এক কৃষকের ছিল একটি গাধা ও একটি গরু। কৃষক বোঝা আনা-নেওয়া ও চলাচলের বাহন হিসেবে গাধাকে ব্যবহার করতো আর গরু দিয়ে হালচাষ করতো। গম ও ধান মাড়াইয়ের কাজেও গরুকে ব্যবহার করা হতো।
একদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একনাগাড়ে কাজ করে গরু যখন ঘরে ফিরলো তখন অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে ক্লান্ত হয়ে একা একাই বিড়বিড় করে কী যেন বলছিল। গরুকে বিড়বিড় করতে দেখে গাধা বললো :
গাধা : আরে বাবা, হয়েছে কী? বিড়বিড় করে কি বলছো?
গরু : তোরা গাধার দল আমাদের দুঃখ-কষ্টের কি বুঝবি ? আমাদের দুঃখ-কষ্ট কেউ বুঝেনারে, কেউ বুঝে না।
গাধা : বুঝবো না কেন, অবশ্যই বুঝবো। তাছাড়া তুই যেমন বোঝা টানিস আমরাও তেমনি বোঝা টানি। আমাদের মধ্যে তফাৎটা কোথায় দেখলি!
গরু : তফাৎ অবশ্যই আছে। গাধাকে বোঝা টানা ছাড়া আর কোনো কাছে ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু জমি চাষ করা, ফসল মাড়াই করা, কলুর ঘানি টানা এসব কষ্টের কাজ আমাদের করতে হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর ব্যথা-বেদনায় সারারাত চোখে ঘুম আসে না। তোদের কি এত কষ্ট করতে হয়?
গরুর কষ্টের কথা শুনে গাধার মনটা খারাপ হয়ে গেল। গরুকে কষ্ট থেকে রেহাই দেয়ার জন্য সে একটা বুদ্ধি বের করলো। এরপর গরুকে উদ্দেশ্য করে বললো :
গাধা : তুই যদি চাস তাহলে আমি এমন একটা বুদ্ধি দিতে পারি যাতে তোকে আর মাঠে যেতে হবে না।
গরু : গাধার মাথায় আবার বুদ্ধি আছে নাকি ? না না তোর বুদ্ধি অনুযায়ী চলতে গেলে আমার বিপদ আরো বাড়বে।
গাধা :শোন্ ! মানুষ আমাদেরকে যত গাধা মনে করে আমরা কিন্তু আসলে তত গাধা নই। আর এ জন্যইতো আমাদেরকে হালচাষ ও ঘানি টানার কাছে কেউ লাগাতে পারে না। তুই একবার আমার কথা অনুযায়ী কাজ কর,তাহলে দেখবি তুইও আমার মতো সুখে আছিস।
গরু : ঠিকাছে বল দেখি, তোর বুদ্ধিটা কি ?
এরপর গাধা গরুকে অসুস্থ হবার ভান করতে পরামর্শ দিলো। গরু নিজেকে বাঁচানোর জন্য গাধার পরামর্শ অনুযায়ী হাত-পা সোজা করে ঘরে শুয়ে রইল এবং হাম্বা হাম্বা রবে ‘উহ্ আহ্’ করতে লাগলো। কৃষক এসে উঠানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। তখন বাধ্য হয়ে গোয়াল থেকে বের এলো এবং অন্য কোন উপায় বের করার জন্য চিন্তা করতে লাগলো।
কৃষক চলে যাওয়ার পর গরু গাধাকে ধন্যবাদ দিল। ধন্যবাদ পেয়ে গাধাও খুশীতে নেচে উঠলো। কিন্তু গাধার খুশী বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। কিছুক্ষণ পরই কৃষক গোয়াল ঘরে ফিরে এলো এবং গরুর বদলে গাধাকেই মাঠে নিয়ে গেল। গাধার কাঁধে লাঙ্গল-জোয়াল বেঁধে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা জমি চাষ করার পর কৃষক কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেয়ার জন্য একটি গাছের ছায়ায় বসলো। এ সময় গাধা মনে মনে ভাবতে লাগলো :গাধা : গরুকে বাঁচাতে গিয়ে আমি নিজেই বিপদে পড়ে গেলাম! সত্যি সত্যিই আমি একটা গাধা। তা না হলে এমন বোকামী কেউ করে?
এসব ভাবার পর নিজেকে বাঁচানোর জন্য গাধা চিন্তা করতে লাগলো। হঠাৎ সে গরুকে দেয়া বুদ্ধিটিই কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী গাধা জমিতে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লো এবং কান ফাটা চিৎকার দিয়ে আকাশ-বাতাস ভারী করে তুললো। চিৎকার শুনে কৃষক গাধার কাছে এলো। এরপর তাকে মাটি থেকে উঠানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু কিছুতেই উঠাতে পারলো না। এরপর কৃষক তার লাঠি দিয়ে গাধাকে বেদম পেটাতে শুরু করলো। পেটাতে পেটাতে কৃষক বললো :
কৃষক : মুর্খ কোথাকার! দেখতেই পাচ্ছিস, গরুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এরপরও সব জেনে শুনে তুই কুড়েমি শুরু করেছিস!তোর দুধ কোন কাজে আসে না, গোশতেও কোন ফায়দা নেই। তারপরও ভেবেছিস তোকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবো? আজ যদি কাজ না করিস তাহলে তোকে মেরেই ফেলব।
গাধা দেখল অবস্থা বিপজ্জনক। তাই সোজা হয়ে দাঁড়ালো। প্রথম দিকে বিরক্তির সাথে এবং ধীরে ধীরে মনোযোগ দিয়ে কাজে লেগে গেল। কাজ করার সময় গাধা বিড়বিড় করে বলতে লাগলো- যেভাবেই হোক আজ রাতে গরুকে কৌশলে পটাতে হবে যাতে কাল সকালে মাঠে যায়।
যাই হোক, সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে বাড়ীতে ফিরল গাধা। বাড়ী ফিরেই সোজা গিয়ে ঢুকলো গোয়াল ঘরে। গাধাকে দেখেই গরু নড়েচড়ে বসল। এরপর বললো:
গরু: মাঠ থেকে এলি নাকি? এবার নিশ্চয়ই দেখেছিস, কি কঠিন কাজইনা আমাদের করতে হয়!
গাধা : না না, মোটেই কঠিন নয়। আমার তো মনে হয়, খুবই আরামদায়ক এবং সোজা কাজ এটি। কিন্তু অন্য একটি বিষয়ে আমার মনটা ভীষণ খারাপ। তোকে বললে তুইও কষ্ট পাবি।
গরু : হাল চাষের চেয়েও কষ্টের কিছু আছে নাকি? ঠিকাছে খুলেই বল, কষ্ট পাবো না।
গাধা : ব্যাপারটা তেমন কিছু না। আজ দুপুরে যখন মাঠে কাজ করছিলাম, তখন মালিক তার এক বন্ধুকে বলছিল, আমার গরুটা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে । মনে হয় বাঁচবে না। তাই ঠিক করলাম, কাল যদি ভাল না হয় তাহলে জবাই করে ফেলবো।
এ কথা শুনে গরু ভয়ে কাঁপতে লাগলো। তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল :
গরু : তুই সত্যি বলছিস তো! যদি তাই হয় তাহলে কাল থেকেই কাজে লেগে পরতে হবে। মরার চেয়ে কাজ করে খাওয়া অনেক ভাল। তোর মত গাধার বুদ্ধিতে চলতে গিয়েই তো আমার সামনে বিপদ এসে হাজির হয়েছে। আর কোনদিন আমি তোর কথা শুনবো না।
গাধা: তোরে বুদ্ধি দিয়ে তো আমিও কম শাস্তি পেলাম না। আমি তোর উপকার করতে গেলাম আর তুই কিনা আমাকে দোষ দিচ্ছিস! গরুর দল বড়ই অকৃতজ্ঞ।
এভাবে কথা কাটাকাটির মধ্যদিয়ে রাত পোহালো। পরদিন সকালে কৃষক এসে গরুকে ধাক্কা দিতেই সে লাফিয়ে উঠলো। তখন গরু আর গাধাকে নিয়ে সে মাঠের দিকে রওনা হলো। যাওয়ার সময় কৃষক তার ছেলেকে ডেকে বললো :
কৃষক : তুই আরেকটি লাঙ্গল জোয়াল নিয়ে আয়। গাধাকেও আজ থেকে গরুর পিছু পিছু হাল চাষে কাজে লাগাবি! আর শোন, আরেকটা মোটা লাঠিও নিয়ে আসিস। গাধা আবার ছংবং করতে পারে। # # #
সামর্থ থাকলে একাই কুরবানি করা পারতপক্ষে ভালো : আপনার সামর্থ থাকলে একাই কুরবানি করতে পারেন। সামর্থ না থাকলে আপনার জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব নয়। সেক্ষেত্রে ইচ্ছে করলে আপনি অন্যদের সাথে অংশীদার হতে পারেন। আবার মনে করুন আপনার সামর্থ আছে এবং একাই কুরবানি করবেন ভেবেছেন। কিন্তু দেখাগেল আপনার পাশের কেউ আছে যার একার পক্ষে কোরবানি করা সম্ভব নয় কিন্তু কুরবানি করতে ইচ্ছুক কারো সাথে অংশীদার হয়ে। তবে সে খেত্রে তাকে আপনি আপনার অশীদার করে কুরবানি করার সুযোগ দিতে পারেন। এতে পারষ্পরিক ভ্রাতিত্ত্ব ও সুসম্পর্ক সৃষ্টি হয়, যা খুবই উত্তম। আশা করা যায় এতে কারোরই সওয়াব বা তাকওয়া অর্জনে ঘাটতি হবে না। কেননা আল্লাহর কাছে কুরবানির পশুর বস্তুগত কিছুই পৌঁছায় না শুধু যার যার তাকওয়া ব্যতিত। নিশ্চই আল্লাহ জানেন যা আমরা প্রকাশ্যে করি আর যা গোপনে।
২. কুরবানির পশুর কোন কিছুই আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না : কোরবানির পশুর কোন কিছুই আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না, শুধু আপনার তাকওয়া ব্যতিত। তাই কত বড় বা ছোট পশু আপনি কোরবানি করবেন সেটা কোন বিষয় নয়। তবে কোরবানির পশু হতে হবে সুস্থ সবল এবং কোরবানির জন্য প্রাপ্ত বয়ষ্ক। আপনার কোরবানির উদ্দেশ্য যদি হয় লোক দেখানো, তবে তা- তা হিসেবেই গন্য হবে, কোরবানি হিসেবে নয়। আপনার কোরবানি করাটা লোক দেখানো কিনা তা বুঝার জন্য নিজেকেই প্রশ্ন করুন, “যদি নিয়ম এমন হতো যে কোরবানি করতে হবে সম্পূর্ন গোপনে, তবে কি আপনি অর্থ খরচ করে কোরবানি করতেন?” আমি মনে করি কোন মুসলমানই লোক দেখানোর জন্য কোরবানি করেন না। তবুও যখন দেখা যায় অনেক মানুষ যাকাত দিচ্ছেন না কিন্তু অধিক মূল্যের পশু কোরবানি করছেন, যখন যাকাত তাদের উপর ফরজ এবং কোরবানি করা ওয়াজিব ছিল, তখন কিছুটা দ্বিধায় পরতে হয় বৈকি।
প্রিয় পশু কুরবানির মাধ্যমে মুসলমানগণ আল্লাহর দরবারে তার ত্যাগকে উপস্থাপন করেন। মানব ইতিহাসের সাথে কুররবানির ইতিহাস ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম (আঃ) এর সময় থেকে কুরবানির প্রথা চালু রয়েছে। পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোরবানি তারই পুত্র দ্বয় হাবিল ও কাবিলের দ্বারা সংঘটিত হয়।
ঈদ সম্পর্কে একটি রচনা নিচে দেওয়া হলো:
ঈদ: মুসলিম উম্মাহর সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দ উৎসব
ঈদ মুসলিম উম্মাহর প্রধানতম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব। এটি শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং মিলন, প্রীতি, ও ভালোবাসার এক অনন্য সেতু বন্ধন। বছর ঘুরে ঈদ আসে মুসলিমদের জীবনে অনাবিল আনন্দ আর খুশির বার্তা নিয়ে। ঈদ মূলত দুটি: ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। এই দুটি ঈদই মুসলিম জীবনে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।
ঈদুল ফিতর: রমজানের সিয়াম সাধনার পরশ
এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদুল ফিতর, যা 'রোজার ঈদ' নামেও পরিচিত। রমজান মাস জুড়ে মুসলিমরা কঠোর সংযম ও আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকেন। এরপর শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে আসে এই ঈদ। দীর্ঘ এক মাস আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগের পর এই ঈদ আনন্দের এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এই দিনে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করে। নামাজের পূর্বে ফিতরা আদায় করা হয়, যা গরিব ও অভাবীদের মাঝে বিতরণ করা হয়, যাতে তারাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। নতুন পোশাক পরা, সেমাই খাওয়া, এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করা এই ঈদের প্রধান অনুষঙ্গ।
ঈদুল আযহা: ত্যাগের মহিমা
ঈদুল আযহা, যা 'কুরবানির ঈদ' নামে পরিচিত, জিলহজ মাসের দশম দিনে উদযাপিত হয়। এটি আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের এক মহান নিদর্শন। হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। এই স্মৃতিকে স্মরণ করে মুসলিমরা ঈদুল আযহায় পশু কোরবানি করে। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয় – এক ভাগ নিজেদের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য এবং এক ভাগ গরিব ও অভাবীদের জন্য। এই ঈদ ত্যাগের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের এবং সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের এক অনন্য সুযোগ এনে দেয়।
ঈদের সামাজিক গুরুত্ব
ঈদ কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এর একটি বিরাট সামাজিক গুরুত্বও রয়েছে। ঈদ ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসে। এই দিনে সবাই নিজেদের মধ্যে থাকা বিভেদ ভুলে একসঙ্গে হাসিমুখে মেলামেশা করে। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে যাওয়ার মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। শহর থেকে গ্রামে মানুষ ছুটে যায় পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে। এই সময়টায় অনেক বাড়িতেই বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয় এবং পারস্পরিক আতিথেয়তা প্রকাশ পায়। ঈদ সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, ঐক্য, এবং ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
ঈদের শিক্ষা ও তাৎপর্য
ঈদ উৎসবের পেছনে গভীর শিক্ষা ও তাৎপর্য নিহিত আছে। ঈদুল ফিতর সংযম ও ধৈর্যের পর আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে, যা নির্দেশ করে যে কষ্টের পর সুখ আসে। অন্যদিকে, ঈদুল আযহা আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্যের গুরুত্ব শিক্ষা দেয়। এই উৎসবগুলো আমাদের শেখায় যে, সত্যিকারের আনন্দ ভোগে নয় বরং ত্যাগে এবং অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই নিহিত। এটি আমাদের সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা এবং মানবতাবোধের মূল্যবোধকে আরও উন্নত করে।
উপসংহার
ঈদ শুধু একটি উৎসব নয়, এটি একটি জীবন দর্শন। এটি আমাদের শেখায় কীভাবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসার মাধ্যমে সম্পর্কগুলো মজবুত করতে হয় এবং কীভাবে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করতে হয়। ঈদের আনন্দ প্রতিটি মুসলিমের মনে এক নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসে এবং আগামী দিনের জন্য নতুন করে বাঁচার প্রেরণা যোগায়। প্রতি বছর ঈদ আসুক শান্তি, সমৃদ্ধি, এবং ভালোবাসার বার্তা নিয়ে – এই কামনাই করি।
ঈদ: মুসলিম উম্মাহর সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দ উৎসব ঈদ মুসলিম উম্মাহর প্রধানতম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব। এটি শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং মিলন, প্রীতি, ও ভালোবাসার এক অনন্য সেতু বন্ধন। বছর ঘুরে ঈদ আসে মুসলিমদের
ঈদ সম্পর্কে একটি রচনা নিচে দেওয়া হলো:
ঈদ: মুসলিম উম্মাহর সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দ উৎসব
ঈদ মুসলিম উম্মাহর প্রধানতম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব। এটি শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং মিলন, প্রীতি, ও ভালোবাসার এক অনন্য সেতু বন্ধন। বছর ঘুরে ঈদ আসে মুসলিমদের জীবনে অনাবিল আনন্দ আর খুশির বার্তা নিয়ে। ঈদ মূলত দুটি: ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। এই দুটি ঈদই মুসলিম জীবনে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করে।
ঈদুল ফিতর: রমজানের সিয়াম সাধনার পরশ
এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদুল ফিতর, যা 'রোজার ঈদ' নামেও পরিচিত। রমজান মাস জুড়ে মুসলিমরা কঠোর সংযম ও আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকেন। এরপর শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে আসে এই ঈদ। দীর্ঘ এক মাস আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগের পর এই ঈদ আনন্দের এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এই দিনে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করে। নামাজের পূর্বে ফিতরা আদায় করা হয়, যা গরিব ও অভাবীদের মাঝে বিতরণ করা হয়, যাতে তারাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। নতুন পোশাক পরা, সেমাই খাওয়া, এবং আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করা এই ঈদের প্রধান অনুষঙ্গ।
ঈদুল আযহা: ত্যাগের মহিমা
ঈদুল আযহা, যা 'কুরবানির ঈদ' নামে পরিচিত, জিলহজ মাসের দশম দিনে উদযাপিত হয়। এটি আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের এক মহান নিদর্শন। হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। এই স্মৃতিকে স্মরণ করে মুসলিমরা ঈদুল আযহায় পশু কোরবানি করে। কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয় – এক ভাগ নিজেদের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনের জন্য এবং এক ভাগ গরিব ও অভাবীদের জন্য। এই ঈদ ত্যাগের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের এবং সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের এক অনন্য সুযোগ এনে দেয়।
ঈদের সামাজিক গুরুত্ব
ঈদ কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এর একটি বিরাট সামাজিক গুরুত্বও রয়েছে। ঈদ ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসে। এই দিনে সবাই নিজেদের মধ্যে থাকা বিভেদ ভুলে একসঙ্গে হাসিমুখে মেলামেশা করে। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে যাওয়ার মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়। শহর থেকে গ্রামে মানুষ ছুটে যায় পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে। এই সময়টায় অনেক বাড়িতেই বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয় এবং পারস্পরিক আতিথেয়তা প্রকাশ পায়। ঈদ সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, ঐক্য, এবং ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
ঈদের শিক্ষা ও তাৎপর্য
ঈদ উৎসবের পেছনে গভীর শিক্ষা ও তাৎপর্য নিহিত আছে। ঈদুল ফিতর সংযম ও ধৈর্যের পর আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে, যা নির্দেশ করে যে কষ্টের পর সুখ আসে। অন্যদিকে, ঈদুল আযহা আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি অবিচল আনুগত্যের গুরুত্ব শিক্ষা দেয়। এই উৎসবগুলো আমাদের শেখায় যে, সত্যিকারের আনন্দ ভোগে নয় বরং ত্যাগে এবং অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই নিহিত। এটি আমাদের সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা এবং মানবতাবোধের মূল্যবোধকে আরও উন্নত করে।
উপসংহার
ঈদ শুধু একটি উৎসব নয়, এটি একটি জীবন দর্শন। এটি আমাদের শেখায় কীভাবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হয়, কীভাবে ভালোবাসার মাধ্যমে সম্পর্কগুলো মজবুত করতে হয় এবং কীভাবে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করতে হয়। ঈদের আনন্দ প্রতিটি মুসলিমের মনে এক নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসে এবং আগামী দিনের জন্য নতুন করে বাঁচার প্রেরণা যোগায়। প্রতি বছর ঈদ আসুক শান্তি, সমৃদ্ধি, এবং ভালোবাসার বার্তা নিয়ে – এই কামনাই করি।
১০ম বিষয়: শুধুমাত্র নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী বাধ্যতামূলক। একজন নাবালক শিশু এবং তার পিতামাতার জন্য কুরবানী বাধ্যতামূলক নয়, এমনকি যদি ছোট শিশু সম্পত্তির মালিকও হয়। কেউ যদি তার সন্তানের জন্য কুরবানী করতে চায় তবে এটি একটি স্বেচ্ছাকৃত কুরবানী হবে। তবে নাবালকের সম্পত্তি কুরবানী করা হবে না।
পশুর এক-সপ্তমাংশ, এবং সকলেরই কুরবানীর নিয়ত করা উচিত; কেউই কেবল মাংস খাওয়ার নিয়ত করবে না। অবশ্যই, যদি কেউ আকিকা করার ইচ্ছা করে তবে তা গ্রহণযোগ্য হবে। তবে, যদি একজন ব্যক্তি কেবল মাংস খাওয়ার এবং কুরবানী না করার বা আকিকা না করার ইচ্ছা করে তবে তাদের কেউই কুরবানীতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এই অর্থে, যদি কেবল একজনের অংশ পশুর এক-সপ্তমাংশের কম হয় তবে সকল অংশীদারের কুরবানী বাতিল বলে গণ্য হবে।
প্রশ্ন ১১: ছাগল, বাছুর, ভেড়া, ভেড়া, গরু, ষাঁড়, মহিষ এবং উট ইত্যাদি গৃহপালিত পশু কি কোরবানি করা যাবে? হরিণ এবং অন্যান্য হালাল বন্য প্রাণী কোরবানি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
১২তম সমস্যা: তিনটি ভিন্ন প্রাণী - গরু, মহিষ এবং উট - সর্বোচ্চ সাতজন ব্যক্তি কোরবানি দিতে পারে। তবে কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য, এটি এমন হতে হবে যাতে কারও অংশ কম না হয়
১২ মাসআলা: গরু, মহিষ ও উট- এই তিন প্রকার পশুতে সাতজন পর্যন্ত অংশীদার হয়ে কুরবানি করতে পারে। তবে কুরবানি জায়েজ হওয়ার জন্য শর্ত হলো- কারো অংশ যেন সাত ভাগের এক ভাগের চেয়ে কম না হয় ও কারো যেন শুধু গোশত খাওয়ার নিয়ত না থাকে, সবারই যেন কুরবানির নিয়ত থাকে। অবশ্য যদি কারো আকিকার নিয়ত থাকে, তবে সেটাও জায়েজ হবে। কিন্তু যদি একজনেরও শুধু গোশত খাওয়ার নিয়ত থাকে, কুরবানির বা আকিকার নিয়ত না থাকে, তবে কারো কুরবানিই জায়েজ হবে না। এমনিভাবে যদি মাত্র একজনের অংশ সাতভাগের এক ভাগের চেয়ে কম হয়, তবে অংশীদারদের সবার কুরবানি নষ্ট হয়ে যাবে।ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। মুসলিম উম্মাহর সার্বজনীন দু’টি উৎসবের অন্যতম একটঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ পশু কুরবানি করা। নিজের অর্থে কেনা পশুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে জবাই করার মাধ্যমে একজন প্রকৃত মুসলমান মূলত নিজেকে আল্লাহর কাছে সমপর্ণের শ
অবশ্যই! ঈদুল আজহা মুসলমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি "কুরবানির ঈদ" বা "বড় ঈদ" নামেও পরিচিত। ঈদুল আজহা হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পালিত হয়, যা হজের সময়ের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
ঈদুল আজহার তাৎপর্য:
ঈদুল আজহার মূল শিক্ষা হল ত্যাগ ও আত্মসমর্পণ। এই উৎসবটির পেছনে রয়েছে নবী ইব্রাহিম (আ.)-এর কাহিনি, যিনি আল্লাহর নির্দেশে নিজ পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। আল্লাহ তা'আলা তাঁর এই নিষ্ঠা দেখে ইসমাইলের পরিবর্তে একটি পশু পাঠিয়ে দেন। এর মাধ্যমে মুসলমানদের শিক্ষা দেওয়া হয়—আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করাই ঈমানদারের পরিচয়।
ঈদুল আজহার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:
1. কুরবানি: সামর্থ্যবান মুসলমানরা গরু, খাসি, ছাগল, উট ইত্যাদি পশু কুরবানি দিয়ে থাকেন। এই কুরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়—এক ভাগ গরিবদের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের জন্য এবং এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য।
2. ঈদের নামাজ: ঈদের দিন সকালে বিশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে আল্লাহর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।
3. ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহানুভূতি: ঈদুল আজহার মাধ্যমে মুসলমানরা গরিব-দুঃখীর পাশে দাঁড়ান, তাদের সাহায্য করেন, যা সমাজে সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে।
ঈদের শুভেচ্ছা:
ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানাতে সাধারণত বলা হয়: "ঈদ মোবারক! আল্লাহ আমাদের কুরবানি কবুল করুন এবং সবাইকে শান্তি, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধে উজ্জীবিত করুন।"
তুমি চাইলে এই নিয়ে একটি ছোট বক্তব্য, কবিতা, বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের লেখাও করে দিতে পারি।
বাইক টা দিছে শ্বশুরমশাই
আব্বা দিছে তেল
তাই তো আমার গতির সাথে
জেট বিমান ও ফেল।
দুর্ঘটনা ঘটলে ঘটুক
আমার কিসের ভয়
গেলে যাবে বাপ-শ্বশুরের
আমার কিছু নয়।
চলরে আমার মোটরগাড়ি
জোরসে মারো টান
কে কি বলে শুনব না আজ
ধরছি চেপে কান।
আহা হা হা কি মনোরম
গাঁয়ের বাঁকা রাস্তা
ছয় শ কিলো ঘুরে এসে
করব রে আজ নাস্তা।
এমন গতি তুলবরে আজ
আমার গতি দেখে।
থমকে যাবে পথের পথিক
পন্থ চলা রেখে।
গতির চোটে কাঁপছে মানুষ
উড়ছে পথের ধুলো
লাফিয়ে উঠছে পথের ধারের
বান্ধা ছাগল গুলো।
গতি আর ও বাড়িয়ে দিলাম
পথটা পেয়ে সরু
হঠাৎ দেখি সামনে আমার
বিশাল বড় গরু।
ধাক্কা লেগে হুন্ডা আমার
পড়ল গিয়ে খাদে
আমার তখন হুঁশ ছিল না
ফিরছে দুদিন বাদে।
দু দিন বাদে জ্ঞান ফিরলে
চেয়ে দেখি ভাই
আমার যে দুই পা ছিল তার
একটা সাথে নাই।
সকল কিছু শোনার পরে
চমকে গেল গা
বাইকটা না কি ঠিকই আছে
আমার গেছে পা।
আমার শখের বাইকে এখন
অন্য মানুষ চড়ে
পা হারিয়ে কান্দি আমি
বন্ধি হয়ে ঘরে।
ঘরে বসে ভাবি যদি
পা টা পেতাম ফিরে
তিড়িং বিড়িং ছেড়ে আমি
বাইক চালাতাম ধীরে।
মনরে বলি মন যদি তুই
বুঝতে দু দিন আগে
তবে কি তোর পা হারিয়ে
পঙ্গু হওয়া লাগে!
এধরনের মানসিকতা পরিহার করুন
ধীরে আস্তে গাড়ি চালান, জীবন অনেক দামি
গতির ক্ষতি!
এজন্য আমরা সবাই একটু সাবধানে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ 🥰
Saymon Ahmed
Удалить комментарий
Вы уверены, что хотите удалить этот комментарий?
Mdmostafizur Rahman
Удалить комментарий
Вы уверены, что хотите удалить этот комментарий?