অদ্ভুত

মানুষের জীবনের অবিচ্ছিন্ন কাহিনী। নিশ্চয়ই থমকে দাঁড়ায়।

সুব্রতর ভাই দেবব্রত তখন সবেমাত্র পাশ করে বেরিয়েছে। সেও যোগ দিলো দাদার ব্যবসায়। সুব্রতর মতই সেও নিপুণ দক্ষতায় সামলে চলল ব্যবসার সব কাজ। অতি দ্রুত উন্নতি হতে লাগল তাদের ব্যবসার। একসময় সুব্রত নিজের ব্যবসার পাশাপাশি বাবার ডুবে যাওয়া ব্যবসাটাতেও হাত দিল। সেটাকেও আবার দাঁড় করালো। নিজের ব্যবসার সঙ্গে জুড়ে নিল সেই ব্যবসাকেও। এখন যে ব্যবসা চলছে তা সুব্রতর নিজের হাতে গড়া হলেও চলছে সত্যব্রত'র নামে। বাবাকে এভাবেই শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছিল সুব্রত। আর এখন তার জীবনের এক আর একমাত্র উদ্দেশ্য দেবাশীষের ব্যবসার যথাযথ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সেখানেও সুব্রত এগিয়েছে অনেকটাই। দেবাশীষের ব্যবসা তারই বাবার পুঁজিকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছিল। একসময় বাজার দখল করে রমরমিয়ে চলছিল। কিন্তু সুব্রত বাজারে আসার পর থেকে দেবাশীষকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়েছে। আর এখন তো বেশিরভাগ টেন্ডারই সুব্রত টেনে নিতে সমর্থ হয়েছে।

দেবাশীষ নিজেও বুঝেছেন যে এবার তার মোকাবিলা কঠিন ঘাঁটিতে। তাই তিনিও মরিয়া। এইসবের মধ্যে সুব্রত সারা জীবন ব্যবসা ও পরিবার নিয়েই এত ব্যস্ত থেকেছে যে কখনো নিজের জীবনের বসন্তটুকুকে অনুভব করার সময় পায়নি। প্রেম ভালবাসা বিয়ে এসব নিয়ে ভাবার সময়ই পাইনি সে। তাই এখন সুব্রতর মা মলিনাদেবীকে সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে। সুব্রত মাকে জানিয়েছিল মা তার জন্য যেমন মেয়ে পছন্দ করবে সে তাকেই বিয়ে করবে। কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন মলিনাদেবীরা৷ মধুজাই খুঁজে দেখে মা'কে দেখিয়েছিল। এ পক্ষ থেকে খোঁজ খবর করে সেই সূত্রেই এই সমন্ধটা হয়। আলাপ হবার পরপরই মলিনাদেবী ও মধুমিতা দেবী বেশ বন্ধু হয়ে উঠেছেন। এইসব কথা তিনিই বলেছিলেন মধুমিতা দেবীকে। আর মধুমিতা বলেছেন মেয়ে মধুরাকে। সবটা শুনে মধুরার ভালোই লেগেছিল। লোকটার মধ্যে শ্রদ্ধা করার মত একটা ব্যাপার আছে বলেই মনে হয়েছিল। ছবি দেখেও অপছন্দ হয়নি। যদিও ছবি দেখে আর কতটুকু বোঝা যায়। মধুরার তরফ থেকে কোনরকম আপত্তি না থাকায় এরপর সুব্রতরা এসেছিল মধুরাকে দেখতে। সুব্রত কে মুখোমুখি দেখে মধুরার আরো ভাল লেগেছিল। লোকটার একটা স্মিত ব্যক্তত্ব আছে। তবে সঙ্গে সে এটাও বুঝতে পেরেছিল তাকে দেখে সুব্রত মুগ্ধ। সে মুগ্ধতা তার চোখ মুখ দিয়ে অনুচ্চারিত হয়েও ঝরে পড়ছিল। সুব্রতর ভাই দেবব্রত এসেছিল তার সঙ্গে। খুব মিশুকে ছেলে। মধুরার প্রায় সমবয়সী হবে হয়তো। দিব্যি গল্প জমিয়ে নিয়েছিল মধুরার সঙ্গে। সুব্রত ওদের কথাবার্তা চুপচাপই শুনছিল তখন। প্রশ্ন করলে টুকটাক উত্তর দিচ্ছিল মাত্র। মধুরাও যে খুব বেশি কথা বলছিল তা নয়। ওদের হয়ে মধুরার বোন মধুজা আর সুব্রতর ভাই দেবব্রতই দিব্যি কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছিল।


Tanvir Tanvir Farhan

86 Blog posting

Komentar