তোলে তা হবে মুসলমানদের সাথে দুশমনী। যতো দিন পৃথিবীতে হিন্দু থাকবে তারা ইসলামকে ছোবল মারবেই এবং হিন্দুস্তানের যমীন মুসলমানদের রক্তে রি ত হতেই থাকবে। হিন্দুস্তানের মজলুম মুসলমানদের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসবে না। যাদের এগিয়ে আসার কথা তাদেরকে হিন্দু শাসকরা মৈত্রী ও বন্ধুত্বের জালে আটকে রাখবে।
সুলতান মাহমূদ বলতেন, হিন্দু শাসকরা বহুগামী স্ত্রীর মতো, যে প্রকাশ্যে স্বামীর পা ধুইয়ে দেয় এবং দৃশ্যত সে স্বামীর অর্ধাঙ্গীনী হিসেবে নিজেকে জাহের করে, কিন্তু স্বামীর আড়াল হলেই সে আরো কয়েক জনের সাথে প্রেম করে। প্রকৃত পক্ষে সে স্বামী বেচারার জন্যে প্রেমের ফাঁদ এবং জীবন্ত প্রতারণা হয়ে সবসময় স্বামীর সাথে প্রতারণা করে। এমন স্ত্রী যে কোন সময় তার প্রেমিকদের মনোরঞ্জনের জন্য স্বামীকে হত্যা করতে দ্বিধা করে না।
সুলতাম মাহমুদের পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও মুর্শিদ শায়খ আবুল হাসান কিরখানী তাকে বলেছিলেন, মানবেতিহাসে দু'টি জাতি একই মাটি থেকে একই সাঁচে বানানো হয়েছে। এই দু'টি জাতি হলো ইহুদী ও হিন্দু। মুসলমানদের বিরুদ্ধাচরণ এদের স্বভাবজাত এবং এদের ধর্মের অংশ। যে যুগে মুসলমানরা এই দুই জাতি সম্পর্কে অসতর্ক হবে কিংবা এই দুই জাতিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, সেই যুগ হবে মুসলমানদের পতনের যুগ।
মুসলিম মিল্লাত তখন তাদের আত্মমর্যাদাবোধকে হারিয়ে ফেলবে, তাদের মান মর্যাদা ধ্বংস হয়ে যাবে। শতধা বিচ্ছিন্ন মুসলিম শাসক গোষ্ঠী মুসলিম
বিরুদ্ধাচরণ এদের স্বভাবজাত এবং এদের ধর্মের অংশ। যে যুগে মুসলমানরা এই দুই জাতি সম্পর্কে অসতর্ক হবে কিংবা এই দুই জাতিকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, সেই যুগ হবে মুসলমানদের পতনের যুগ।
মুসলিম মিল্লাত তখন তাদের আত্মমর্যাদাবোধকে হারিয়ে ফেলবে, তাদের মান মর্যাদা ধ্বংস হয়ে যাবে। শতধা বিচ্ছিন্ন মুসলিম শাসক গোষ্ঠী মুসলিম জনতাকে প্রজা ভাবতে শুরু করবে। তখনকার শাসক শ্রেণী নাগরিকদের মুখ বন্ধ করে দেবে। ইহুদী ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে সাধারণ মুসলমানরা কিছুই বলার সুযোগ পাবে না। কারণ তখনকার শাসক গোষ্ঠী ইহুদী ও হিন্দুদের মনোরঞ্জন করে ক্ষমতায় থাকতে চেষ্টা করবে। সেই যুগ হবে ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার যুগ। তখন আল্লাহর যমীন মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত হতে থাকবে।
সুলতান মাহমূদ খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে তার শায়খের কথা শুনতেন। এ সব কথা শোনার সময় তার চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেতো। তাকে দেখে মনে হতো তিনি সেই সময়ের কথা ভেবে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। দুঃখ যন্ত্রণায় তার অন্তর কেঁপে উঠতো। একদিন আবুল হাসান কিরখানী বললেন, এমন একদিন আসবে, যখন তোমার এই রাজ্যে বিধর্মী শক্তি তাদের ইচ্ছামতো শাসন কাজ চালাবে। তোমার রাজ্যে মুনাফিকদের দৌরাত্ম চলবে। গযনী, কান্দাহার, গারদিজ তখন বিধর্মীদের পদপিষ্ট হবে। যাদের কোন দীন ধর্ম থাকবে না, তাদেরকেই একদল মুসলিম দীনের প্রহরী ভাবতে শুরু করবে। 10:31
শুধু দমান
২৩
সম্মানিত মুর্শিদ। কম্পিত কণ্ঠে একথা শুনে বললেন সুলতান, সে সময়ের অনাগত সেই জাতির দুর্ভাগ্য আজ আমি কি ভাবে রোধ করতে পারবো? আমাকে এজন্য কি ভূমিকা পালন করতে হবে?
আরে সুলতান। তুমি তো তখন হবে কবরের অধিবাসী। তোমার কবর তাদের কিছুই করতে পারবে না। তোমার আমার কবরের চার পাশেই ভবিষ্যতে রক্তের ছলি খেলার আয়োজন হবে। তখন আর আমাদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হবে না। অতএব যা করার এখনই করতে হবে। অবশ্য তুমি তোমার কর্তব্য যথার্থই পালন করছো।
এই প্রেক্ষিতে আজ আমি তোমাকে কি কাজ করা ঠিক হবে না সে ব্যাপারটি বলতে চাচ্ছি। তুমি বার বার মোহময় মায়াবী হিন্দুস্তানে যাচ্ছো। হিন্দুস্তানে রয়েছে সোনা-দানা ও সহায়-সম্পদের চমক এবং হিন্দুস্তানের মেয়েরাও মারাত্মক চমক। এরা কোন প্রকার পর্দা করে না। শুধু মেয়ে নয়, হিন্দুস্তানের প্রাকৃতিক পরিবেশও মোহময়। তুমি, তোমার সেনাপতি ও কমান্ডাররা যদি এসব মোহ-মায়া থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে পারো, তাহলে তোমাদের পক্ষে সেই দুর্গ তৈরী করা সম্ভব হবে, যে দুর্গ প্রাচীরে মাথা ঠুকে মরবে হিন্দুরা।
সম্মানিত মুর্শিদ। অনেক সময় আমার সৈনিকরা হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করে ফেলে। অবশ্য যেসব মেয়ে বিয়ের আগেই স্বেচ্ছায় ইসলামে দীক্ষা নেয় তাদেরকেই গযনীর সেনারা বিয়ে করে। আমি কি এই ধারা চালু থাকতে দেবো,
ফেলে। অবশ্য যেসব মেয়ে বিয়ের আগেই স্বেচ্ছায় ইসলামে দীক্ষা নেয় তাদেরকেই গযনীর সেনারা বিয়ে করে। আমি কি এই ধারা চালু থাকতে দেবো, না বন্ধ করে দেবো?
শোন মাহমুদ। এই প্রেক্ষিত্রে তোমাকে একটি গল্প বলি- বললেন শায়খ কিরখানী। আমি যখন যুবক, তখন আমার আব্বার একজন বন্ধু প্রায়ই আমাদের বাড়ীতে আসতেন। আব্বার এই বন্ধুটি ছিলেন খুবই দূরদর্শী সৎ ও ব্যবসায়ী। একবার তিনি কোন স্থান থেকে একটি চিতার বাচ্চা নিয়ে এলেন। আমি সেই চিতার বাচ্চাটি দেখেছি। লোকটি চিতার বাচ্চাটিকে খুবই আদর করতেন। মনে হতো তিনি একটি বিড়ালের বাচ্চাকে আদর করছেন। আব্বার সেই বন্ধু চিতার বাচ্চাকে তার কোলে বসিয়ে দুধ পান করাতেন এবং নিজের বিছানায় শোয়াতেন।
চিতার বাচ্চাটি যখন বড় হলো, তখন আব্বার ব্যবসায়ী বন্ধু সেটিকে পাখি ও হরিণের গোশত খাওয়াতেন। ব্যবসায়ী যে দিকে যেতেন, চিতার বাচ্চাও সেদিকেই যেতো। মুনীবের সাথে চিতার বাচ্চার খুবই ভালোবাসা জন্মে
উদ্যমে গযনীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করল।
অবশ্য রাজা তরলোচনের বড় ভাই ভীমপাল সুলতান মাহমুদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে সুলতানের অধীনতা স্বীকার করে নিয়েছিল এবং গযনীর সুলতানকে বাৎসরিক খাজনা পরিশোধ করে গযনীর বিরুদ্ধে কোন ধরণের সামরিক তৎপরতায় যোগ দিবে না বলে চুক্তিতে সই করেছিল। ফলে রাজা তরলোচন পালের পক্ষে প্রকাশ্যে গযনী সুলতানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব ছিলো না। কিন্তু গোপনে সে রাজা গোবিন্দ ও অর্জুনের সাথে মৈত্রী গড়ে তোলে এবং তিন রাজ্যের সেনাবাহিনী গযনী বাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তরলোচনপাল তার সৈন্যদের প্রকাশ্যে না এনে কন্নৌজ থেকে দূরে একটি ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে রেখেছিল। সে অন্য রাজাদের বলেছিল তার সেনারা প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। প্রয়োজনের সময় সে তার সেনাদের প্রকাশ্যে নিয়ে আসবে। প্রকৃতপক্ষে তরলোচনপালের সামরিক প্রস্তুতি এবং লাহোর থেকে তার সেনাদের এনে কন্নৌজের কাছের কোন জঙ্গলে লুকিয়ে রাখার ব্যাপারটি ছিল অন্যান্য হিন্দু রাজাদের জন্য একটা গোলক ধাঁধা। তারা তরলোচনপালকে ঠিক বিশ্বাসও করতে পারছিল না, আবার তার বাহিনীকে এ দিকে নিয়ে আসার ব্যাপারটিকে অস্বীকারও করতে পারছিল না।
ভারত অভিযান ১৩
নেয়ায় সেখানকার অন্যান্য হিন্দু রাজাদের মধ্যে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল। সুলতান মাহমুদ প্রকারান্তরে চাচ্ছিলেন রাজা-রাজ্যপালকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতে। যাতে করে সে পুনর্বার শক্তি সঞ্চয় করে গযনী বাহিনীর বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগ না পায়।
মহারাজা রাজ্যপাল বশ্যতা স্বীকার করে যুদ্ধ ক্ষতিপূরণ ও সুলতানকে খসরিক খাজনা পরিশোধ করে গধনী সরকারের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে ছিলেন বটে, কিন্তু এতে সারা হিন্দুস্তান রাজ্যপালের শত্রুতে পরিণত হলো। তৎকালীন হিন্দুস্তানের পার্শবর্তী মহাশক্তি তিন শক্তিধর হিন্দুরাজা রাজ্যপালের এতোটাই শত্রুতে পরিণত হলো যে, তারা রাজ্যপালকে হত্যা করার চেষ্টায় মেতে উঠলো।
রাজ্যপালের শত্রুদের মধ্যে কালাঞ্জরের রাজা গোবিন্দ ছিল অন্যতম। দ্বিতীয় ছিল গোয়ালিয়রের রাজা অর্জুন, তৃতীয় লাহোরের মহারাজা তরলোচনপাল। লাহোরের মহারাজা ভীমপাল তখন বৃদ্ধ ও অসুস্থ। ফলে তার ছোট ভাই তরলোচনপালকে লাহোরের রাজা ঘোষণা করা হয়। তরলোচনপাল রাজত্বের আসনে বসে কালাঞ্জর ও গোয়ালিয়রের রাজাদের সাথে হাত মিলিয়ে নতুন উদ্যমে গযনীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করল।
অবশ্য রাজা তরলোচনের বড় ভাই ভীমপাল সুলতান মাহমুদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে সুলতানের অধীনতা স্বীকার করে নিয়েছিল এবং গযনীর সুলতানকে বাৎসরিক খাজনা পরিশোধ করে গযনীর বিরুদ্ধে কোন
শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে সুলতানের অধীনতা স্বীকার করে নিয়েছিল এবং গযনীর সুলতানকে বাৎসরিক খাজনা পরিশোধ করে গযনীর বিরুদ্ধে কোন ধরণের সামরিক তৎপরতায় যোগ দিবে না বলে চুক্তিতে সই করেছিল। ফলে রাজা তরলোচন পালের পক্ষে প্রকাশ্যে গযনী সুলতানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব ছিলো না। কিন্তু গোপনে সে রাজা গোবিন্দ ও অর্জুনের সাথে মৈত্রী গড়ে তোলে এবং তিন রাজ্যের সেনাবাহিনী গযনী বাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
তরলোচনপাল তার সৈন্যদের প্রকাশ্যে না এনে কন্নৌজ থেকে দূরে একটি ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে রেখেছিল। সে অন্য রাজাদের বলেছিল তার সেনারা প্রস্তুত অবস্থায় রয়েছে। প্রয়োজনের সময় সে তার সেনাদের প্রকাশ্যে নিয়ে আসবে। প্রকৃতপক্ষে তরলোচনপালের সামরিক প্রস্তুতি এবং লাহোর থেকে তার সেনাদের এনে কন্নৌজের কাছের কোন জঙ্গলে লুকিয়ে রাখার ব্যাপারটি ছিল অন্যান্য হিন্দু রাজাদের জন্য একটা গোলক ধাঁধা। তারা তরলোচনপালকে ঠিক বিশ্বাসও করতে পারছিল না, আবার তার বাহিনীকে এ দিকে নিয়ে আসার ব্যাপারটিকে 2025/05/25:10:রছিল না।
Enter text ভারত অভিযান ১৩