ট্রান্সন্যাশনাল বাণিজ্য | #ট্রান্সন্যাশনাল বাণিজ্য #face #2024face
ট্রান্সন্যাশনাল বাণিজ্য | #ট্রান্সন্যাশনাল বাণিজ্য #face #2024face
''সময় কাটে না,, গেলাম.. ``হতাশা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর``
``যেখানে প্রতিটি ফ্লোরে সাজানো,, ভিন্ন ভিন্ন দুঃখের বিভাগ``।
পুরো সেটিংটাই `নরকের,, বাণিজ্যিকীকরণে রমরমা,,
শুরুতে নিলাম,,
,,ভালোবাসার হালকা নাস্তা: শূন্যতার প্লেটে!"
...,গেলাম,, 'ফুর্তি ডিসকাউন্ট নিতে'! এখনই শেষ সময়!"
``আত্মার অধঃপতন শপিং স্টোরে,, পপকর্ন ফ্রি!
আরও নিলাম,,
''গুজব গপ্পো ভাজা! গরম গরম মিথ্যা,, মনের জিলাপি পেঁচানো সাপ,, শক্তিশালী 'টেনশন।
নিলাম,, ভ্রমের আইসক্রিম,, হাতে নিতে গলে যায়!
গেলাম গর্ব করে হাঁটা স্টোরে,,
``অহংকারের হাই-হিল: উঁচুতে তোলে, পড়তেও সাহায্য করে!
"পিউর টাকার কুমিরের,, চামড়া দিয়ে বানানো``
গেলাম অতীত ভেজাল স্টোরে,,
""স্মৃতির ডাস্টবিনে,, পুরোনো আবেগ পঁচে গলে পড়ে আছে,, আহাঃ কি দাম,,
নগদে চোখের জল ফেলে কিনে নিলাম, তবুও।,,
..বন্ধুরা এলো, বলে,, চল আরও তলিয়ে কাঁদি গলা মিলে``।
গেলাম হতাশা রিচার্জ স্টোরে,,
"দুঃখের রিফিল কার্টিজ! চিরস্থায়ী উৎকণ্ঠা!
ফুল লোড,,
"নিলাম- লোভের EMI স্কিম! প্রথম কিস্তি: সামান্য বিবেক পে!"
একটু হাঁটতেই দেখি,, "শয়তান দোকান খুলেছে 'নরকের 'রসগোল্লা' নামে,
বলে, আসুন,, 'একটা খেয়ে দেখুন, স্বাদ পাবেন অনুতাপের চিনি!'
জিজ্ঞেস করলাম, 'ক্যালোরি কত?'
উত্তরে হাসে, 'এক গ্লাস 'পাপের সমান!'"
..মুখে নিতেই,, কপালে পড়লো,, 'দুর্ভাগ্যের শুকনো পাঁউরুটি'..
অবশেষ,, 'শয়তান মুচকি হেসে বলে,,
নেন, আরও একটা হতাশার ডোজ, সারাক্ষন মিথ্যা কুয়াশার তৃপ্তি পাবেন !'
জিজ্ঞাস করলাম, 'মেয়াদ কতদিন?'
প্যাকেটের গায়ে লিখা আছে , 'সত্যের আলো উত্থান পর্যন্ত"!
———————
'হতাশা স্টোর।
সাজিদুল্লাহ ফরহাদ।
🕌 ইসলাম ধর্ম
ইসলাম একটি শান্তিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এটি মানবজাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য আল্লাহ প্রেরিত ধর্ম। ‘ইসলাম’ শব্দটির অর্থ আত্মসমর্পণ, শান্তি ও আনুগত্য। যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ মেনে চলে এবং তাঁর প্রেরিত রসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দেখানো পথ অনুসরণ করে, তাকেই মুসলমান বলা হয়।
ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে:
১. কালিমা – ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’।
২. নামাজ – প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ আদায় করা।
৩. রোজা – রমজান মাসে রোজা রাখা।
৪. যাকাত – ধনীদের জন্য নির্দিষ্ট হারে যাকাত প্রদান করা।
৫. হজ – সামর্থ্যবান মুসলমানদের জীবনে অন্তত একবার হজ পালন করা।
ইসলামের মূলনীতি হলো একেশ্বরবাদ। মুসলমানরা বিশ্বাস করে, আল্লাহ এক এবং তাঁর কোনো অংশীদার নেই। ইসলাম মানুষকে নম্রতা, দয়া, সহানুভূতি ও ইনসাফ শেখায়। এতে কোনো জাতি, বর্ণ বা গোষ্ঠীর ভেদাভেদ নেই।
ইসলাম শুধু উপাসনার ধর্ম নয়, এটি জীবনের প্রতিটি দিক নিয়ে আলোচনা করে। পারিবারিক জীবন, ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক আচরণ, রাজনীতি, আইন – সবকিছুর দিকনির্দেশনা ইসলাম দিয়েছে। এটি মানুষকে পরিপূর্ণভাবে নৈতিক ও ন্যায়পরায়ণ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দেয়।
ইসলাম শান্তির ধর্ম। কুরআন ও হাদীসে যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তি ও সহনশীলতার গুরুত্ব বারবার তুলে ধরা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন শ্রেষ্ঠ মানব ও আদর্শ নেতা। তিনি গোটা মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরিত হয়েছিলেন।
আজকের আধুনিক সমাজে ইসলাম একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। যদিও কিছু মানুষ ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে একে জড়াতে চায়, প্রকৃত ইসলাম এর সম্পূর্ণ বিপরীত।
অতএব, ইসলাম শুধু নামাজ-রোজা নয়, এটি মানুষের আত্মশুদ্ধি, সমাজগঠন এবং শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের পূর্ণ নির্দেশনা। একজন প্রকৃত মুসলমান তার জীবনকে ইসলামের আদর্শে গড়তে চেষ্টা করে এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করে।
মাগুর মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা
ভূমিকা: অবমানকল হতে বাংলাদেশে মাগুর মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত । এসব মাছ খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর । সূদূর অতীতে এ মাছগুলো প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের জলাশয়ে প্রচুর পাওয়া যেত । কৃত্তিম প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং চাহিদা ও বাজারদর বেশি হওয়ায় মাছের বাণিজ্যিক চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে।
পুকুর নির্বাচন : বাণিজ্যিক মাছচাষের জন্য অপেক্ষাকৃত বড় আকারের পুকুর, ৪০ শতাংশ বা তদূর্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়। পানির গভীরতা ৪ থেকে ৬ ফুটের মধ্যে হলে ভাল হয়। মাটি দোআঁশ বা এঁটেল দোআঁশ এবং পুকুরটি আয়তাকার হওয়া উত্তম।
পুকুর প্রস্তুতি
* পাড় ও তলদেশ: পাড়ে ঝোপ-ঝাড় থাকলে পরিষ্কার করতে হবে। পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে (কমপক্ষে দৈনিক ৮ ঘন্টা) সূর্যালোক প্রবেশের সুবিধার্থে সম্ভব হলে বড় গাছ কেটে ফেলতে হবে। সম্ভব না হলে অন্তত ভেতর দিকের ডাল-পালা কেটে ফেলতে হবে প্রয়োজনে পানি নিষ্কাশন করে পুকুরের পাড় মেরামত ও তলদেশ অতিরিক্ত কর্মমুক্ত করে সমান করতে হবে। অন্যথায় পুকুরের পানির গুণাগুণ দ্রুত খারাপ হয়ে যাবে। তাছাড়া, তলদেশ সমান না হলে পরবর্তীতে মাছ আহরণ করা কঠিন হবে।
* জলজ আগাছা ও অবাঞ্চিত মাছসহ রাক্ষুসে মাছ দুরীকরণ: যদি পানি প্রাপ্তি বিশেষ সমস্যা না হয় তাহলে পুকুরের পানি নিষ্কাশন করে সব জলজ আগাছা এবং অবাঞ্চিত মাছসহ রাক্ষুসে মাছ অপসারণ করা যেতে পারে। পানি প্রাপ্তি সমস্যা হলে, প্রথমে পুকুরে বারবার জাল টেনে যতদূর সম্ভব সকল মাছ ধরে ফেলতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সব মাছ ধরে ফেলার জন্য প্রতিশতক আয়তন ও প্রতিফুট পানির গড় গভীরতার জন্য ২৫-৩০ গ্রাম হারে রোটেনন প্রয়োগ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ৪ ফুট পানির গড় গভীরতার এক একর পুকুরে ১০-১২ কেজি রোটেনন লাগবে।
* চুন প্রয়োগ: রোটেনন প্রয়োগ করা হয়ে থাকলে প্রয়োগর ২/১ দিন পর প্রতি শতকে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। এই হারে এক একর জলায়তন বিশিষ্ট পুকুরের জন্য চুন লাগবে ১০০ কেজি।
মাগুর চাষের সুবিধাসমূহ :মাগুর অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর মাছ।
■ অসুস্থ ও রোগমুক্তির পর স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এগুলো সমাদৃত মাছ।
■ অতিরিক্ত শ্বাস অঙ্গ থাকায় এর বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে দীর্ঘ সময় ডাঙ্গায় বেঁচে থাকতে পারে।
■ ৩-৪ মাসের মধ্যে বিক্রয়যোগ্য হয়, ফলে একই জলাশয়ে বছরে ৩-৪ বার চাষ করা সম্ভব (সঠিক নার্সারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে)।
তুলনায় চাহিদা ও বাজার মূল্য অত্যাধিক বেশি হওয়ায় এ মাছগুলোর বাণিজ্যিক চাষ দিন দিন বাড়ছে।
■ আন্তর্জাতিক বাজারেও ব্যাপক চাহিদা আছে।
মাগুর মাছের নার্সারি ও চাষ ব্যবস্থাপনা
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
■ নার্সারি পুকুরের আয়তন ১০-৫০ শতাংশ এবং গভীরতা ১.০-১.৫ মিটার।
■ পুকুর হতে অনাকাতিত মাছ ও প্রাণী দূর করা উত্তম; তবে পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে ১ ফুট পানির গভীরতায় ২৫-৩০ গ্রাম রোটেনন প্রয়োগ করতে হবে।
■ রোটেনন প্রয়োগের ৩-৪ দিন পর প্রতি শতাংশে ১.০ কেজি হারে চুন পুকুরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।
■ চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর শতাংশ প্রতি ৫০০ গ্রাম খৈল, ১৫০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৭৫-১০০ গ্রাম টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে।
■ ইউরিয়া সার পানিতে গুলে ছিটিয়ে এবং টিএসপি ও সরিষার খৈল ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর পানিতে গুলে সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
■ সার প্রয়োগের ৫-৬ দিন পর পুকুরের পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হলে পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে।
■ নার্সারি পুকুরের চারপাশে ৩-৪ ফুট উঁচু মশারীর জালের বেষ্টনী দিতে হবে। এর ফলে ব্যাঙ ও সাপ পুকুরে প্রবেশ করে পোনার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না।
■ হাঁসপোকা ও ক্ষতিকারক প্লাংকটন বিনষ্ট করার জন্য রেণু পোনা মজুদের ২৪ ঘন্টা আগে ৮-১০ মিলি সুমিথিয়ন প্রতি শতাংশে অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।ধানী পোনা মজুদ
■ নার্সারি পুকুরে ১৫-২০ দিন বয়সের ধানী পোনা প্রতি শতাংশে ৫,০০০-৬,০০০ টি হারে মজুদ করা যেতে পারে।
পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুতি
■ মাগুর মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ মাছ চাষের জন্য ৪-৬ মাস পানি থাকে এ রকম ১৫-৫০ শতাংশের পুকুর নির্বাচন করতে হবে। তবে এর চেয়ে বড় পুকুরেও এ মাছ চাষ করা যায়।
■ পুকুরের পাড় মেরামত ও জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
■ পুকুর সেচে পানি শুকিয়ে অনাকাক্ষিত মাছ ও প্রাণী দূর করতে হবে।
■ পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে ২৫-৩০ গ্রাম রোটেনন (১ ফুট গভীরতার জন্য) প্রয়োগ করে অনাকাক্ষিত মাছ দূর করতে হবে ।
■ প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ আবশ্যক।
■ চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পরে পূর্বের নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে। পোনা মজুদের পূর্বে পুকুরের চারিদিকে নাইলন/নেট জালের বেষ্টনী দিতে হবে।
■ সার প্রয়োগের ৭/৮ দিন পরে পুকুরে পোনা মজুদ করতে হবে।
পোনা সংগ্রহ ও মজুদ
■ পুকুরে চাষের জন্য মাগুর মাছের পোনা নিকটবর্তী ভাল হ্যাচারি হতে সংগ্রহ করে পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন দিয়ে পরিবহন করতে হবে।
■ প্রতি শতাংশে ০.৫-১.০ গ্রাম ওজনে সুস্থ সবল ৩০০-৪০০ টি পোনা মজুদ করতে হবে। তবে উন্নত ব্যবস্থাপনায় অধিক ঘনত্বে পোনা মজুদ করা যেতে পারে।
■ পোনা মজুদের সময় পোনাকে পুকুরের পানির সাথে ভালভাবে কন্ডিশনিং করে তারপর ছাড়তে হবে।
খাবার ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যা
■ পোনা মজুদের দিন থেকে ৩৫-৪০% আমিষ সমৃদ্ধ পিলেট খাদ্য নিম্নের ছক অনুযায়ী সকাল, দুপুর ও বিকালে পুকুরে ছিটিয়ে সরবরাহ করতে হবে।
কৈ মাছ চাষ বর্তমানে একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে পরিচিত। এটি মূলত পুকুরে এবং অন্যান্য জলাশয়ে বাণিজ্যিকভাবে করা যায়। দেশি কই, থাই কই এবং ভিয়েতনামি কই সহ বিভিন্ন প্রজাতির কই মাছ চাষ করা হয়। সঠিক পরিকল্পনা, পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনা দ্বারা কৈ মাছ চাষে সফলতা লাভ করা সম্ভব।
কৈ মাছ চাষের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
পুকুর নির্বাচন:
২০-৫০ শতাংশের ১.০-১.৫ মিটার গভীরতার পুকুর নির্বাচন করা উচিত। পুকুর প্রস্তুতিতে আগাছা ও অবাঞ্ছিত মাছ দূর করা এবং চুন প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
পোনা মজুদ:
সুস্থ ও রোগমুক্ত পোনা মজুদ করতে হবে। প্রতি শতাংশে ২৫-৩০ গ্রাম ওজনের পোনা মজুদ করা ভাল।
খাবার সরবরাহ:
কই মাছ মূলত কীট-পতঙ্গভুক। পোকামাকড়, ছোট মাছ, ব্যাঙাচী, শামুক বা ঝিনুকের মাংস ইত্যাদি খাদ্য হিসাবে সরবরাহ করলে খাদ্য খরচ কম হয়। এছাড়াও, বাণিজ্যিক খাদ্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
পুকুরের যত্ন:
নিয়মিত সার প্রয়োগ করে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো যায়। সেই সাথে অবাঞ্ছিত আগাছা ও পোকামাকড় দূর করতে হবে।
রোগ ব্যবস্থাপনা:
মাছের রোগাক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নিতে পারেন।
পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ:
কই মাছ অতিরিক্ত শ্বসনতন্ত্র থাকার কারণে বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন নিতে পারে, তবে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা ভালো।
মাছ সংগ্রহ:
সাধারণত রেণু থেকে ৯০-১০০ দিনে কৈ মাছ বিক্রির উপযোগী হয়।
বিভিন্ন প্রকার কই মাছের চাষ:
দেশি কই:
দেশি কই মাছ সাধারণত স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হয়ে থাকে।
থাই কই:
থাই কই দ্রুত বর্ধনশীল এবং অধিক লাভজনক।
ভিয়েতনামি কই:
ভিয়েতনামি কই মাছ চাষ করে মাসিক ভালো আয় করা সম্ভব।
কৈ মাছ চাষে লাভবান হওয়ার কৌশল:
সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা, গুণগত মানের পোনা ব্যবহার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাকৃতিক ও বাণিজ্যিক খাবার সরবরাহ করা, পুকুরের পরিবেশ উন্নত রাখা, রোগবালাই দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া.
কৈ মাছ চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে, যদি সঠিক পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করা হয়।
আমি যখন ঘর থেকে বের হচ্ছি তখন মাথার ওপর ভরা জোছনা। এ রকম চাঁদের আলোয় মানুষের ছায়া পড়ে আর মানুষ তাতে বিভ্রান্ত হয়। আমি মোটামুটি বিভ্রান্তের মতো রিকশায় উঠে বসি।বাসস্টেশনে এসে দেখি হাতে জ্বলন্ত মশার কয়েল নিয়ে এক লোক নূরের পেছনে পেছনে হাঁটছে। আমি হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করি, ‘এই আজব লোককে কোত্থেকে জোগাড় করলে?’নূর হাসে, ‘যাদের ঘর আছে মশা তাদের কামড়ায়, যাদের ঘর নাই মশা তাদেরকেও কামড়ায়!
‘মশার কাছে মানুষের কোনো বাছবিচার নেই, সবাই সমান। এই লোক রাস্তায় ঘুমায়, কিন্তু মশার কামড়ে নাকি ঘুম আসে না, তাই সব সময় মশার কয়েল নিয়ে ঘোরে।’
লোকটা নূরের কথায় অত্যন্ত আনন্দিত হয়। তারপর হাসতে হাসতে বলে, ‘ভাইজান, যদি একটা চা খাওয়াইতেন।’
আমি দোকানদারকে তিন কাপ চা দিতে বলি। লোকটা আবার হাসে, ‘যদি একটা কেক খাওয়াইতেন।’
আমি দোকানদারকে বলি, ‘উনাকে একটা কেক দেন।’
লোকটা আরও উৎসাহিত হয়ে বলে, ‘যদি একটা কলা খাওয়াইতেন।’
নূর লোকটাকে ধমকিয়ে ওঠে, ‘কলা খেলে রাতে ঘুম আসবে না। তাড়াতাড়ি চা-কেক খেয়ে জায়গা দখল করেন, না হলে অন্য কেউ এসে আপনার জায়গা দখল করে ফেলবে। দেশে এখন জায়গার খুব দাম!’
নূর আমার দিকে তাকিয়ে গোপন কোনো আলাপের মতো ফিসফিসিয়ে বলল, ‘ঘটনা কী বল তো? হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই, টেকনাফ যাওয়ার দরকার হলো কেন?’
আমি রহস্য করে বলি, ‘একটা ফুল আনতে যাচ্ছি।’
নূর আমার কথায় ভীষণ অবাক হয়, ‘একটা ফুল আনতে এত দূর! তোমার মাথা খারাপ হলো নাকি!’
আমি আবারও হেঁয়ালি করি, ‘পৃথিবীর কোনো প্রেমিকের মাথা কখনো ঠিক ছিল না! যারা একবার প্রেমে পড়েছে তাদের সবার মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে!’
নূর আমার রসিকতা ধরতে পারে না, ‘কী হয়েছে খুলে বল তো। আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।’
আমি অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে বলি, ‘সুনন্দাকে বলেছিলাম, তোমাকে কিছু একটা দিতে চাই। সুনন্দা আমার হাতটা ধরে রেখে বলেছিল, তুমি আমার সাথে আছ এটাই তো আমার সবকিছু, আর কিছু চাই না। আমি অনেক জোরাজুরি করাতে সুনন্দা মুচকি হেসে বলল, যে জিনিসটা চাইব সেটা খুবই সহজলভ্য আবার খুব দুষ্প্রাপ্য। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের কোনো এক দ্বীপে একটা ফুল পাওয়া যায়, বছরে একবার ফোটে। সেটা নামে ফুল হলেও দেখতে ফলের মতো। পারলে আমার জন্য সেই ফুল একটা এনে দিয়ো।’নূর বিস্ময়ে কথা বলতে পারে না। অনেকক্ষণ পরে তার সংবিৎ ফেরে, ‘তাহলে আমি কী দোষ করলাম ভাই! আমাকে সাথে নেওয়ার কারণ কী?’আমি এবার হেসে ফেলি, ‘তুমি হারানো মানুষ খুঁজে পাওয়াতে ওস্তাদ। এবার না হয় আমার জন্য একটা হারানো ফুল খুঁজে দেবে। কারও কারও জন্য তো একটা ফুল একটা মানুষের জীবনের সমান।’নূর কিছু বলে না। আমি ভয়ে ভয়ে বলি, ‘আমরা নাফ নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে বের হয়ে যাব। তারপর ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে ফুলটা খুঁজব।’
আমি নূরের ধমক খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি। নূর মুখ কালো করে বলে, ‘বাস ছাড়তে এখনো ঘণ্টাখানেক বাকি। চল, কর্ণফুলীর পাড় থেকে ঘুরে আসি। নোঙর করে থাকা জাহাজ আর মাছ ধরার ট্রলারে লাল-নীল বাতি জ্বলে। দেখে মনে হয় একঝাঁক তারা নিয়ে আকাশটা নদীতে নেমে এসেছে।’
কর্ণফুলীর পাড়ে এসে আমি অবাক হয়ে গেলাম। জোছনায় নদীটাকে অপার্থিব লাগছে। নূর রহস্যময় গলায় বলে, ‘অনেক বছর আগে আমার পূর্বপুরুষ এই নদীর ওপর দিয়ে সাম্পানে করে রেঙ্গুন শহরে গিয়েছিল বাণিজ্য করতে।’
আমি রসিকতা করি, ‘আবদুল গফুর হালী সে জন্যই তো গান লিখেছিলেন, “বানু রে, অ বানু, আঁই যাইয়ুম রেঙ্গুন শহর, তোঁয়ারলাই আইননুম কী”?’
নূর আমার কথায় কান দেয় না। আমি দেখতে পাই জোছনার আলো নূরের গালের ওপর চকচক করছে। অবাক হয়ে বলি, ‘তুমি কাঁদছ নাকি!’নূরের গলা বুজে আসে, ‘অথচ দেখ আজকে হাজার হাজার মানুষ একটু আশ্রয়ের খোঁজে, একটু খাবারের জন্য নাফ নদী পার হয়ে এ দেশে আসতে চাইছে।’
আমার হঠাৎ করে বাসস্টেশনে মশার কয়েল হাতে নিয়ে ঘোরা লোকটার কথা মনে হলো। একটু মাথা গোঁজার জন্য, একটু খাবারের জন্য সারা পৃথিবীতেই এ রকম লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আমার খুব মন খারাপ হয়, ‘আসলে গৃহহীন মানুষের কোনো দেশ নেই।’আমার আর কিছু ভালো লাগে না। নূরকে বলি, ‘চল, বাসায় চলে যাব। কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না।’
নূর অবাক হয়, ‘ফুল আনতে যাবে না?’
আমার বিষণ্নতা কাটে না, ‘আমি যদি ফুল নিয়ে আসার সময় নাফ নদী পাড়ি দিয়ে আসা লোকগুলোর সামনে কিংবা মশার কয়েল হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো লোকটার সামনে পড়ে যাই, তাহলে লজ্জায় তো আমার মরে যেতে ইচ্ছে করবে। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে আমার অন্তত মাথার ওপর ছাদ খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে না।’নূর নাছোড়বান্দা, ‘কিন্তু, সুনন্দা রাগ করবে না?’আমি হেসে ফেলি, ‘সুনন্দা তো বলেই দিয়েছে, আমি সারা জীবন তার হাত ধরে থাকলে সে তাতেই খুশি। তার আর কিছু চাই না।’আমি রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরে যাচ্ছি তখন জোছনা আরও ঘন হয়ে এসেছে। এ রকম জোছনায় খুব প্রিয় কারও হাত ধরে সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। আমি সুনন্দার বাসার সামনে চলে যাব কি না ভাবছি। এ রকম জোছনায় কেউ বেশিক্ষণ ঘরের ভেতরে থাকতে পারবে না। কখনো না কখনো তাকে বারান্দায় আসতেই হবে। সে দেখবে অনেক দূরে একটি ছেলে ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসীর মতো একা বসে একমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। জোছনায় ছেলেটির ছায়া পড়েছে রাস্তায়। তারপর একবার ছেলেটির দিকে, আরেকবার তার ছায়ার দিকে তাকাতে তাকাতে পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে যাবে সে। # #