পর্ব___<<<____>>>___৩

মন পাজরে তুই____<<<<<_____>>>>>_____

#মন_পাঁজরে_তুই

#আরেব্বা_চৌধুরী 

#পর্বঃ ০৩

 

-এটা কি ভাই?(রিফাত)

-খুলে দেখ।(আবইয়াজ)

-এটা তো মেয়ে মানুষের বোরকা এটা দিয়ে কি করবি?

-স্লা মাদ্রিদ তোকে এখন এগুলো ভেঙে ভেঙে বলতে হবে?(আবইয়াজ)

-গালি দেস কেন?

-তো তোকে কি আমার সালাম করা উচিত ছিলো?

-আআবিয়াচ মনে হহয় এতা পপরবে। (সাদিন)

-না তোর নানিকে এটা পড়ায় উঠিয়ে নিয়ে আসবো। শোন এই আইসোফ্লুরেন রাখ, যখন বর আসবে আমি বাড়ির মেইন সুইচ অফ করে দিবো আর তোরা তিনজন কনের রুমে গিয়ে এটা ওর নাকের কাছে ধরবি যাতে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ওষুধগুলো শরীরে প্রবেশ করে তবে খবরদার তোরা আবার এগুলো শুকতে যাস না মুখে মাস্ক লাগিয়ে নিবি।(আবইয়াজ) 

-ওরে অজ্ঞান করার কি দরকার রে ভাই সে নিজেই তো রাকিবের কাছে যেতে চায়।(আদি)

-কেস খাওয়ার শখ হয়েছে তোর? বলা তো যায় না মেয়ে মানুষ বুঝে কম চিল্লায় বেশি একবার চিৎকার করলে এমন বাঁশ খাবি তাও সোজাটা না একেবারে আইক্কাওয়ালাটা দিবে।(আবইয়াজ)

-যাবো'টা কিভাবে?(রিফাত)

-অজ্ঞান করে এই বোরকা পড়িয়ে আদি আর এই মেয়েকে ট্যাক্সিতে করে পাঠিয়ে দিবি তারপর তুই আর সাদিন বাইকে করে যাবি সব শেষে আমি যাবো।

-ওকে।(আদি)

 

চারজন মিলে বাড়ির চারপাশ'টা হেটে হেটে দেখছে।

মিনিট ত্রিশ এক পর বর এসেছে বর এসেছে শোরগোল শোনা গেলো।

-নাও প্রস্তুত তো ভাই আমার? আমাদের মিশন শুরু এবার।(আবইয়াজ)

-একদম।(আদি)

মেয়েরা দলে দলে বরের কাছে যাওয়া আসা করছে।

বাড়ির বড়রা বরপক্ষকে আদর-সমাদর করতে ব্যাস্ত।

আবইয়াজ জেনারেটর এর ইঞ্জিনের বেল্ট খুলে দিলো।

ইতিমধ্যে রিফাত আবইয়াজের ফোনে মেসেজ পাঠালো আমরা কনের রুমের কাছে আছি তুই সুইচ অফ কর।

সাথে সাথে আবইয়াজ মেইন সুইচ অফ করে নিলো। 

নিমিষেই বাড়িটি গুটগুটে অন্ধকার হয়ে গেলো, চলার পথে একে অপরের সাথে বার বার ধাক্কা খাচ্ছে। 

কেউ একজন জোরে হাক দিয়ে বললো এই জেনারেটর চালা কেউ।

-কি আজব কেউ জেনারেটর সংযোগ করছে না কেনো।

-ভাই সাব জেনারেটরের ইঞ্জিনের বেল্ট কেউ নিয়ে গেছে।

-এটা আবার কে নিবে? দেখো অন্য কোনো সমস্যা হয়তো। 

আবারও আবইয়াজের ফোন টুং শব্দ করে উঠলো, ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো রিফাতের মেসেজ, "কাজ হয়ে গেছে।"

স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো আবইয়াজ। 

সুইচ আবার যথারীতি অন করে দিলো।

 

এবার হবে ধামাকা বলেই বাঁকা হাসলো আবইয়াজ, একটু পর যখন দেখবে কনে গায়েব তখন একাত্তরের যুদ্ধ হবে নাকি গোটা বাড়িতে ভূমিকম্প হবে কোনটা? যাইহোক এসব ভেবে আমার কাজ নাই, ওদিকে আবার আমাকেই বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। 

 বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো আবইয়াজ। 

 

এদিকে কনেকে খাটে শুইয়ে দিয়ে চারপাশে চেয়ার টেনে বসলো রাকিব আদি রিফাত সাদিন।

সবাই মিলে অপেক্ষা করছে আবইয়াজ আসার।

শিস বাজাতে বাজাতে ভেতরে প্রবেশ করলো আবইয়াজ।

-তোর শশুর বাড়িতে তো ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে রাকিব।

-হোক না তাতে আমার কি আমার বউ তো ঠিকই আমি ভাগায়া নিয়া আসছি।

-আহ মুরদ কত, এতো সাহস আছে নাকি তোর, আমরা চারজন না থাকলে তুই আজ বিয়ের বদলে সুইসাইডের ছক খসতিস।(আদি)

-রাকিব শুধু বড় বড় কথার বেলাই আছে কাজের বেলা শূন্য।(রিফাত)

-ওকে ওকে আর সময় নষ্ট না করি আমরা ঠিক আছে, নাহলে পরে দেখা যাবে বেচারা বাসর করার আগেই ফজরের আজান দিয়ে দিছে।(আবইয়াজ) 

-রাকিব যা তোর গার্লফ্রেন্ড এর আগে জ্ঞান ফেরা এরপর নাহয় কাজি ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দেবো।

রিফাতের কথায় লাজুক হাসলো রাকিব, আজ সে তার প্রিয়তমাকে সারাজীবনের জন্য নিজের করে পাবে। 

কথাটা ভাবতে ভাবতেই মুখের উপর থেকে নেকাব টা সরালো রাকিব।

মুখ'টা দেখেই চিৎকার করে লাফিয়ে উঠলো সে।

-আরে ভাই এটাকে কাকে ধরে নিয়ে আসছিস?(রাকিব)

-কেন ভাই তোর বউ নিয়ে আসছি।(রিফাত)

-না এটা মেহেক না।(রাকিব)

-এ'রে বউ দেখে রাকিব মনে হয় স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলছে।(আদি)

-মেকাপ বেশি করায় চিনতে পারছিস না মুখ ধুয়ে দেখ এটা তোরই বউ ভাই।(আবইয়াজ)

-এটা মেহেক নারে ভাই আমি আমার মেহেক কে চিনি। ভাই আমার কপাল তোরা পুড়াই ফেলছিস, আমি শেষ মেহেক ছাড়া আমার জীবন বৃথা।(রাকিব)

-তখন যে বলছিলাম লাংয়ের পিক দেখাও তখন তো দেখাইলা না ভাবছিলা তোমার বউ নিয়া আমরা পলায়া যাবো। উল্টো বা*ল পাকনামি কইরা বাড়ির ঠিকানা দিছো চান্দু তাও মেয়ে দেখাও নাই, এখন কান্দো কেন করো বিয়া।(আবইয়াজ)

-ভাই শেষ আমার সব শেষ। মেহেকের মনে হয় এতোক্ষণে বিয়ে হয়ে গেছে। ভাই আমার দুই বছরের ভালোবাসা। আল্লাহরে এ আদি আমার মাথায় পানি দে আমার স্ট্রোক করার সম্ভাবনা আছে। 

-পানির কথা পরে আগে এটা বল এখন এই মেয়েকে কি করবো একে তো আর এর ফ্যামিলি ফেরত ও নিবে না। (আদি)

-কেন যার জন্য ওরে ভাগায়া আনছি সে বিয়ে করবে কি'রে রাকিব বিয়ে করবি না?(রিফাত)

-ভাই দুই ঘন্টা পরে স্ট্রোক করলে হয় না? তোরা যা শুরু করছিস তাতে তো আমাকে এখনই মরতে হবে।(রাকিব)

-তোরা সঠিক ঠিকানায় গিয়েছিলি তো?(রাকিব)

-হ্যাঁ রে ভাই।(আদি)

-তাহলে কীভাবে কি হলো এসব? একবাড়িতে কয়টা কনে থাকে।(রাকিব)

-সেটা আমরা কিভাবে বলবো।(আদি)

-এই তোরা চুপ করবি।(রিফাত)

-হু।

 

কপালে হাত ঠেকিয়ে চেয়ারে বসে আছে আবইয়াজ। এই মেয়ের জ্ঞান ফিরলে নির্ঘাত মামলা খাবে।

-এই মেয়েকে এখন কি করবি ভাই?(রিফাত)

-মাথামুথা ঠিক নাই রিফাত কথা বলাস না আমায়, তোর তিনজনের কেউ বিয়ে করে ফেল।(রাকিব)

-হ, আমাদের তো ঠেকা পড়ছে।(রিফাত)

-সব দোষ ওই হালার আর এখন আমাদের তিনজনকে ফাঁসাই দিতেছে।(আদি)

-রিফাত তুই একে বিয়ে করে ফেল।(আবইয়াজ) 

-ভাই আমার ফ্যামিলি এখনো সচ্ছল না, নিজেরই পকেটে নাই এক টাকা বউ খাওয়াবো কি? তার চেয়ে তুই বিয়ে করে ফেল।

-আমি একে বিয়ে করলে কুত্তার মা'কে কে বিয়ে করবে? আদি তোর ফ্যামিলি তো সচ্ছল তুই বিয়ে করে ফেল।

-আমি একে ঘরে নিয়ে গেলে আমার মা আমাকেই না ঘর থেকে বের করে দেয়।এমনিতে মেয়েটা সুন্দর আছে।(আদি)

- আলহামদুলিল্লাহ। 

-তোরা আলহামদুলিল্লাহ বললি কেন?(আদি)

-মেয়ে তোর পছন্দ হইছে মানে বিয়েও তোর সাথেই হচ্ছে।(রিফাত)

-এই না। 

-কথা ফাইনাল বিয়ে তুই করছিস নাহলে আন্টিকে বলে দিবো তুই এতো রাতে নেশা করছিস।(রিফাত)

-বিয়ে করে নে ভাই, সেই তো আজ না হোক কাল তোকে বিয়ে করতে হবে তাহলে আজ করলে ক্ষতি কি বরং আমরাও বেঁচে যাই।(নাক টেনে কথাটা বললো রাকিব)

-তাহলে আমার বাড়ির ব্যাপারটা তোরা সামলে নিস।(রাকিব)

-সে দায়িত্ব আমি নিলাম।(আবইয়াজ)

 

রাকিব মেয়েটার চোখে মুখে জল ছিটিয়ে দিলো।

পিটপিট করে চোখ মেলে তাকালো মেয়েটি।

অস্ফুটস্বরে মাশাআল্লাহ বলে উঠলো রাকিব।

-এই আপনারা কারা?

মেয়েটির প্রশ্নে মৃদু হাসলো আবইয়াজ। 

-আমরা তোমার ভাইয়া হই, ভয় পেয় না আমরা তোমার কোনো ক্ষতি করবো না।

-আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেনো আমি বাড়ি যাবো।

-একা একা যেতে পারবে?(আদি)

-পাগল নাকি এই রাতে একা একটা মেয়েকে রাস্তায় একা ছেড়ে আসবি কিভাবে?(রিফাত)

-আমার কথা কেউ একটু ভাব ভাই।(রাকিব)

-তোর কথা আর কি ভাববো এই তোর কথা ভাবতে গিয়েই তো আমাদের যত ঝামেলা। (আদি)

-ওকে ফাইন, আমি মেয়েটাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসবো তোদের এতো ঝামেলায় পড়তে হবে না আমার জন্য। বেশ অভিমান নিয়ে কথাগুলো বললো রাকিব।

-আমার তো ওকে পছন্দ হইছে আমি তো বিয়ে করতে রাজি।(আদি)

-রাকিব তুই মেহেকের ফোনে কল কর তো দেখ ফোন বন্ধ কি না।(আবইয়াজ) 

-হুম।

 

রাকিব মেহেকের ফোনে কল করলো। 

রিং হচ্ছে কিন্তু মেহেক ফোন উঠাচ্ছে না।বার কয়েক রিং হবার পর কেউ ফোন উঠালো কিন্তু কথা বলছে না।

 

চলবে,,,,,


Md Elias

51 ブログ 投稿

コメント