ঢাকার ভোর আর খুলনার পথে দীর্ঘ যাত্রা

এটি সম্পূর্ণ আমার নিজের অভিজ্ঞতা। কোথাও থেকে কপি করা হয়নি। ধন্যবাদ।

আমরা রাইতে গাড়িতে চইরা ময়মনসিংহ থেইকা ঢাকার দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সবাই চুপচাপ, তবে চোখ-মুখে স্পষ্ট উত্তেজনা। রাস্তায় তেমন জ্যাম নাই, হালকা ঠান্ডা বাতাস লাগতেছিল গাড়ির জানালা দিয়া। আব্বা বললেন, “ভোরে ঢাকায় পৌঁছামু, তারপর বাস ধইরা খুলনা।” আম্মা বলল, “সকাল হইলেই কিছু খাইতে হইবো, পেট তো আর খালি রাখা যায় না।”

 

ভোরের দিকে ঢাকায় ঢুকতেছিলাম, আকাশ একটু একটু কইরা ফর্সা হইতেছিল। শহরের বাতাসে কুয়াশার ঝাপটা, গাছপালার পাতায় পানি জমে আছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে দোকান খোলতেছে, চা’ওয়ালারা পানির কেটলি গরম করতেছে, এই দৃশ্যগুলা খুব পরিচিত, কিন্তু ভ্রমণের ভেতরে অন্যরকম লাগতেছিল।

 

কমলাপুর রেলস্টেশন থেইকা বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাইতেছি। রাস্তায় কিছুটা জ্যাম ধইরা গেল, কিন্তু কারো মুখে বিরক্তি নাই। সবার মনেই সুন্দরবনের ছবি ঘুরতেছে। ছোট ভাই জানালা দিয়া তাকায়া বলতেছে, “এই শহর ছাইড়া কতদূর যামু আমরা, ভাইয়া?” আমি বললাম, “অনেক দূর, কিন্তু সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় যাইতেছি তো!”

 

ঢাকার গাবতলী থেইকা খুলনার বাসে উঠলাম সকাল আটটার দিকে। বাসটা একটু পুরান টাইপের, কিন্তু জানালা পইরা দেইখা মন ভালো হইয়া গেল। গাঁয়ের রাস্তা, ক্ষেত-খামার, মাঝে মাঝে নদী—সব দেখা যাইতেছিল। আব্বা একটা বেগুনি পলিথিন ব্যাগ থেইকা ঝালমুড়ি বাইর করলো, আমরা সবাই ভাগ কইরা খাইলাম।

 

বাসে যাইতে যাইতে ঝিমাইয়া পড়ছিলাম সবাই। ছোট ভাই আমার কাধে মাথা রাখছে, আমি জানালা দিয়া তাকায়া ছিলাম। মাঝে মাঝে ভাবতেছিলাম, সুন্দরবনে সত্যিই কি বাঘ দেখা যাইবো?

 

দুপুরের একটু পর আমরা খুলনা পৌঁছাইলাম। বাস থামার সাথেই সবার চোখে মুখে আবার চাঞ্চল্য। “চলো, এখনই তো শুরু হইলো আসল যাত্রা,” আব্বা বললেন। লঞ্চ ঘাটে যাইতেছি এখন।


Hridoy Sarker

85 ব্লগ পোস্ট

মন্তব্য