। পরীক্ষার পর আরিয়ান শহরে চলে গেলো পড়াশোনার জন্য। এরপর ফোন, চিঠি কিছুই থাকলো না। রিমা শুধু ডায়েরিতে লিখতো তার অনুভূতি, তার অপেক্ষা।

ডায়েরির মাঝের পাতাগুলোয় শুধু কষ্টের কথা।
“আজ ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে শুধু একটা প্রশ্ন করেছি— আরিয়ান, তুই কি আমাকে ভুলে গেছিস?”
“আজ শুনলাম ওর পরিবার বিদেশে চলে গেছে। বুকটা হাহাকার করে উঠলো।”

তারপর কয়েকটি ফাঁকা পাতা। মনে হয় সেখানেই রিমার কলম থেমে গিয়েছিল। হয়তো কষ্ট এতটাই গভীর ছিল যে লিখতে পারা যায়নি।

ডায়েরি বন্ধ করে রিমা কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ হয়ে বসে রইলো। বাইরে বিকেলের রোদ হেলে আসছে। জীবনের অনেকটা পথ সে চলে এসেছে, সংসার, কাজ, সন্তান সবই এখন তার ভরসা। তবু কেন জানি এই ডায়েরি হাতে নিয়ে মনে হচ্ছে কোথাও একটা শূন্যতা থেকে গেছে।

হঠাৎ ফোনে বার্তা এলো। পুরোনো স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে একটি রিইউনিয়নের খবর। রিমার বুক ধুকপুক করতে লাগলো। মনে মনে প্রশ্ন উঠলো— “যদি আরিয়ান আসে?”

দিন গড়ালো। নির্দিষ্ট দিনে রিমা স্কুলে গেলো। সবকিছু বদলে গেছে, তবু কোথাও যেন পুরোনো দিনের গন্ধ লেগে আছে।

হঠাৎ পেছন থেকে পরিচিত কণ্ঠ—
“রিমা?”

ঘুরে দাঁড়াতেই সে জমে গেলো। সামনে দাঁড়িয়ে আছে আরিয়ান। চোখের কোণে হালকা রেখা, মুখে পরিণত ভাব, কিন্তু হাসিটা ঠিক আগের মতোই রোদের মতো উজ্জ্বল।

কিছুক্ষণ দুজনের মধ্যে নীরবতা। তারপর আরিয়ান বললো—
“জানিস, আজ আমি একটা জিনিস এনেছি।”
সে ব্যাগ থেকে একটি খাতা বের করলো। পুরোনো, হলুদ হয়ে যাওয়া কাগজ।
“এটা আমার ডায়েরি। আমি তোর নামেই লিখতাম— স্মৃতির ডায়েরি।”

রিমার চোখ ছলছল করে উঠলো। দুজনেই বুঝলো, তারা আলাদা থেকেও একইভাবে স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে ছিল।

সেদিন বিকেলটা যেন আবার বৃষ্টির দুপুরে ফিরে গেলো। তারা অনেক কথা বললো, পুরোনো দিনের হাসি-কান্না ভাগাভাগি করলো। বিদায়ের সময় আরিয়ান বললো—
“কিছু স্মৃতি কখনো পুরোনো হয় না, শুধু ডায়েরির পাতায় অপেক্ষা করে। তুই আর আমি আজ সেই পাতাগুলো আবার খুললাম।”

রিমা মৃদু হেসে উত্তর দিলো—
“হ্যাঁ, আর হয়তো এটাই আমাদের অসমাপ্ত গল্পের নতুন অধ্যায়।”

শেষকথা

“স্মৃতির ডায়েরি” শুধু একটি খাতা নয়, বরং মানুষের মনের লুকানো অনুভূতির ভাণ্ডার। সময় চলে যায়, মানুষ বদলে যায়, কিন্তু ডায়েরির পাতায় লেখা প্রতিটি শব্দ থেকে যায় অমর হয়ে। আর সেই শব্দই একদিন মানুষকে আবার ফিরিয়ে আনে পুরোনো দিনের কাছে।

Tycka om
Kommentar
Dela med sig
avatar

Arif123 Khan

"এই পৃথিবীতে কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়; এমনকি আমাদের সমস্যাগুলোও না"।
"স্বপ্ন সেটা নয় যা আপনি ঘুমিয়ে দেখেন; স্বপ্ন সেটা, যা আপনাকে ঘুমাতে দেয় না"।
"পারিব না এ কথাটি বলিও না আর, কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার"।
"শুরু করার উপায় হল কথা বলা ছেড়ে দেওয়া এবং করা শুরু করা"।
"আপনার ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী করার সর্বোত্তম উপায় হল এটি তৈরি করা"।
Tycka om
· Svar · 1764005725

Ta bort kommentar

Är du säker på att du vill ta bort den här kommentaren?

Washif Rana
Washif Rana  
15 i ·Översätt

নীরবতার গল্প

চারপাশে কোলাহল, মানুষজনের ব্যস্ততা, শহরের ভিড়ের শব্দ—সবকিছুই যেন রিমার কাছে হঠাৎ করে অর্থহীন হয়ে গিয়েছিল। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে যে শব্দগুলো একসময় তাকে আনন্দ দিত, আজ সেই শব্দই তার কাছে হয়ে উঠেছে অচেনা, বিরক্তিকর আর শূন্যতার প্রতীক। রিমা আজকাল নীরবতার মধ্যে বেঁচে থাকে।

রিমা একসময় খুব হাসিখুশি মেয়ে ছিল। পরিবার, বন্ধু, কলেজ—সবকিছু মিলিয়ে তার জীবন ছিল অনেক রঙিন। প্রতিটি আড্ডায় সে ছিল প্রাণকেন্দ্র। সবাই বলতো—
“রিমা না থাকলে আড্ডা জমে না।”

কিন্তু জীবন তো সবসময় সমান থাকে না। একদিন হঠাৎ করে তার জীবনে নেমে এলো ঝড়। বাবা এক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। সংসারের ভার এসে পড়লো তার উপর। মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেন, ছোট ভাই তখনও স্কুলে পড়ে। হঠাৎ করে দায়িত্বের বোঝা রিমার কাঁধে এসে জমলো। সেই দিন থেকে তার হাসি যেন হারিয়ে গেল।

প্রথমদিকে বন্ধুরা পাশে ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে সবাই দূরে সরে গেল। কেউ বলতো—
“রিমা আগের মতো নেই।”
আসলে তারা বুঝতে পারেনি, রিমা আর আগের মতো হতে পারবে না। একসময় যে মেয়েটি হাসতে হাসতে আড্ডা জমাতো, সে এখন শুধু চুপচাপ বসে থাকতো। তার চারপাশে ভিড় থাকলেও মনে হতো সে এক অজানা নীরবতার দেয়ালের ভেতরে আটকে আছে।

রাতের পর রাত ঘুম আসতো না। বিছানায় শুয়ে থেকে ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো। চারদিকে যখন সব থেমে যেত, তখনই নীরবতা তাকে ঘিরে ধরতো। সেই নীরবতা কানে বাজতো ভয়ঙ্কর শব্দের মতো। মনে হতো—
“আমার জীবনে আর কেউ নেই, আমি একা।”

কখনো আবার মনে হতো নীরবতা তার সেরা সঙ্গী। মানুষের কথাবার্তা, দোষারোপ, ভান করা সহানুভূতি—সবকিছু থেকে মুক্তি পেতে সে নীরবতাকে আঁকড়ে ধরতো। দিনের পর দিন কারো সঙ্গে কথা না বলে থাকলেও তার কষ্ট কেউ বুঝতো না।

একদিন গ্রামের বাড়ি থেকে খালা এসে রিমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন—
“মা, তুই সবসময় চুপচাপ থাকিস কেন? একটু কথা বল, বুকের কষ্টটা বাইরে আন।”
রিমা তখন শুধু হাসলো। আসলে তার ভিতরের কথাগুলো এত ভারী হয়ে গেছে যে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাই সে নীরবতাকেই বেছে নিল।

ছোট ভাই পড়াশোনা শেষ করে একদিন চাকরি পেল। সংসারের চাপ ধীরে ধীরে কমলো। কিন্তু রিমার ভিতরের নীরবতা আর ভাঙলো না। সবাই ভেবেছিল, সংসার একটু স্বাভাবিক হলেই রিমা আবার আগের মতো হবে। কিন্তু তারা বুঝলো না—কিছু নীরবতা আজীবন মানুষের সঙ্গে থেকে যায়।

সময়ের সাথে সাথে নীরবতা রিমার জীবনদর্শন হয়ে উঠলো। সে এখন আর অযথা তর্কে জড়ায় না, কারো প্রতি রাগ দেখায় না। সে শুধু চুপ করে থাকে। তার চোখের গভীরতায় লুকিয়ে থাকে হাজারো অপ্রকাশিত গল্প, অগণিত কান্না, আর অব্যক্ত ব্যথা।

একদিন ছোট ভাই তাকে জিজ্ঞেস করলো—
“আপু, তুমি এত চুপচাপ কেন থাকো?”
রিমা মৃদু হেসে উত্তর দিল—
“কিছু কথা আছে যেগুলো বলার জন্য পৃথিবীতে কোনো ভাষা নেই। সেগুলো শুধু নীরবতাই বুঝতে পারে।”

রিমার এই নীরবতা অনেককে ভাবিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেছে সে অহংকারী, কেউ আবার বলেছে সে নির্লিপ্ত। কিন্তু আসলে নীরবতা তার বেঁচে থাকার উপায়। সে জানে, মানুষ সবকিছু বুঝতে পারে না। কিন্তু নীরবতা মানুষকে শক্ত হতে শেখায়, গভীর হতে শেখায়।

বছরের পর বছর কেটে গেল। রিমা আজ বৃদ্ধা। ছাদে বসে যখন সূর্যাস্ত দেখে, তখনও তার চারপাশে নীরবতা ঘিরে থাকে। কিন্তু সেই নীরবতা আর ভয়ঙ্কর নয়। এখন সেটা শান্তির মতো, সঙ্গীর মতো।

সে বুঝতে পেরেছে—
“নীরবতাই মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু। যখন সব মানুষ, সব শব্দ, সব সম্পর্ক হারিয়ে যায়—তখন নীরবতা পাশে থাকে।”


---

গল্পের শিক্ষা

নীরবতা কখনো কষ্টের প্রতীক, কখনো শক্তির প্রতীক।

জীবনের কিছু যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, সেগুলো শুধু নীরবতাই বহন করতে পারে।

নীরবতা মানুষকে ধৈর্যশীল করে, গভীর করে এবং জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াতে শেখায়।

image
Tycka om
Kommentar
Dela med sig
Washif Rana
Washif Rana  
15 i ·Översätt

একাকিত্বের গল্প

১. শুরুটা শূন্যতার

রাত গভীর। শহরের আলো নিভে গেছে অনেক আগেই। জানালার পাশে বসে রাফি ভাবছে—
"মানুষের ভিড়ে থেকেও কখনো কখনো ভেতরে এমন এক শূন্যতা নেমে আসে, যা কাউকে বোঝানো যায় না।"

তার চারপাশে অনেক মানুষ আছে, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী—কিন্তু মনে হয় কেউ তার ভেতরের কষ্ট বোঝে না। এক অদ্ভুত নিঃসঙ্গতা তাকে প্রতিদিন গ্রাস করছে।

২. হারানোর ব্যথা

কিছুদিন আগেও রাফি এতটা একা ছিল না। তার জীবনে ছিল নীলা। দুজনের হাসি, গল্প, স্বপ্ন—সবই যেন একসাথে বোনা ছিল।

কিন্তু একদিন হঠাৎ নীলার পরিবার তাকে নিয়ে দূরে চলে গেল। সম্পর্কটা ভেঙে গেলো অদৃশ্য চাপ, দায়িত্ব আর বাস্তবতার কারণে।

সেদিন থেকে রাফির ভেতর একটা কথাই প্রতিধ্বনি হয়ে বাজে—
"সবাই চলে যায়, শুধু একাকিত্ব রয়ে যায় চিরদিনের সঙ্গী হয়ে।"

৩. প্রতিদিনের লড়াই

সকাল হলে রাফি মুখে হাসি মেখে কাজে যায়। সহকর্মীরা ভাবে সে খুব স্বাভাবিক, সবকিছু সামলে নিতে পারে। কিন্তু আসলে তার ভেতরে একটা অরণ্য তৈরি হয়েছে—অন্ধকারে ভরা, নিস্তব্ধ।

কাজ শেষে যখন বাসায় ফেরে, তখন নিঃশব্দ দেয়ালগুলো তাকে তাড়া করে। ফোন হাতে নিয়ে অনেক নম্বর দেখে, কিন্তু কাউকেই ফোন দিতে পারে না। মনে হয়, কেউই আর তার কথা শুনতে চাইবে না।

"কথা বলার মতো মানুষ না থাকলে, নীরবতাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে নিষ্ঠুর শাস্তি।"

৪. স্মৃতির বোঝা

রাফির ঘরে এখনো নীলার দেওয়া কিছু উপহার আছে। একটা ছোট্ট ডায়েরি, যেখানে নীলা লিখেছিল—
"তুমি থাকলে আমি আর কখনো একা হব না।"

রাফি প্রতিদিন সেটি খুলে পড়ে, আর বুকের ভেতর অদ্ভুত ব্যথা ছড়িয়ে যায়।

"সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হলো, স্মৃতিগুলো কখনো মরেও যায় না।"

৫. সমাজের ভিড়ে একা

অনেক সময় মানুষ ভাবে, একাকিত্ব মানে একা থাকা। কিন্তু আসলেই কি তাই? রাফি বুঝে গেছে—
"ভিড়ের মাঝেও মানুষ একা হতে পারে, যদি তার হৃদয়ে কেউ না থাকে।"

বিয়েতে গেলে, পারিবারিক অনুষ্ঠানে গেলে—সবাই হাসে, আনন্দ করে, কিন্তু রাফির কাছে সবকিছু ফাঁকা লাগে। হাসির ভেতরেও সে খুঁজে বেড়ায় নিজের অদৃশ্য কষ্ট।

৬. রাতের অন্ধকারে

রাত যত গভীর হয়, রাফির নিঃসঙ্গতা তত বাড়তে থাকে। ঘুম আসতে চায় না। তখন সে ছাদে উঠে আকাশ দেখে।

তারকা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে—
"হয়তো আকাশও আমার মতো, ভেতরে একা, শুধু বাইরে আলো ছড়িয়ে আছে।"

৭. একাকিত্বের শিক্ষা

একদিন ডায়েরিতে রাফি লিখল—

"একাকিত্ব মানুষকে ভাঙে, আবার শেখায় শক্ত হতে।"

"যারা সত্যিই আপন, তারাই একদিন ফসকে যায় সবচেয়ে বেশি।"

"নিজেকে ভালোবাসা শিখতে হয়, কারণ সবাই চিরদিন পাশে থাকে না।"

এই কথাগুলোই তার প্রতিদিনের প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।

৮. নতুন ভোরের অপেক্ষা

হয়তো একদিন রাফির জীবনে আবার কেউ আসবে, যে তার একাকিত্ব ভেঙে আলো জ্বালাবে। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত তাকে লড়াই করতেই হবে।

সে জানে—
"জীবন থেমে থাকে না, শুধু একাকিত্বকে সঙ্গী করে পথ চলতে হয়।"

৯. শেষের অনুভূতি

রাফি এখনো নীলাকে ভুলতে পারেনি। তবুও প্রতিদিন একটু একটু করে শিখছে একা থাকার মানে। তার হৃদয়ের ভেতরের কষ্ট হয়তো কোনোদিন পুরোপুরি যাবে না, তবে সে জানে—
"একাকিত্বও কখনো কখনো মানুষকে নিজের সবচেয়ে কাছের বন্ধু বানিয়ে ফেলে।"

Tycka om
Kommentar
Dela med sig
Washif Rana
Washif Rana  
15 i ·Översätt

একটা প্রেম চাই

১. গহীন অরণ্যের ভেতর থেকে ডাক

রাত গভীর। জানালার ফাঁক দিয়ে হাওয়া আসছে। শহরের কোলাহল থেমে গেছে অনেক আগেই, কিন্তু রায়হানের বুকের ভেতর একটা অদ্ভুত অস্থিরতা। মনে হচ্ছে, তার ভেতরে একটা গহীন অরণ্য আছে—অন্ধকার, নিঃসঙ্গ, অজস্র গোপন ব্যথা লুকানো। সে অরণ্যে পথ খুঁজে পাওয়া যায় না, শুধু শূন্যতা আর নীরবতা।

রায়হান তার ডায়েরিতে লিখল—
"মানুষ সবকিছু পায়, সাফল্য, অর্থ, পরিচিতি… কিন্তু আমি আজও খুঁজছি একটা প্রেম। একটা প্রেম চাই, যা সত্যিকারের হবে, যা আমার নিঃসঙ্গতার অরণ্য আলোকিত করবে।"

২. অতীতের ছায়া

রায়হান একসময় খুব হাসিখুশি ছেলে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই তাকে প্রাণবন্ত মনে করত। আড্ডায়, খেলাধুলায়, গানে—সব জায়গায় সে উপস্থিত থাকত।

সেই সময় তার জীবনে এসেছিল নীলাঞ্জনা। মেয়েটি শান্ত, মিষ্টি হাসি আর নির্ভরতার প্রতীক। একসাথে ক্লাস, লাইব্রেরি, ক্যাম্পাসের দীর্ঘ হাঁটা—সবই যেন এক অদ্ভুত সুখের ভেতর ডুবিয়ে রাখত রায়হানকে।

কিন্তু একদিন নীলাঞ্জনা বলল—
—"রায়হান, আমি দেশ ছেড়ে যাচ্ছি। পরিবার চায় আমি বিদেশে পড়াশোনা করি। হয়তো ফিরে আসব না।"

শাহসী রায়হান কিছু বলতে পারল না। শুধু চুপ করে তাকিয়ে থাকল। আর সেই দিনই তার হৃদয়ের অরণ্যে এক অদ্ভুত অন্ধকার নেমে এলো।

৩. হারানোর পর

নীলাঞ্জনার চলে যাওয়ার পর রায়হান আর আগের মতো নেই। চাকরি পেয়েছে, শহরে পরিচিতি তৈরি করেছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে ভীষণ একা।

বন্ধুরা বলে—
—"তুই তো সফল মানুষ। এত কিছু পেয়েছিস।"

কিন্তু রায়হানের ভেতরে একটা প্রশ্ন জ্বলে—"যদি পাশে কেউ না থাকে, তবে সাফল্যের মানে কী?"

তার বুকের ভেতরের অরণ্যে প্রতিদিন প্রতিধ্বনি ওঠে—"একটা প্রেম চাই। শুধু একটা প্রেম চাই।"

৪. অরণ্যের ভেতরে এক আলো

একদিন অফিস শেষে বৃষ্টির রাতে এক ক্যাফেতে ঢুকে পড়ল রায়হান। জানালার বাইরে ঝরে পড়ছে বৃষ্টি। হঠাৎ দেখল এক মেয়ে ভিজে কাপড়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। সে ভেতরে ঢুকতেই চারপাশ যেন হঠাৎ নরম আলোয় ভরে গেল।

মেয়েটির নাম অনন্যা। ক্যাফের এক কোনায় বসে গরম কফি খেতে খেতে হেসে বলল—
—"বৃষ্টি আমাকে সবসময় ডাকে। মনে হয়, ভেতরের সব দুঃখ ধুয়ে ফেলতে পারে।"

রায়হান তার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল—"হয়তো এই মেয়েটিই আমার অরণ্যের আলো।"

৫. ধীরে ধীরে

কিছুদিন পর থেকেই অনন্যার সাথে যোগাযোগ বাড়ল। অফিস শেষে কফি, বইয়ের দোকানে ঘোরাঘুরি, পার্কে বসে গল্প। অনন্যা যেন সহজ-সরল অথচ গভীর মানুষ।

রায়হান ধীরে ধীরে বুঝতে পারল—সে আবার নতুন করে বাঁচতে চাইছে। অনন্যার হাসি তার বুকের ভেতর অরণ্যের অন্ধকার ভেদ করছে।

কিন্তু ভেতরের ভয়ও থেকে গেল। নীলাঞ্জনার চলে যাওয়া তাকে ভেতরে ভেতরে দুর্বল করে দিয়েছে। সে ভাবল—
"যদি আবার হারিয়ে যায়? যদি আবার আমি একা হয়ে যাই?"

৬. সত্যের মুহূর্ত

এক সন্ধ্যায় নদীর ধারে বসে অনন্যা হঠাৎ বলল—
—"তুমি কি কখনো কাউকে খুব কাছে পেয়েছ? এমন কেউ, যার জন্য ভেতরের সব অন্ধকার দূর হয়ে গেছে?"

রায়হান চুপ করে ছিল। চোখে পানি জমল। তারপর ধীরে বলল—
—"পেয়েছিলাম। কিন্তু হারিয়েছি। আজও খুঁজছি একটা প্রেম, যেটা সত্যি হবে, যেটা আমাকে ছেড়ে যাবে না।"

অনন্যা তার হাতটা ধরে নরম স্বরে বলল—
—"তাহলে খোঁজ বন্ধ করো। কারণ হয়তো তোমার সেই খোঁজ এখানেই শেষ হয়েছে।"

৭. অরণ্য আলোকিত

সেদিনের পর রায়হানের বুকের ভেতরের অরণ্যে অদ্ভুত আলো নেমে এল। তার নিঃসঙ্গতা ভেঙে গেল। প্রতিদিন অনন্যা তার সাথে নতুন স্বপ্ন বুনল, নতুন আশার কথা বলল।

রায়হান ডায়েরিতে লিখল—
"আজ আর শুধু তোমাকে খুঁজছি না, আজ তোমাকে পেয়েছি। আমার গহীন অরণ্য আজ আলোয় ভরে গেছে। কারণ আমি পেয়েছি একটা প্রেম।"

৮. সমাপ্তি নাকি শুরু?

প্রেম হয়তো সবকিছুর সমাধান নয়। তবুও প্রেমই মানুষকে বাঁচার শক্তি দেয়। রায়হানের ভেতরের অরণ্য আর অন্ধকারে ডুবে নেই। সেখানে এখন গান বাজে, আলো ঝরে।

সে এখন বুঝতে পারে—
"একটা প্রেম চাই" মানে শুধু কাউকে পাওয়া নয়, বরং কাউকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা। আর সেই প্রেম যখন সত্যি হয়, তখন অরণ্যের ভেতরের সব পথ একসাথে আলোয় ভরে ওঠে।

Tycka om
Kommentar
Dela med sig
Ladda fler inlägg

Unfriend

Är du säker på att du vill bli vän?

Rapportera denna användare

Redigera erbjudande

Lägg till nivå








Välj en bild
Ta bort din nivå
Är du säker på att du vill ta bort den här nivån?

Recensioner

För att sälja ditt innehåll och dina inlägg, börja med att skapa några paket. Intäktsgenerering

Betala med plånbok

Betalningslarm

Du är på väg att köpa varorna, vill du fortsätta?

Begära återbetalning