ভালো থাকো—এই কথাটা শুনতে যত সহজ, বাস্তবে ততটাই কঠিন। অনেকে ভাবে, কষ্ট বলা সহজ… কিন্তু কাকে বলবো? কেউ তো শোনে না। একসময় খুব আপন যাদের ভাবতাম, তারাই আজ সবচেয়ে দূরের। যখন মনের ভিতর ভাঙনের শব্দ শুনি, তখন হাসতে হয় যেন কিছুই হয়নি। কারণ সবাই বলে, "তুমি তো শক্ত একজন মানুষ!" কিন্তু ভিতরে আমি ধ্বংস।
❞
আমি কখনোও বলবোনা তোমাকে ভালোবাসি হৃদয় ডাকছে তোমার কাছে আসি শুধু আমার চোখের দিকে একবার তাকিয়ে দেখ চোখ কি বলে?
তখনই বুঝবে তুমি কতটা ভালোবাসি তোমায় আমি।
আমি কখনোও বলবোনা তোমাকে ভালোবাসি কাছে এসো একবার তোমায় দেখি।
শুধু কান দিয়ে নিরবে আমার কথা শুনো শ্রুতি কেমন, কন্ঠ কি বলে? তখনই বুঝবে তুমি কতটা ভালোবাসি তোমায় আমি।
আমি কখনোও বলবোনা তোমাকে ভালোবাসি কাছে এসো মন খুলে হাসি।
শুধু আমার হাতে একবার স্পশ করে দেখ কাপছে তোমার হৃদয় খানি আর তখনই বুঝবে তুমি কতটা ভালোবাসি আমায় তুমি।
✨ পর্ব ৫: সাহসী স্বীকারোক্তি
কয়েকদিন ধরে রাহাতের ভেতর অদ্ভুত এক অস্থিরতা। মিমের সঙ্গে যতই সময় কাটছে, ততই তার বুকের ভেতর যেন ঝড় উঠছে। প্রতিদিন মিমের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হয়, আর কত লুকিয়ে রাখা সম্ভব? আজ না হয় সব বলে দেয়া যাক।
সেদিন বিকেলটা ছিল রোদ ঝলমলে। কলেজ শেষে মিমকে মেসেজ পাঠিয়ে জানাল— “আজ তোমায় একটা কথা বলবো। কলেজের পেছনের গাছতলায় আসো।”
মিম জবাব দিল— “ঠিক আছে।”
গাছতলার ছায়ায় দাঁড়িয়ে রাহাত বারবার হাতের আঙুল কচলাচ্ছিল। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম। মনে হাজার রকম ভাবনা— মিম কি রাগ করবে? না, মিমও কি একই অনুভব বয়ে নিয়ে চলছে?
অবশেষে মিম এল। নরম লাল কামিজ, খোলা চুল, চোখে সেই চেনা উজ্জ্বলতা।
— “কী ব্যাপার? এমন সিরিয়াস মুখে ডাকলে কেন?”
মিম বসতে যেতেই রাহাত হাত বাড়িয়ে তাকে থামিয়ে বলল—
— “না… আজ বসে নয়। দাঁড়িয়েই শোনো। আর… কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলবে না।”
মিম একটু অবাক হয়ে তাকাল। রাহাত একগাল নিঃশ্বাস নিয়ে শুরু করল—
— “তুমি আমার জীবনে আসার পর থেকে সব বদলে গেছে। তোমার হাসি দেখলে মন হালকা হয়ে যায়। তুমি কথা না বললে পুরোদিন কেমন ফাঁপা ফাঁপা লাগে। তোমার চোখে তাকালে নিজেকে খুঁজে পাই। আমি জানি না ভালোবাসা আসলে কীভাবে হয়… কিন্তু আমি জানি, আমি তোমায় ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না।”
কথা শেষ করে সে মিমের দিকে তাকাল। গলার স্বর কেঁপে উঠল—
— “তোমায়… ভালোবাসি মিম। খুব ভালোবাসি।”
কয়েক সেকেন্ড যেন পুরো পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে গেল। বাতাসও থমকে। মিম মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। রাহাত ভাবল হয়তো মিম কষ্ট পেয়েছে। হয়তো বন্ধুত্বটাও আজ ভেঙে যাবে।
কিন্তু হঠাৎ মিম তার চোখ তুলে তাকাল। চোখে জল। ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি।
সে আস্তে করে বলল—
— “তুমি জানো… সেই প্রথমদিন তোমার করিডোরে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে আমারও মনে হয়েছিল, এই ছেলেটার সঙ্গে গল্পটা অন্যরকম হবে। আমি জানতাম না, কীভাবে বলবো… কিন্তু এখন যখন বললে… আমি আর লুকাবো না।”
এক ধাপ এগিয়ে এসে মিম আলতো করে রাহাতের হাতটা ধরে বলল—
— “তোমাকেও ভালোবাসি। অনেক।”
রাহাত অবাক হয়ে মিমের হাতের উষ্ণতা টের পেল। তার চোখ ভিজে উঠল। বুকের ভেতর যে ঝড় ছিল, তা যেন থেমে গিয়ে মধুর স্রোত হয়ে বয়ে গেল।
সেদিনের শেষ রোদে দাঁড়িয়ে দুজন একে অপরকে দেখছিল। চারপাশের পৃথিবী মুছে গিয়ে যেন শুধু দুজনেই ছিল।
এক সাহসী স্বীকারোক্তি তাদের বন্ধুত্বের বাঁধন ছিঁড়ে এক অটুট ভালোবাসায় গেঁথে দিল।
✍️ পর্ব ১: প্রথম দেখা
কলেজ ক্যাম্পাসের আকাশটা সেদিন নীল ছিল বটে, তবে মেঘেরও লুকোচুরি চলছিল। বসন্তের বিকেল। রাহাত ঠিক বুঝতে পারছিল না— কেন যেন আজকের অনুষ্ঠান তাকে এত টানছে। শার্টের বোতাম ঠিক করে আয়নায় একবার তাকিয়ে আবার বেরিয়ে পড়ল সে।
কলেজে আজ বসন্ত উৎসব। মাঠের মাঝখানে মঞ্চ, চারপাশে রঙিন বেলুন আর ফুলে সাজানো। বিভিন্ন বিভাগ থেকে ছেলেমেয়েরা নানা ধরনের গান, কবিতা, নাচ পরিবেশন করছে। দর্শকসারিতে বসে রাহাত মুগ্ধ হয়ে দেখছিল একের পর এক অনুষ্ঠান। হঠাৎ সঞ্চালক ঘোষণা করল— “এবার মঞ্চে আসছেন ইংরেজি বিভাগের মিম আক্তার, একটি রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করবেন।”
মিম মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে যেন হাওয়া বদলে গেল। মিমের পরনে হলুদ-সাদা শাড়ি, কপালে টিপ, চোখে লাজুক কিন্তু দৃঢ় চাহনি। মাইক হাতে নিয়ে যখন সে গান শুরু করল— “আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে…” তখন রাহাত যেন স্থির হয়ে গেল। এত সুমধুর কণ্ঠ সে আগে শোনেনি। গান শেষ হলে চারদিক থেকে করতালি উঠল। মিম মুচকি হেসে সবাইকে অভিবাদন জানাল।
রাহাতও হাততালি দিতে দিতে লক্ষ্য করল মিমের দিকেই তার চোখ আটকে গেছে। মিম মঞ্চ থেকে নামার সময় রাহাত আরেকবার দেখল— মিমের সেই হাসি যেন তার বুকের ভেতর এক অদ্ভুত কাঁপন তুলে দিল।
সেদিন অনুষ্ঠান শেষে বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে মিমের আরেক ঝলক পাওয়ার আশায় রাহাত মাঠের চারপাশে ঘুরছিল। হঠাৎ করিডোরের কোণে মিমকেও দেখল সে। মিম বন্ধুর সাথে হাসতে হাসতে যাচ্ছিল। রাহাত চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। মিম হঠাৎ তার দিকে তাকিয়ে এক মুহূর্তের জন্য থেমে গেল। চোখাচোখি হলো। মিম লাজুকভাবে আবার মুখ ফিরিয়ে নিল।
রাহাতের মুখে অজান্তেই হাসি ফুটল। ভেতরে ভেতরে সে বুঝে গেল— আজ কিছু একটা শুরু হলো। হয়তো এটাই সেই শুরু, যার জন্য এতদিন অপেক্ষা করছিল।
সেদিন রাতে ঘুমাতে গিয়ে রাহাত অনেকক্ষণ ছটফট করল। মিমের হাসি, চোখ, কণ্ঠস্বর বারবার তার মনে ভেসে উঠল। একবার মনে হলো— “কীভাবে কথা বলবো? ও কি কথা বলবে?” আবার মনে হলো— “না, এমনিই থাকুক। ধীরে ধীরে।”
সেই রাতেই সে স্থির করল— মিমকে আর এভাবে দূর থেকে দেখে যাওয়া নয়। তাকে জানতেই হবে।
বিকেলের বসন্ত হাওয়ায় জন্ম নিল এক নতুন প্রেমের গল্প। মিম হয়তো জানত না, সে আজ কারো হৃদয়ে বসন্ত এনে দিয়েছে।
কি? পর্ব ২ (বন্ধুত্বের শুরু) লিখে দেব? বলো! 🌸
Fariya:হ্যা🙂 আর সেই গল্প কারো নাহ শুনাই ভালো.. শুনলে কেউ হয়ত মজা নিব নয়ত কোনে একদিন সে গল্প থেকে আপনাকে বড় বড় কথা বলবো
Sajib BARMON:তোমাকে ভুলে যেতে পারলে আর কাউকে কখনো ভালোবাসি বলবো না😅❤️🩹
@🦋⁂༄𝓢ǻ𝑘ℹ𝑏༄⁂🦋:সাল'টা হবে (২০৬৫) বারান্দায় চেয়ারে চা খেতে খেতে হটাৎ তার কথা মনে পড়ে যাবে|
যৌবন কালের একটা'ই বড় আপসোস বৃদ্ধকালে ও কাটেনি| হাতটা বুকের ডান দিকে রেখে কাঁদতে কাঁদতে বলবো| ছিলো এক রূপবতী গুনবতী মায়াবতী| সে (২০২১)সালের আমার চোখে দেখা জেনারেশনের শ্রেষ্ঠ নারী| যাকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবেসে ছিলাম| কিন্তু আপসোস সেই নারী আর আমার হয়'নি.!❤️🩹
এই নাও।(জেনিয়া)
-কি এটা (তামীম)
-অামার বিয়ের কার্ড (জেনিয়া)
-ও,ভালো (স্বাভাবিক ভাবে) বললো তামীম।
-ভালো মানে, অামার বিয়ের কার্ড দেখে তোমার কষ্ট লাগছেনা? (জেনিয়া)
-না,তোমার বিয়ের খবরে অামি অারো খুশি হয়েছি। এখানে কষ্টেও পাওয়ার কি অাছে। (তামীম)
-সত্যিই তোমার কষ্ট হচ্ছেনা? (জেনিয়া)
-সত্যিই হচ্ছে না।অাবারো স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলো তামীম।
তামীমের মুখে স্বাভাবিক ভাবে উত্তর শুনে মনটা খারাপ করে চলেগেলো জেনিয়া। তামীমের কাছ থেকে এমনটা অাশা করেনি জেনিয়া।। জেনিয়া ভেবে ছিলো জেনিয়ার হাতে বিয়ের কার্ড দেখে তামীম তাকে বিনয়ের সুরে বলবে। কি বলছো এইসব। অামাদের এতদিনের সম্পর্কের কি হবে। কিন্তু না তামীম এইসব কিছুই বললো না।।তাতে খুব কষ্ট পেয়েছে জেনিয়া।অন্যদিকে তামীমের কোন কাজে মন বসছে না কিছুদিন যাবৎ ।।ঠিকমত পড়তে পারেনা, ঠিকমত টিউশনিতেও যেতে পারেনা।অাজ এক ছাত্রীর মা ফোন করেরে বলেছে ঠিকমত না গেলে অন্য টিচার নিয়ে নিবে।।
কি করবে বুঝতে পারছিনা। হঠাৎ করে জেনিয়া এমন কথা বলবে এটা তামীম কখনোই কল্পনা করতে পারেনি।।তাদের এতদিনের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবে।। বিয়েতে রাজি হওয়ার অাগে এতটুকুও ভাবলো না জেনিয়া।।
কেনো ভাবলোনা অামি তো অাগে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেইনি।। সেই তো দিয়েছে।। কি দরকার ছিলো এত অভিনয়ের।। ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চটাই বসতাম।। সবসময় উসকো খুসকো ভাবে থাকতাম।। কি দরকার ছিলো এত ভালোবাসার অামাকে।। তাহলে অাজ ভালোবেসে কেনো চলে যাচ্ছে।।
তাকে থামানোর মত ক্ষমতা অামার নেই।। গরীব কৃষক বাবার সন্তান অামি।।অার জেনিয়া বড় লোক বাবার একমাত্র মেয়ে।। এদিকে অামার দিকে চেয়ে অাছে অামার পুরো ফ্যামিলি।। না অামাকে অার এভাবে বসে থাকলে চলবেনা।।তাহলে অামার ফ্যামিলির কি হবে।। না অাজ থেকেই অাবার সবকাজে মন দিবো।। মন থেকে জেনিয়ার স্মৃতি সব বাদ দিবো।। এখন নিজের ফ্যামিলির চিন্তা ছাড়া অার কিছুই মাথায় রাখবোনা।।এই মামুন তামীমের কোন খুজ জানো। না তো জেনিয়া। তার সাথে অামার কোন যোগাযোগ নেই।। প্লিজ মামুন বলোনা তামীম কোথায় অাছে।। তার সাথে অামার প্রায় একমাস যাবৎ কোন যোগাযোগ নেই, প্লিজ বলো অামি তোমার পায়ে ধরছি।। তামীমের সাথে একটু কথা বলিয়ে দাও।।ওকে এই নাও এটা তামীমের নতুন নাম্বার 01756**** বাট অামার কথা বলিও না।।অাচ্ছা ঠিক অাছে বলবোনা। ধন্যবাদ তোমাকে।।ক্রিং ক্রিং
হ্যালো অাসসালামু অালাইকুম।
-ঐ পাশে নীরব।। হ্যালো কে বলছেন।। কি অাশ্চয্য কথা বলছেন না কেনো।।এই কুত্তা বান্দর বিলাই হনুমান কোথায় তুমি।। কত জায়গাতে তোমায় খুজেছি কোথাও পাইনি ।। ঐ দিনের পর থেকে প্রতিটা মুহূর্ত তোমাকে খুজে বেরিয়েছি।।
জেনিয়া তামীম কে কেঁদে কেঁদে বলছে।।
-এই
কাঁন্না থামিয়ে যা বলার বলেন,,, অামার হাতে সময় নেই।।
তোমার হাতে সময় হতে হবেনা।। লাস্ট একটু সময় দাও অাজ।।
অামি পারবোনা।। পারতে হবে।অামি পারবোনা।। তোমার জন্য অামি বিকেল তিনটাই পার্কে অপেক্ষা করবো।। তোমাকে অাসতে হবে, এখন বাই।।অামি জানি যতক্ষণ অামি না যাবো ততক্ষণ সে পার্কেই বসে থাকবে।। তাই অামাকে যেতে হবে।।বিকেল তিনটা পার্কের এক কোনে জেনিয়া বসে অাছে। কাছে গিয়ে জিঙ্গাসা করলাম,
কিসের জন্য অাসতে বলছেন এখানে।। কথাটা বলতেই ঠাস করে একটা শব্দ হলো।। হ্যা জেনিয়া একটা চড় মেরেছে গালে।।
চড়টা মেরে অামার বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে ফেললো।। তারপর অামাকে রিক্সায় নিয়ে সোজা কাজী অফিসের সামনে।।
সেখানে গিয়ে দেখি অামার বন্ধুরা সবাই।। সাথে জেনিয়ার বাবাও অাছে।। অামি কিছুই বুঝিবার অাগে সবকিছু ওরাই অামাকে বুঝিয়ে দিলো।। অামার অার জেনিয়ার বিয়ে দিয়ে।পাঁচ বছর পর এই কেরে সকাল বেলা অামার ঘুমের মধ্যে পানি ঢেলে দিলো।। কেরে, অামি অাপনার একমাত্র বউ জেনিয়া।। সকাল নয়টা বাজে তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো,এদিকে তানজীমের স্কুলের সময় চলে যাচ্ছে।। অার তোমাকে অফিস যেতে হবেনা।।অাজ না তোমার অফিসের কাজে বাবা তোমাকে কোথায় পাঠাবে।।
-তানজীম রেডি হয়েছে।। হ্যা হয়েছে।।
অার শোন তুমি অামার একমাত্র বউ না দুই মাত্র বউ।।কারণ অাজকে অামি অামার অারেক বউকে স্বপ্ন দেখতে ছিলাম।। দিলাতো অামার স্বপ্নের বারোটা বাজিয়ে।।
কি অামাকে রেখে অন্য মেয়েকে স্বপ্ন দেখা।। যাও অাজ থেকে অার তোমার সাথে কোন কথা নেই।।
এই জানটুসি রাগ করো কেনো।। ঐটা কে শুনবেনা।। ঐটা হলো অামার তানজিমের অাম্মু।। তাকে সেই নতুন বিয়ের অবস্থায় দেখছিলাম।।।উফ ঐ কি সুন্দর লাগছিলো।।
ও বুঝছি অার বলতে হবেনা।।
ঐ জানটুসি একটা দাও না।।কি, ঐযে ঐটা।।
অামি পারবোনা।। অাগে অফিসের জন্য রেডি হও পরে।। ওকে ম্যাডাম তাই হবে।।
এটাই হলো অামি অার অামার পরিবার।। খুব সুখেই অাছি।।। # #
গল্পঃ #নারীর_সতিত্ব
দ্বিতীয় বা শেষ পর্ব।
রিয়া সামনে তাকাতেই অবাক হয়ে গেল।কারণ তাদের তিন জনের মধ্যে একজন ছিল রিয়াদ।
রিয়াদও রিয়াকে ডাক্তারে
।।..তুমি এখানে?
।।.. হ্যাঁ।তবে পার্সোনাল ব্যাপারগুলা ছাড়া অন্য কোনো কাজে আসলে বসতে পারেন।অন্যথায় চলে যান।
রিয়াদ চেয়ারে বসে ইশারা দেখিয়ে বললো..
।।..এটা আমার বোন আর এটা আমার দুলাভাই। কালকেই তাদের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু..
।।.. কিন্তু কি বলুন?
।।..বাসর রাতে সহবাসের পর রক্তপাত না হওয়ায় এখন দুলাভাই আমার বোনের সতীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বাসায় এখনো কেউ এ ব্যাপারে কিছুই জানে না।এখন আমার বোনের মান সম্মান আপনার হাতে।আপনিই বলুন সত্যটা কি?
রিয়া রিয়াদের মুখের দিকে চেয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে তার দুলাভাই কে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো:
।।..আমাদের দেশের মানুষের একটা ভুল ধারণা আছে।শুধু আমাদের দেশের বললে ভুল হবে আশেপাশের আরো অনেক দেশের মানুষের মাঝে এই কুসংস্কার প্রচলিত আছে যে মেয়েদের সতী পর্দা(hymen) থেকে আর যা প্রথম সহবাসের সময় ছিঁড়ে বা ফেটে গিয়ে রক্ত পাত হয়।যা সম্পূর্ণই একটা ভুল ধারণা।
অনেকের মনে এই বদ্ধমূল ধারণা আছে যে নারী যদি কুমারী হয় তবে বাসর রাতে সহবাসে সময় চাদরে রক্তের দাগ অবশ্যই লাগবেই লাগবে।
এ বিষয়ে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে এটাই বলবে যে সহবাসের সময় সতীচ্ছদ পর্দা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তপাত হয়।
কিন্তু আপনি কি আসলেই জানেন সতীচ্ছদ পর্দা আসলে কি?
বিখ্যাত গাইনোকলিজ থাইলেস এর মতে,
সতীচ্ছদ ছিঁড়ে না কারণ এটা কোন পর্দা নয় যেটা যোনিকে ঢেকে রাখে।
এটা যদি সম্পূর্ণ বদ্ধই হতো তবে কিভাবে মেয়েদের মাসিক হত?তবে হ্যাঁ কিছু কিছু মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা বদ্ধ থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের সামান্য একটা অপারেশন করিয়ে নিতে হয়।
প্রথম বার সহবাসের ক্ষেত্রে সতীচ্ছদ পর্দা ছিঁড়ে যাওয়া অসম্ভব,ভুলে যাও যা শুনেছো।
হাইমেনের কারণে কেউ তোমার কুমারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে না।
এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে তাহলে অধিকাংশ নারীর প্রথম সহবাসের পর রক্তপাত কোনো হয়?
বাস্তবে রক্তপাত তখনই ঘটে যখন যৌনমিলন সঠিকভাবে না হয়। অর্থাৎ আপনি আপনার স্ত্রীকে আঘাতের ফলে এমনটা হয়।
আমাদের পার্শ্বব্তী দেশ ভারতে রীতিমত বিয়ের আগে গোপনে হাইমেন রিকগনেশন সার্জারী শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ মুসলিম রক্ষণশীল পরিবারের নারীরা এমনটা করিয়ে থাকেন।বাস্তবে যেখানে এটা ছিঁড়েই না তাহলে পর্দা শিলায় বা করে কিভাবে?
দেশের হাজার হাজার মেয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা এই সার্জারীর পিছনে খরচ করতেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রীতিমত এটা মানবাধিকার লংঘন বলে দাবিও উঠেছে।
একটা কথা অবশ্যই মনে রাখবেন।এটা কখনো নারীর সতীত্ব প্রমাণের মাধ্যম হতে পারে না,এটা নির্যাতনের মাধ্যম, জুলুমের মাধ্যম।
কথাগুলো শুনে রিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে সবাই খুশি মনে বেরিয়ে গেল। হঠাৎ রিয়াদ ফিরে এসে বলে..
।।.. আমাকে মাফ করে দিও।আমি সত্যটা না জেনেই তোমার সাথে অন্যায় করেছিলাম।আজ চাইলেও আর তোমায় ফিরিয়ে নিতে পারবো না।কারণ তোমাকে ডিভোর্স দেয়ার কিছুদিন পরই আরেকটা বিয়ে করেছি।এখন আমার দুইটা সন্তানও আছে।
রিয়া রিয়াদের কথা শুনে হাসতে হাসতে বলে..
।।..তোমার সাথে যদি সংসারটা টিকিয়েই রাখতেই চাইতাম তাহলে সেদিনই এ কথা গুলো বলতাম।সত্য বলতে আমি কখনোই চাইনি এমন নিচ মানসিকতার মানুষের সাথে সংসার করতে।
কথাটা শুনে রিয়াদ মাথা নিচু করে বেরিয়ে যায়।আর রিয়া অবিরাম হাসতেই থাকে।
আরও কয়েক দিন কেটে যায়।একদিন সকালে রিয়া কফি খেতে খেতে খবরের কাগজ পড়ছিল। হঠাৎ একটা পাতায় চোখ আটকে যায়। কাগজে রিয়াদের ছবি।হেড লাইনে বড় বড় অক্ষরে লেখা..
“দুই সন্তানের বাবা হওয়া সত্বেও পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা পড়লো এই শহরের অন্যতম বিজনেসম্যান রিয়াদ চৌধুরী”
রিয়া কাগজটা ছুঁড়ে ফেলে মনে মনে ভাবতে লাগলো..
আসলেই যে অন্যর সাথে যেমনটা করে তার সাথেও ঠিক তেমনটিই হয়, যে বাস্তবে যেমন সে অন্যকে তেমনই ভাবে......
সমাপ্ত।
নতুন নতুন লাভ রোমান্টিক ফানি গল্প পেতে নীলেখায় চাপ দিয়ে ফলো করুন 👇👉 Ã Ź À Đ
বর্তমান আধুনিক যুগে এসেও এই একটা কুসংসার এর কারণে আজও হাজার হাজার নারীর সতীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।গল্পটার মাধ্যমে চেষ্টা করেছি সত্যটা সবার সামনে তুলে ধরার।কতটা পেরেছি জানি না।তবে সবশেষে একটা কথায় বলবো যে,আসুন মেয়েদের সতীত্ব প্রমাণ নিয়ে এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসি এবং অন্যকেও সাহায্য করি।
ধন্যবাদ..❣️---- মেয়ে আমার পছন্দ হয়েছে "
কন্ঠ টা খুব চেনা লাগছে, মাথা তুলে তাকিয়ে মেঘ অবাক হয়ে যায়। কাব্য! যাকে ৩বছর আগে ছেড়ে এসেছে। যে তাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবেসেছিল কিন্তু এই সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যৎ নেই বলে কাব্য কে ছেড়ে আসে মেঘ! আজ কাব্য তার সামনে বিয়ের পাত্র হয়ে বসে আছে। কাব্য এক ভাবে তাকিয়ে আছে, কিন্তু কাব্য এই অবস্থানে এলো কিভাবে? খুব দরিদ্র পরিবার থেকে এই অবস্থায়....
মেঘ এক ভাবে তাকিয়ে আছে কাব্য
আজ অফিসের প্রথম দিন।অনেক কষ্টের পরে চাকরিটা হল।তবে অনেকটা ভাগ্যের সহায়তা ও পেয়েছি।সকাল ৯ টা থেকে অফিস শুরু।রেডি হয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
-কিছু ফেলে যাচ্ছ না তো?
-ওপস। ফোন টাই তো ফেলে যাচ্ছি।
-থ্যাংকস।মনে করিয়ে দেবার জন্য।
.প্রথম দিন তাই নির্দিষ্ট সময়ের একটু আগেই এলাম অফিসে।শুনেছি আমাদের অফিেসর এমডি হলো মহিলা।উনার সাথে একবার দেখা করা দরকার......
-মে আই কাম ইন ম্যাম?
-ইয়েস।
-তু-তু-তুমি। মানে আপনি?
-হ্যা আমিই।সারপ্রাইজট
া কেমন দিলাম?তুমি অবশ্যই আমাকে এখানে আশা কর নি তাই না?
-আসলে কি বলবো বুঝতে পারছি না।
-বলেছিলাম না পৃথিবীটা গোল।ভাগ্যটা কেমন দেখেছো আমরা যা না আশা করি আমাদের সাথে সেটাই হয়।
-তার মানে তুমি আগে থেকেই জানতে সব কিছু।
-অবশ্যই।তোমাকে এত সহযে হারাতে দেই কি করে বল।
-কিন্তু আমি এখানে সেটা তুমি জানলে কি ভাবে।
-তুমি তো বলেছিলে কয়েক মাস পর আমাদের দেখা না হলে আমি তোমাকে ভুলে যাবো।দেখ কয়েক মাস না কয়েক বছর হয়ে গেছে। কিন্তু আমি তো তোমাকে ভুলিনি।তুমি যত দূরেই থাক না কেন আমার দৃষ্টি থেকে কখনই দূরে যেতে পারনি।কখনও কি ভেবেছো তোমার প্রতি জন্মদিনে দেওয়া তোমার ছবি,ওই কাচের গোলাপ ফুল,সাগরপাড়ের মুক্তোর মালা, প্রতি জন্মদিনে তোমাকে ফোন করে আই লাভ ইউ বলা , এক্সিডেন্ট করার পর হাসপাতালে নেওয়া, তোমার হারিয়ে যাওয়া ফোন ফিরে পাওয়া, কিভাবে হয়েছে এত সব।
এখনও তোমার মনে হয় এগুলো আমার আবেগ?
-কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলেও বলতে নেই।
-তোমার মধ্যে দেখছি দার্শনিক ভাবটা এখনও যায়নি।
-সব কিছু তো আর পরিবর্তন করা যায়না।
-চলো সবার সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেই।
-ওকে চল।এতক্ষন যার সাথে কথা বলছিলাম ও নিশা।বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি কখন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।আর ও তখন প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
একদিন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।একটা মেয়ে দৌড়ে আমাদের দিকে আসলো তারপর
-আপনি নিশো তাই না?
-হ্যা,।কিন্তু আপনি কে?
-আমি নিশা। আমি আপনার জুনিয়র।প্রথম বর্ষে পড়ি।কাল প্রোগ্রামে আপনার গান শুনেছি।অনেক ভাল গান আপনি।
-তা আমার কাছে কি মনে করে?
-আই লাভ ইউ।
-কি??????
-আই লাভ ইউ বলেছি।শুনেতি পান নি?
-তোমার মাথা ঠিক আছে তো।
-হ্যা।।আছে।ওকে এখন আসি পরেএক সময় উত্তর জেনে নেব।বাই নিশা অনেক সুন্দরি।এক কথায় চোখে ভয়ংকর সুন্দরি।তার উপর বড়োলোক বাবার একমাত্র মেয়ে।মেধাবি ছাত্রী।কিন্তু অন্য কাউকে ভালবাসতাম।
ও এমন করে বার বার আমাকে ওর ভালবাসার কথা বলতে।
-তোমাকে কত বার বলবো আমি অন্য কাউকে ভালবাসি।আর এটা তোমার আবেগ।কয়েকমাস পর তোমার এই আবেগ আর থাকবে না।তুমি আর কখনও আমার সামনে আসবে না।
-ওকে আসবো না।পৃথিবীটা গোল।সো একদিন তুমি নিজেই আমার সামনে আসবে।মাইন্ড ইট।
সত্যই পৃথিবীটা গোল।সো তুমি যাকে এক্সেপেক্ট করো একদিন তার সাথে তোমার দেখা হবেই।আজ নিশা সেটা প্রমান করলো।আজ সারাদিন আমি কেমন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম।সব কিছু কেমন স্বপ্ন মনে হচ্ছে।
অফিস শেষে নিশা আমার ডেক্সের সামনে আসলো
-বাসায় যাবে না?
-হ্যা যাবো।
-চল তোমাকে নামিয়ে দিবো।
-অন্য দিন যাবো।ওকে।রিক্সায় করে বাসায় আসছি।তুমি আবার কিছু একটা ভুলে যাচ্ছো।হুম মনে পড়েছে।দুইটা গোলাপ নিতে হবে।
থ্যাকস এগেইন।চারিদিকে শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে।সন্ধ্যা নামতেই কুয়াশার আবির্ভাব।পরিবেশটা খারাপ না।তবে একটু শীতে কাপুনি লাগছে মাঝে মাঝে।
-এখন আসার সময় হলো তোমার?আমি এই শীতের মধ্যে সেই কখন থেকে বসে আছি।
-না আসলেই তো পারো এই শীতের মধ্যে
-হুম ঠিক।তাহলে তুমি আসছো কেন এই শীতের মধ্যে?
-কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে নেই
-কেন-কারন তুমি এই প্রশ্নের উত্তর জানো।
-কিন্তু তোমার মুখ থেকে শুনতে যে বড় ইচ্ছে হয়।
-সব ইচ্ছা তো আর পূরন হবার না।
- সাধ্যের মধ্যে থাকলে অবশ্য সম্ভব।
-শুধু সাধ্যের মধ্যেই থাকলেই তো হয় না।যদি তাই হতো তাহলে আজ আমাদের মধ্যে কি এত দূরত্ব কি থাকত?
-তা ঠিক।কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমারা শুধু দর্শকের ভূমিকায় থাকি।আসল খিলাডি তো ওই যে উপরে যিনি আছেন তিনি।
- তিনি ভাল কিছুর জন্যই এসব করেছেন।
আফিস কেমন কাটলো আজ।
-অনেকটা স্বপ্নের মত।নিশার সাথে দেখা হল আজ।
-মেয়েটা অনেক ভালবাসে তোমাকে।তোমার তাকে গ্রহন করা উচিত।আমার হৃদয় আগেই থেকেই তুমি আছো।
-কিন্তু এখন তো আমি নেই।আমার কোন অস্তিত্ব নেই এই পৃথিবীতে।কারো কাছে না থাকতে পারে কিন্তু আমার কাছে আছে।যদি সেটাও না থাকে তবে কি করবে?
-থাকবে। কেন থাকবে না? আমার অস্তিত্বের মাঝেই যে তুমি বিদ্যমান।-কত দিন থাকবে এভাবে?
-জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।আমার যাবার সময় হয়ে গেছে।
-চাইলেও তো আটকাতে পারবোনা।
-ভাল থেকো।বিদায়।সামিহা আমকে ছেড়ে গেছে আজ দুই বছর পূর্ন হল।প্রতি মৃত্যুবার্ষিকিতে আমি ওর কবরে আসি।কিন্তু আমি সবসময় আমার পাশে ওকে অনুভব করি।মনে হয় যেন আমার ঠিক পাশেই ও পা মিলিয়ে হাটছে।
# #
এইটা কি রঙের শার্ট পড়ছো ?
– সাদা ! নতুন কিনছি কালকে । দারুন না ?
– এইটা একটা কালার হইলো ? কি বিচ্ছিরি । স্কুল ড্রেস স্কুল ড্রেস লাগতেসে । আমি তোমাকে কি রঙের শার্ট পড়তে বলছিলাম ?
– নীল ।
– তাইলে তুমি পড়নাই ক্যান ? আমার কথা আর শুনতে ইচ্ছা করেনা ?
– তা কেন হবে ? আসলে আমার নীল রঙের শার্ট নাই তাই পড়িনাই । আর তাছাড়া ভাবলাম তুমি আজ নীল রঙের শার্ট পড়তে বলছো , কালকে বলবা হলুদ রঙের শার্ট পড়তে । তাই ভাবলাম সাদা রঙের শার্ট কিনে ফেলি । একেবারে সাতটা রঙেরই ফ্লেভার পাবো ।
– তুমি থাকো তোমার ফ্লেভার নিয়ে আমি চললাম ।
– চলে যাবা ? আচ্ছা যাও । রাতে কথা হবে কিন্তু ।
– উফ । বলে আর বসে থাকতে পারলোনা অরিন । প্রচন্ড রাগ লাগতেসে তার । সজীবটা এমন কেন ? এত্ত কেয়ারলেস একটা মানুষ কিকরে হতে পারে ? আজ কত্ত প্ল্যান নিয়ে এসচিলো অরিন । একসাথে রিক্সায় ঘুরবে , ফুচকা খাবে , একটা আইসক্রিম দুজনে ভাগাভাগি করে খাবে । ছোটো ছোটো কত আশা নিয়ে এসেছিল সে । অথচ এখন রাগে চোখমুখ লাল করে বাসায় ফিরতে হচ্ছে । আজ রাতে জীবনেও ফোন দেবেনা সে সজীবকে । ফোনটা সুইচড অফ করে ফেলে অরিন ।
সজীব অনেক্ষন চুপচাপ বসে থাকে পার্কেই । সে ঠিকই বুঝতে পারে অরিন রেগে গেছে । তবে সজীব এটাও জানে যে ভালোবাসার মানুষটির সব আশা কখনই পূরন করতে নেই । কারন এখন সে সব আশা হয়তো পূরন করতে পারে কিন্তু সারাজীবন কি পারবে ? পারবে না । তখন ভালোবাসার মানুষটি ভেবে বসবে ভালোবাসা বুঝি কম হয়ে গেসে । ভালোবাসার মাত্রা নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন ওঠার চেয়ে এইটাই ভালো যে সেই মানুষটা বরং বুঝুক সজীব তাকে এমন করেই ভালোবাসে ।
রাত তিনটার দিকে ফোনটা অন করে অরিন । বেকুবটা হয়তো এতোক্ষনে ঘুমিয়েও গেসে । বেকুবটা হয়তো জানেই না যে তার অরিন রাগ করেছিলো । তবুও বেকুবটাকে ভালোবাসে অরিন । জান প্রান উজার করা ভালোবাসা ।
ফোন অন করার কিছুক্ষনের মাঝেই স্ক্রিনে একটা মেসেজ ভেসে উঠে কি কর ? ভাবলাম তোমার কথা এরপর থেকে মানবো । তাই সাদা শার্টটাকে নীল জল দিয়ে চুবিয়ে মারতেসি । যতক্ষন না ব্যাটা নীলের কাছে পরাজিত হয় আমি জেগে আছি । রাগ কমলে sms দিও ।ফিক করে হেসে ফেলে অরিন । বেকুবটা তাহলে কেয়ারও করতে জানে । মুখটায় একটা প্রানখোলা হাসি ধরে রেখেই রিপ্লাই করে অরিন এরপর তো তোমাকে হলুদ শার্ট পড়তে বলবো । নীল দিয়ে কি হবে ?অরিন জানে হয়তো বেকুবটা ঘুমিয়ে গেসে , হয়তো রিপ্লাই আসবে না তবুও সে রাগ করবে না । রাগ করে কি লাভ ? আবার যখন ভালোইবাসতে হবে ।
# #
রাত্রি খিদেয় ছটফট করছে। একেবারে রাক্ষুসে খিদে। অথচ রাতে পেটভরে খেলো, দুইমাস ধরে সব লজ্জার মাথা খেয়ে প্লেটভরে ভাত নিয়ে খাচ্ছে সে। বিয়ের প্রথম প্রথম, কয় মাস লজ্জায় খুব অল্প খেতো,কিন্তু তবুও তখন তেমন করে খিদে লাগতো না। কিন্তু আজ চারঘণ্টাও হয়নি,ভীষণ খিদে পেয়ে গেলো । ছয়মাস হলো তাদের বিয়ের। দশটায় খেয়েছে তারা। কাজ সেরে কিছুক্ষণ টিভি দেখে, সাড়ে এগারোটায় শুতে এলো। বারোটা বাজতেই শাহেদের নাক ডাকা শুরু। রাত্রির কোনোভাবেই ঘুম আসছেনা। প্রথমত, শাহেদের নাক ডাকা। ঘুমে কিছুতেই মনোনিবেশ করতে পারছেনা সে। তারপর, রাত একটা হতেই পেটের ভেতর খিদে জানান দিচ্ছে। মাত্র চারমাসে পড়েছে,পেটের বাচ্চাটার। এখনই এমন খিদেয় অস্থির হচ্ছে সে,বাকি আরো পাঁচমাসের বেশি সময়,সে কিভাবে কাটাবে !
অবশ্য প্রতিদিন ঘুম না আসলে সে ফ্রুটস কিছু খেয়ে নেয়। শ্বাশুড়ি নিয়ম করে,তার আর শাহেদের জন্য হাতে দিয়ে দেন। শাহেদ প্রায়ই খায়না,রাত্রি খেয়ে নেয়,আর খিদেও লাগেনা তার। কিন্তু আজ তিনি সম্ভবত ভুলে গিয়েছেন,রাত্রিরও চেয়ে আনতে লজ্জা লেগেছে। এদিকে, শাহেদকেও ডেকে তার কাঁচা ঘুম ভাঙাতে ইচ্ছে করছেনা। কি সুন্দর মুখ হা করে বাচ্চাদের মতো ঘুমুচ্ছে সে!মৃদু মৃদু নাকও ডাকছে। শাহেদ প্রতিবার দুপুরে ঘুমালে, উঠে জানতে চায়,
-এ্যাই রাত্রি, এখন কি আমি ঘুমে নাক ডেকেছিলাম?
-হ্যাঁ।
-তাহলে ঠিক আছে,ফ্রেশ ঘুম দিয়েছি। এখন বাকি দিন ঝরঝরা লাগবে।
-নাক ডাকা মানে ফ্রেশ ঘুম!? আমি তো শুনেছি অন্যকিছু…
-অন্যকিছু কি?
-শোয়ার সমস্যা, বেশি শারীরিক ওজন,শ্বাসের সমস্যা, সিগারেট ,আরো কতো কি!
-ধুর,আমার এসব কোনো সমস্যা নেই। আমার কাছে নাক ডেকে ঘুম হলো,আরামের নিশ্চিন্ত, ফ্রেশ একটি ঘুম,বুঝলে?
-হুম,বুঝলাম।
রাত্রি এপাশ ওপাশ করে,না,ঘুম আসছেনা।তবে খিদের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে বমি আসবে মনে হচ্ছে।
সে দৌড়ে বাথরুমে যায়। তার আসা যাওয়া কুটুর কাটুর শব্দে শাহেদের আরামের ফ্রেশ নাক ডাকা ঘুম ভেঙে যায়।
-কি হলো?ঘুম চোখে জানতে চায় সে।
-বাথরুম গিয়েছি।
-আচ্ছা, এবার ঘুমাও।
-ঘুম আসছেনা।
-আবার কি হলো!
-খিদে লেগেছে,খিদের ছুটে বমি আসছে।
-কি বলো!? আগে বলবেনা!!
কিছু খাওনি কেনো?
-কি খাবো, রুমে কিছু নাই। ফ্রুটের ঝুড়ি মায়ের রুমে,আজ দিতে ভুলে গেছেন মনে হয়।
-নিয়ে আসো এখন।
-লজ্জা লাগে।
-আচ্ছা, আমি নিয়ে আসছি,তুমি বসো।
-না ফ্রুটস খেতে মন চায়না। মিষ্টি কিছু খেলে বমি আরো বেশি আসবে মনে হচ্ছে।
-কি খাবে?
-ঝাল কিছু।
-আছে কিছু ঘরে?
-না।তাহলে আসো রান্নাঘরে যায়।
-এখন!?তাতে কি..মায়ের ঘুম ভাঙলে?বলবো, তার পুত্রধনের খিদে পেয়েছে,তাই অসুস্থ পুত্রবধূকে দিয়ে খানা বানাচ্ছে,হাহা..
-হুম, বলো।-আচ্ছা আসো।-আচ্ছা চলো,খিদেয় আর থাকা যাচ্ছেনা।শাহেদ ফ্রিজ থেকে ডিম,কাঁচামরিচ, ধনেপাতা বের করে,পেঁয়াজ সহ কুটে ডিম ভেঙে মিক্সড করে।
-মরিচ একটু বেশি করে দিও,রাত্রি বলে।
-দুইটা দিলামতো।না,আরো দুইটি দাও,খুব ঝাল খেতে মন চায়।আচ্ছা,দিচ্ছি।রাত্রি কড়াইয়ে তেল গরম করতে দেয়, আর শাহেদ মিক্সডটা ডেলে ঢাকনা দেয়।রান্না হয়ে গেলে,দুই পিস পাউরুটি দিয়ে রাত্রি আরাম করে ডিমভাজা খায়।
-তুমিও একপিস খাও শাহেদ,অনেক মজা হয়েছে।
-না বাপু,কিছু খেলে ভরা পেটে আবার ঘুম আসবেনা,। আর যা মরিচ দিলাম, আমি মরে যাবো।
-আর আমার খালি পেটে ঘুম আসছিলোনা।
মন খারাপ করে,রাত্রি বলে।
-কারণ,আমাদের বেবির খিদে পেয়েছিলো,বুঝছো? এটা স্বাভাবিক,মন খারাপের বা লজ্জার কিছু নেই।
এবার আসো,ঘুমাই।
শাহেদ, রাত্রিকে গভীর মমতায় হাত ধরে রুমে নিয়ে যায়। আর রাত্রিকে জড়িয়ে ধরে সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়ে সে । শাহেদের নাক ডাকা শুরু হয়নি বলে,আর পেটভরা খাবার থাকায় রাত্রি তৃপ্তির সাথে চোখবন্ধ করে। সাথে সাথে তারও চোখজুড়ে ঘুম এসে যায়।ঘুমের ঘোরে রাত্রির ঠোঁটে সুন্দর একটুকরো হাসি ফুটে উঠে। নিশ্চয়ই সে সুখের আর ভালোবাসার একটি স্বপ্ন দেখছে।
# #
দেখো নিশি, আমি তোমাকে সত্যিই অনেক বেশি ভালবাসি। আর কতো বার বলবো। তুমি বুঝো না কেনো?
কি বুঝবো? তোমাকে ছাড়া আমার কেমন যেন একা একা লাগে। খুব অসহায় ফিল করিদেখেন উৎস ভাইয়া, আপনাকে আমি আগেও বলছি আর এখন আবারো বলছি রাস্তা মাপেন। আমার কাছে এইসব হবে না।কথা টা বলেই নিশি ওর বান্ধবীদের নিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলো। সেই ১ম দিন থেকে এখন পর্যন্ত ওকে যতবারই আমার ভালবাসার কথা বলেছি ও ততোবারই রাস্তা মাপেনবলে হাসতে হাসতে চলে গেছে। দিনের পর দিন সে হাসি যেন বেড়েই চলেছে আর আমার কষ্ট। এবারেও তার ব্যতিক্রম হলো না। আর ওকে ভাইয়া ডাকতে অনেকবার মানা করছি। তাও প্রতিবার বলবেই। ফাজিল মাইয়া। যেন খুব মজা পায় বলে। আমি ওর চলে যাওয়া রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। খুব রাগ লাগছে। আরে বদ মেয়ে আমার রাস্তা তো তোর কাছে। তুই যেদিকে যাবি সেদিকেই আমার রাস্তা।
আমি এবার ভার্সিটি তে থার্ড ইয়ারে পড়ি। আর নিশি সেকেন্ড ইয়ার। নিশি যখন ফার্স্ট ইয়ারে তখন ওকে দেখেই আমার ভালো লেগে যায়। কেমন যেন শান্ত বাদামি চোখ, পাতলা ভ্রু, ঘন চুলের মেয়েটার ভেতর অসম্ভব মায়া। সেই মায়ায় মুহূর্তেই আমি ওর প্রেমে পড়ে গেলাম। পরে শুনলাম নিশির বাবা নাকি পুলিশ অফিসার। তাই ৫ মাস শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছিলাম। তারপর একদিন এক গ্লাস পানি খেয়ে হাঁটু কেঁপে কেঁপে ওকে আমার জীবনের ১ম এবং ব্যর্থ প্রেম টি নিবেদন করেছিলাম।
আগেই বুঝেছিলাম এই মেয়ে এতো সহজে ধরা দিবে না। তাই আমি হাল ছাড়িনি। এখন আস্তে আস্তে ভয় কেটে গেছে। তাই এক দুই মাস পরপরই ওকে গিয়ে প্রপোস করে আসি। আজও গিয়েছিলাম। ফলাফল নিয়মিত যা হয় তাই ই হলো।
এ.আর. প্লাজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। একটু পর পুলিশের বদ মাইয়া এই দিক দিয়ে ভার্সিটি থেকে আসবে। এবার ভাবছি একটু অন্য ভাবে ট্রাই মারবো। অনেক ভাবেই তো পটানোর চেষ্টা করলাম। কখনো গোলাপ হাতে, কখনো কবিতা শুনিয়ে, কখনো দু হাত বাড়িয়ে শাহরুখ খান স্টাইলে। কোনো কিছুতেই তো কিছু হলো না। ওইতো নিশি আসছে! সাথে ওর মোটা দুই বান্ধবীও আছে দেখছি। এই দুইটা মনে হয় ওর বডিগার্ড। আমি ডাক দিলাম নিশিইই..ও আমাকে দেখে এগিয়ে এলো। তারপর বললকি ব্যাপার। আজ ভার্সিটি না গিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে।এইতো একটা কাজে আসছিলাম তো.. শুনলাম এখানে যেই নতুন রেস্টুরেন্ট টা হয়েছে ওখানকার খাবার গুলা নাকি অনেক ভাল। তাই ভাবছি টেস্ট করতে যাবো নাকি।ও আচ্ছা যান তাহলে। বাই..
-> এই না শুনো কি তোমার প্রিয় স্যান্ডউইচও আছে ওখানে
— যান খেয়ে আসেন
-> না মানে একা একা যেতে ঠিক ইচ্ছা করছে না। তুমি ফ্রি থাকলে চলো দুজনে যাই।
এটা শুনে নিশির ভাবের কোনো পরিবর্তন এলো না। শুধু কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। ও হয়তো জানতোই আমি এমন কিছু বলবো। এরপর ও পিছে ঘুরে হাতের ইশারায় ওর বান্ধবীদের ডাকলো।এই তোরা ভাইয়ার সাথে রেস্টুরেন্টে যা। ভাইয়া নাকি তোদের ট্রিট দিবে। আমি বাসায় যাচ্ছি। তোরা খেয়ে দেয়ে আয় কেমন।ওর বান্ধবীদের উদ্দেশ্যে কথাটা বলেই নিশি সোজা হাঁটা ধরলো। যাবার আগে একবার পিছনে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল এবার তো আপনাকে আর একা যেতে হলো নাতারপর ওর বান্ধবী দুইটা আমার দিকে হায়েনার মতো লুক দিয়ে আমাকে রেস্টুরেন্টের ভেতর নিয়ে গেল। মনে হলো কত দিন ধরে যেন খায়নি। কাজের কাজ তো কিছুই হলো না মাঝখান দিয়ে মুটকি দুই টা খেয়ে নিজেদের ওজন বাড়িয়ে আমার মানিব্যাগের ওজন টা কমালো। এসব যন্ত্রণা কি সহ্য হয়। তাও নিশির বান্ধবী বলে সহ্য করে নিতে হলো।
আজ আরেকটা বুদ্ধি পাইছি ওরে পটানোর। কিন্তু নিশি কোথায়? ওইতো ও ক্যাম্পাসের জাড়ুল গাছটার নিচে বসে আছে। আজ দেখছি ও একাই আছে। যাক ভালই হলো। আর একটু এগিয়ে গিয়ে দেখি ওর হাতে বই খাতা। মনে হয় ক্লাসের নোট করছে।আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম
-> কি নিশি পড়াশোনা হচ্ছে নাকি
ও মুখ তুলে আমাকে একবার দেখে নিলো। তারপর আবার খাতার কাজে মনযোগ দিলো। তারপর বলল
— জি.. দেখতেই তো পাচ্ছেন
-> আমি কি তোমার পাশে একটু বসতে পারি?
ও আমার দিকে না তাকিয়েই বলল
— জি না ভাইয়া।ফাজিল মাইয়া। মুখের ওপর না বলে দিলো। মনে হয় এই মেয়ের কাছে আমার এক পয়সাও দাম নাই। কি লজ্জার ব্যাপার। আবার ভাইয়াও ডাকলো। সুন্দর কথায় বাঁশ দেয়া এই মেয়ের থেকে শেখা উচিৎ। যাই হোক প্রেম করতে হলে এতো কিছু ভাবলে চলবে না।আমি বললাম নিশি একটা কথাবলে ফেলেনআমার সাথে এক জায়গায় যাবা?কোথায়?শপিং মলে.. কি করতে? শপিং মলে মানুষ কি করতে যায়? আজ তুমি যা চাও তাই তোমাকে কিনে দিবোকথাটা শোনার পর নিশি আমার দিকে এমন ভয়ংকর চোখে তাকালো যেই দৃষ্টির সাথে আমার আগে কখনো পরিচয় হয়নি! তারপর বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। একদম আমার সামনা সামনি। ওর চোখেমুখে রাগের ছড়াছড়ি! ও আমার ওপর চেচিয়ে বললোকি বললি তুই! আমাকে শপিং করাতে নিয়ে যাবি! আর একবার বল! বল কি বললি!কি ব্যাপার! নিশি এতো রেগে গেল কেন??? রেগে আমাকে তুই করে বলতেছে। প্লান অনুযায়ী এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। আরিফ ই আমাকে এই বুদ্ধিটা দিয়ে বলল মেয়েরা শপিং এর কথা শুনলে নাকি খুশিতে গদগদ করে। আর এ তো উলটে রেগে গেল! রাগে রীতিমত ফুঁসতেছে!! পুলিশ বাপকে বলে দিবে নাতো!!! পরিস্থিতি মারাত্মক দেখে পেছনে ঘুরে দৌড় দেবো তখন নিশি বললএই কোথায় যাচ্ছ.. দাঁড়াও বলছি..আমি সামনে ঘুরে মাথা নিচু করে দাঁড়ালাম। ও বললতুমি কি ভাবলে যে শপিংয়ের কথা বললে আমি তোমার সাথে ডিং ডিং করে চলে যাবো?না মানে সব মেয়েরাই তো..আমাকে তোমার ওসব মেয়েদের মত মনে হয়?না.. আমি যাই এখন.. এক পাও নড়বে না এখান থেকে..আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলাম। খেয়াল করলাম ও তুই থেকে তুমিতে নেমে এসেছে। এই প্রথম ওর মুখে তুমি করে শুনলাম। ও বললআমি একটা ডিসিশন নিলামএবার আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম। ওর চোখ এখন অনেক টাই শান্ত। আমার জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দেখে ও বললবুঝেছি তোমার প্রপোজের স্টক সব শেষ হয়ে গেছে। এখন কোথা থেকে কি সব শুনে সেসব এপ্লাই করতেছো। বাজে বাজে বুদ্ধি সব তাহলে কি করবো? আর কিছু করতে হবেনা। অনেক করেছেন। এবার আপনাকে একসেপ্ট করা হলো। না হলে আরো কত কি দেখতে হবে কে জানে..আমি ওর কথা শুনে পুরাই ঘোরের মধ্যে চল # #
যখন তখন এতো ফোন করো কেনো তুমি?। এভাবে কেউ কোনো মেয়ের সাথে কথা বলে?। আমি বলি, সমস্যা?। হ্যা, কেনো বলো?। আমার ইচ্ছে হয় তাই বলি। ঠিক আছে কালকে সকালে দেখা হলে জেনে নিবো।
,কলটা কেটে ফোনটা বন্ধ করে রেখে দিলো আলভি। জেনিয়া দেখতে সুন্দরী হলেও একটা কারনেই আলভি মেয়েটাকে লাইক করেনা। সেটা হলো জেনিয়া নেশাগ্রস্ত। এমনিতেই তার রিলেশান করার ইচ্ছে নেই। আবার এমন মেয়ের সাথে তো নয়ই।জেনিয়া কিছু দিন পর পরই ফোন করে আলভি কে। যথেষ্ট বিরক্ত হয় সে। কারন সে সহ্য করতে পারেনা জেনিয়া কে। মেয়েটা নেশাগ্রস্থ বলে মাঝে মাঝে খুবই রাফ ব্যবহার করে আবার নেশা কেটে গেলে ভালো ভাবে কথা বলে, আবার সরি বলতে বলতে শেষ হয়ে যায় প্রায়। কিছু কিছু সময় আবার আলভি কে ব্লাকমেইল করারও চেষ্টা করে। সেজন্য জেনিয়ার থেকে যতদুরে থাকতে চায় অথচ কোনো না কোনো ভাবে জেনিয়া তার সাথে যোগাযোগ রাখবেই।
,সেদিনও নেশাগ্রস্থ ভাবে আলভি কে ইচ্ছে মত যা নয় তা বলে। তাই সহ্যের সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ফোনের সিম কার্ডই সে চেন্জ করে ফেলে। অথচ ল্যাপটপ দিয়ে যখন সে ফেসবুকে লগইন করে তখন জেনিয়া মেসেজের মাধ্যমে ব্লাকমেইল করে যে বাসায় চলে আসবে। তাই আবার সিম কার্ড লাগিয়ে ফোন অন করে। জেনিয়া কল করে।
,সিম কেনো অফ করো? তুমি কি ভাবছো আমি তোমাকে পাবোনা? সোজা তোমার বাসায় উঠে যাবো দেখি কিভাবে নামাও আমাকে।প্লিজ তুমি আমাকে এসব বলে টেনশানে ফেলো না, আমি মাফ চাই তোমার কাছে। ছেড়ে দাও আমাকে
ছেড়ে দিবো মানে? তোকে আমি কখনোই ছাড়বোনা। আর কখনো ফোন দিলে কেটে দিবি না, ফোন বন্ধও রাখবিনা নয়ত তোর খবর আছে
,
জেনিয়ার এরকম ব্যবহার গুলো কখনোই ভালো লাগেনা আলভির। জেনিয়ার এরকম ব্লাকমেইলের কারনে পরবর্তীতে সে তার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জেনেছে যে ওরা খুব রিচ। বাবা সারাদিন ব্যস্ত থাকে। বাড়িতে মা নেই কারন সে আরোও ৬ বছর পূর্বেও গত হয়েছে যখন জেনিয়া ক্লাস এইটে পড়তো। এরপর বাবার থেকে দুরত্ব বাড়তে থাকে। বেশির ভাগ সময়ই সে ব্যস্ত থাকতো নিজের কাজে। আর একাকীত্ব জেনিয়া কে নিয়ে যায় অন্য পথে। আর ধীরে ধীরে সে নেশাগ্রস্থ হতে থাকে তখন থেকে যখন এসএসসি তে জিপিএ ফাইভ পাওয়ার পরও তার বাবা তাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সময় অব্দি দেয়নি। জেনিয়ার সম্পর্কে সব কথাগুলো জানার পর জেনিয়ার প্রতি একটু দুর্বল হয়ে পরে আলভি। কিন্তু এমন একটি মেয়ের সাথে সে কিভাবে সম্পর্কে জড়াতে পারে। তাই জেনিয়া কে দেখা করতে বলে।
,জেনিয়ার প্রিয় কালো গাড়িটা পার্ক করে সে রেষ্টুরেন্টের ভেতরে এসে আলভির পাশে বসে। আলভি ইতস্তত ভাবে বলে, তুমি পাশে বসলে কিভাবে কথা বলবো? সামনা সামনি বসো তাহলে বোঝাতে সুবিধা হবে। জেনিয়া সামনের চেয়ারে বসে, দুজনের মধ্যে শুধু টেবিলটার দুরুত্ব।
,আমি খুব হ্যাপি আলভি তুমি আমাকে দেখা করতে বলেছো তাই। ওয়ান মিনিট, তুমি কি স্মোকিং করেছো?। হ্যা, কেনো?। জেনিয়া তোমার সাথে আমার সিরিয়াসলি কিছু কথা আছে। এখানে ডাকার কারন এটাই। শুনতেই তো এসেছি, বলো কি বলবে?। বলতে চাচ্ছিলাম যে, তুমি আমাকে আর ব্লাকমেইল করোনা। আমাকে আমার মত থাকতে দাও। আমার সাথে এমন করে তোমার তো কোনো লাভ নেই। হিহিহি, কি বললে? আলভি এই কথা শুনে প্রথমে রাগ হতো এখন হাসি পায়। একই কথা ছাড়া আর কিছু বলতে পারোনা? তোমার কি মনে হয় তুমি বললেই আমি শুনবো?। তারমানে তুমি আমার কোনো কথাই শুনবে না?। কেনো শুনবোনা, এসব কথা বাদে অন্য কিছু বলো? আচ্ছা বাদ দাও লাভ টাইপ কিছু বলো, ভালবাসি বলো। আমি কেনো বলবো তোমায়? আমি তোমাকে ভালবাসিনা। তুমি যদি আর সাধারন মেয়েগুলোর মত হতে তাহলে একশত বার বলতাম। কিন্তু তুমি কেনো এসব করো বলো আমায়? কেনো স্মোকিং করো? কেনো অন্যান্য বাজে নেশা করো। তুমি কি কখনো এসব ছাড়তে পারবে? কখনোই কি হবে তোমার দ্বারা?। আর যদি ছেড়ে দেই?। তাহলে সেদিন মন থেকে ভালবাসবো তোমায়। প্রমিজ করো?। হ্যা প্রমিজ।
,জেনিয়া প্রমিজ করেও সেই প্রমিজ রাখেনি। আবারও ফোন করে আলভির সাথে যা নয়ত তা ভাবে ব্যবহার করেছে। আলভির ইচ্ছে করেনা জেনিয়ার সাথে কথা বলতে তবুও তার ব্লাক মেইল সহ্য করতে হয়। ভীষন বিরক্ত হয়ে ওঠে সে। তার কথা, মেয়ে তুমি এসব ছেড়ে দাও ভাল ভাবে জীবন যাপন করো, ভালবাসবো তোমায়। অথচ জেনিয়ার এত দিনের অভ্যাস সে কিছুতেই ছাড়তে পারছেনা। বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় চলে যায় কারন পূর্বের বাসা টা জেনিয়া চিনে ফেলেছিলো। তবুও কিভাবে যেন বর্তমান ঠিকানাটাও পেয়ে গেছে।রাতভর ফোন দিয়ে কথা বলবে সে, কখনো প্রেমের কথা তো কখনো আবার উল্টো পাল্টা রাফ ব্যবহার করতে থাকে। নেশাগ্রস্থ হয়ে গেলে যা হয় আরকি। একদিন রাতে প্রায় ৯ টার দিকে ফোন দিয়ে নেশাগ্রস্থ ভাবে কথা বলতে শুরু করে। ব্লাকমেইল করে বাড়ির নিচে যেতে বলে। এইসময় বাইরে বের হয়না কখনোই আলভি। তবুও সে স্বীকার। গিয়ে দেখে জেনিয়া গাড়ির মধ্যে বসে ড্রিক্স করছে। আলভি কে দেখতে পেয়ে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। আলভি দ্রুত হেটে ডান হাত দিয়ে জেনিয়ার মুখ চেপে ধরে বলে, কেউ শুনলে ভীষন প্রবলেম হয়ে যাবে, তুমি যাও, ড্রাইভার ভাইয়া আপনার ম্যাডাম কে বাড়িতে নিয়ে যান। জেনিয়া আলভি হাত ধরে রেখে জোর করে তাকে বাড়িতে দিয়ে আসার জন্য। যেতে না চাইলেও জেনিয়ার পদ্ধতি রয়েছেই। বাধ্য হয়ে ব্যাক সিটে বসে পড়ে আলভি। ড্রাইভার গাড়িটা চালিয়ে যাচ্ছে। আর জেনিয়া, আলভির কোলে মাথা রেখে শুয়ে একাই বকবক করতে থাকে, তোমার মত কেউ ভালবাসে না আমাকে, কেউ সময় দিতে চায়না আমার। সবাই খুব ব্যস্ত আমার আম্মু থাকলে তোমার সাথে কথা বলিয়ে দিতাম আব্বু তো সারাদিন ব্যস্ত থাকে। আলভি জেনিয়ার চুলে হাত বুলিয়ে বলে, তুমি একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো। দাড়োয়ান বড় গেট টা খুলে দেয়, গাড়িটা বাড়ির ভেতরে ঢোকে। আলভি জেনিয়া কে ধরে গাড়ি থেকে বের করে। ড্রাইভার জেনিয়ার কেয়ার টেকার মহিলা কে ডেকে নিয়ে আসে। আলভি কেয়ারটেকার মহিলার কাছে জেনিয়া দিয়ে চলে আসতে চায়। কিন্তু জেনিয়া হাতটা ধরে রাখে। মহিলাটি বাড়ির ভেতরে যেতে আমন্ত্রন জানায়। নয়ত জেনিয়া যাচ্ছেনা। #
ব্রেকআপ !!! (চিৎকার করে বলে উঠলো মিম)
রায়হানঃ মানে?
মিমঃ মানে বুঝো না? মানে হলো তোমার আর আমার রিলেশনের এখানেই শেষ! বাই বাই!
রায়হানঃ আচ্ছা।
মিমঃ আচ্ছা মানে? তুমি কিছু বলবা না?
রায়হানঃ আচ্ছা আজকে কি আমরা শোক পালন করবো? না মানে যেমন ধরো..প্রতিদিন আমরা আইসক্রিম, ঝালমুড়ি, ফুচকা খাই..আজকে বরং তা না করে সিগারেট খাই!nমিমঃ তুমি আমাকে সিগারেট খাওয়াবা !!!
রায়হানঃ না মানে.. কষ্ট ভুলতে তো মানুষ তা-ই করে!
মিমঃ তোমার কি মনে হয় আমার কষ্ট লাগবে? মোটেও না!
রায়হানঃ ওওওওওও..
রাগে হাতের ব্যাগটা আছাড় মেরে মিম বললো, তুমি একটা ছাগল আর একটা ছাগলের সাথে কোনো মানুষের সম্পর্ক থাকতে পারে না! কথাটা বলেই বাসার দিকে হাঁটতে লাগলো মিম..
মিমের ফেলে যাওয়া ব্যাগটা হাতে নিলো রায়হান। ভেতরে একটা মোবাইল আর কিছু টাকা আছে। রায়হান একবার ভাবলো মিমকে ব্যাগের জন্য ডাক দিবে ৷ কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তাটা বাদ দিল। ব্যাগটা হাতে নিয়েই হাঁটা শুরু করলো রায়হান ।
দুটো বাচ্চা মেয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে দড়িলাফ খেলছিল। রায়হানের হাতে মেয়েদের ব্যাগ দেখে খিলখিল করে হেসে উঠলো মেয়ে দুটো। ওদের হাসি দেখে রায়হানও হেসে দেয়। তবে এবার আর মেয়ে দুটো হাসে না। হয়তো রায়হানকে পাগল ভাবছে!
মিমঃ হ্যালো, তুমি আমার মোবাইলসহ ব্যাগ চুরি করলা কেন?
রায়হানঃ না, না আমি তা করিনি! তুমিই তো ব্যাগটা ফেলে আসলে।
মিমঃ একদম মুখের ওপর কথা বলবা না! কালকে আমার ব্যাগ নিয়ে সোজা ওখানে চলে আসবা। বাই!
ফোনটা কেটে দিল মিম! কাঁদছে ও..! দুটো কারণে (ব্যাগটা ও ইচ্ছে করেই ফেলে এসেছে) প্রথমত, এই ব্যাগের অজুহাতে আবার রায়হানের সাথে দেখা করা যাবে!
আর দ্বিতীয়ত, আজই রায়হানের কলেজে পরিক্ষার ফিস দেয়ার শেষ দিন। তাই ব্যাগে টাকাটা রেখে এসেছে যাতে বাধ্য হয়ে ওর টাকাটা দিয়ে পরিক্ষার ফিস দিতে পারে রায়হান ৷ এমনিতে সরাসরি দিলে রায়হান তা কোনোদিনই নিতো না!তাই বাধ্য হয়েই ঝগড়াটা সৃষ্টি করছিল ও!
আধঘণ্টা ধরে বসে আছে মিম। কিন্তু রায়হান আসার কোনো নাম নেই! যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে এসে দাঁড়ায় রায়হান!
রায়হানঃ সরি! এই নাও তোমার ব্যাগ! আর একটা কথা বলবো?
মিমঃ কি?
রায়হানঃ আমি তোমার টাকাগুলো খরচ করে ফেলেছি!
মিমের মুখে একটা প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো! কিন্তু মুখে বললো, ফাও কথা বলবা না! ব্যাগে কোনো টাকা ছিল না!n
রায়হানঃ না, না, সত্যি ছিল! তোমার ওই টাকা দিয়েই তো জব্বার চাচাকে একটা পাঞ্জাবী কিনে দিয়েছি!
সরি! প্লিজ কিছু মনে করো না! আসলে হাতে কোনো টাকা ছিল না তাই! তবে এ মাসের টিউশিনির টাকাটা পেলেই দিয়ে দিবো! তুমি তো চাচার কথা সবই জানো! তাই আর কি.. সরি!
ঠোঁটচেপে কান্না আটকে রেখেছে মিম! যে মানুষটা নিজেই ঠিকমত চলতে পারে না, যার নিজেরই একটা ভালো জামা নেই, যে নিজেই সারা বছর কষ্ট করে কাটায়, সেই মানুষটাই কিনা আরেকজনকে সাহায্য করে তার জন্য আমার কাছে মাফ চাইছে!
কোনোমতে নিজেকে সামলে উঠে মিম বললো, তোমাকে কলেজ থেকে বের করে দেয়নি?nরায়হানঃ না! আরো দুই দিন সময় দিয়েছে ।
মিমঃ বের করে দিলে খুশি হতাম!
রায়হানঃ আচ্ছা আজ থেকে কি তোমার ফোন রিসিভ করবো? না মানে তুমি তো কাল বললে..
মিমঃ হ্যাঁ, আজকে থেকে তুমি আর আমার ফোন রিসিভ করবা না! কিন্তু ফোন ঠিকই দিবা! না দিলে চড়দিয়ে আক্কেল দাঁতসহ সবগুলো দাঁত ফালায়া দিবো!n
এই বলেই এবার আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না মেয়েটা! অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো রায়হান! আর দশটা সাধারণ গল্পের ছেলেগুলোর মতো রায়হানও বুঝতে পারছে না মেয়েটা কেন কাঁদছে!
শুধু মনে মনে বলছে- আবার কি করলাম—??
# #
মেয়েটার গালে একটা থাপ্পড় দিতে পারলে ভাল লাগতো । কিন্তু আপাতত দেওয়া যাচ্ছে না দুই কারনে ।
একে তো সে একটা মেয়ে তাও আবার পিচ্চি টাইপের মেয়ে, স্কুলে পড়ে মনে হয় । আর দ্বিতীয় কারন হচ্ছে মেয়েটা পিচ্চি হলেই দেখতে বেশ সুন্দরী । পিচ্চিপাচ্চার প্রেমে পড়ি না নয়তো এই মেয়ের প্রেমে পড়ে যেতাম টুপ করে ।
বিকেল বেলা টিউশনীতে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি । তখনই এই বিপত্তি । ইদানিং আমাদের গলির ভেতর কদিন থেকেই দেখছি বেশ কিছু পুলাপাইন সাইকেল চালাচ্ছে । এখন ঢাকা শহরে সাইকেল চালানো একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে । ছোট বড় সবাই চালাচ্ছে । দেখতাম, চলে যেতাম ।
কিন্তু আজকে কেবল চলে যাওয়া হল না । একটা শার্ট আর জিন্স পরা মেয়ে দেখছিলাম সাইকেল চালাচ্ছে । যতই ঢাকায় থাকি না কেন এই শহরে মেয়েরা সাইকেল চালাচ্ছে এমন একটা দৃশ্য এখনও ঠিক স্বাভাবিক নয় আমার কাছে । কয়েকবার চোখ চলেই যায় । মেয়েটার চালানোর ধরন দেখে মনে হচ্ছিল যে নতুন চালানোস শিখছে । দেখতে দেখতে মেয়েটা কাছে চলে এল । আর বলা নেই, কওয়া নেই আমার ডান পায়ের সাথে ধাক্কা মেরে দিল । তারপরই সেই মেয়েদের চিরো চেনা আরচন । মেয়েটি একটু হাসি দিয়ে বলল
-ভাইয়া আপনার লাগে নি তো ?
তখনই মনে হল একটা থাপ্পড় দিয়া বলি না না লাগবে কেন ? এতো বড় একটা সাইকেল পায়ের উপর তুলে দিলে লাগে নাকি । তুমি বরং একটা বুলডোজার নিয়ে এসে আমার পায়ের উপর তুলে দাও । ফাজিল মাইয়া ! কিন্তু এর কিছুই বলা হল না । প্যান্টের ধুলো পরিস্কার করতে করতে বললাম
-না । ঠিক আছে । একটু সাবধানে চালাও ।
মেয়েটি আবারও হাসি দিয়ে বলল
-সরি ভাই । চালানো শিখছি তো । আপনার সত্যতিই লাগে নি তো ?
-না ঠিক আছে ।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে হাটা দিলাম । মুখে বললেও পায়ে বেশ খানিকটা ব্যাথা অনুভব করতে পারছিলাম । যাক কি আর করা !
দুই-আপনি অনেক ব্যাথা পেয়েছিলেন তাই না ?
আজকেও দেখি সেই মেয়ে হাজির । তবে আজকে ঠিক মতই সাইকেলের ব্রেকটা চাপতে মনে ছিল মনে হয় । সাইকেল টা নিয়ে আমার ঠিক সামনেই থামলো মেয়েটি ।
-না ঠিক আছে । একটু ব্যাথা তো লাগবেই ।
-না আমি দেখছিলাম আপনি কি রকম খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছিলেন । এমন কি আপনি এখনও খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছেন হুম ।মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে রইলো খনিকটা লজ্জিত এবং অপরাধী মুখে । সুন্দরী মেয়েদের করুন মুখ কারই বা দেখতে ভাল লাগে না । আমি বললাম-আচ্ছা ঠিক আছে । সমস্যা নেই । দুর্ঘটনা তো ঘটেই, তাই না ?
-হুম ।মন খারাপ করার কিছু নেই ।মেয়েটি বলল-আপনি কোথায় যাচ্ছেন ? প্রতিদিন দেখি এই সময়ে আপনি বাইরে যান । কোথায় যান ?বাহ । আমার দিকে লক্ষ্য আছে দেখছি -তা তেমন কিছু না । আপনি প্রতিদিন দেখেন না আমি বিকেল বেলা এই গলিতে সাইকেল চালাই ।তাই নাকি ?এমন একটা ভাব দেখালাম যেন আমি এই প্রথম মেয়েটাকে লক্ষ্য করলাম ।ইস । ঢং -ঢং ?টিউশনীতে দেরি হয়ে যাচ্ছিল তাই আর কথা বাড়ালাম না । চলে আসলাম । ভেবেছিলাম কথা বার্তা মনে হয় এখানেই শেষ হবে কিন্তু এখানে শেষ হল না । পরদিন সকাল বেলা ক্লাস ছিল । আমি এমনিতে বাসের ভিড় এড়াতে একটু সকাল সকালই রওনা হই । প্রতিদিন ফিজিক্যাল বাসস্টপেজ থেকে উঠলেও আজকে কি মনে হল মনে কর মোহাম্মাদপুর বাস স্টপেজ থেকে বাসে উঠতে গেলাম । কোন কারন নেই । দুটো স্থান থেকেই আমার বাসার দুরুত্ব প্রায় কাছেই । বাসস্ট্যান্সে গিয়ে দেখি পিচ্চি মেয়ে দাড়িয়ে রয়েছে । পরনে পরিচিত কলেজের পোষাক ।আমি তো ভেবেছিলাম মেয়েটা স্কুলে পড়ে কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কলেজে পড়ে । তার উপর গতদিন মেয়েটাকে যত ছোট মনে করেছিলাম আজকে ততটা ছোট মনে হচ্ছে না । আমাকে দেখেই মেয়েটা এগিয়ে এল ।আপনি ?-তুমি ?আমি কলেজ যাচ্ছি ।তা তো দেখতেই পাচ্ছি ।আপনি কোথায় যাচ্ছেন ?ক্যাম্পাসে ।ও আচ্ছা ।বাস চলে আসলো । বাসে উঠে দেখি মেয়েটা প্রথমে মহিলা সিটে বসল । আমি বসলাম পেছনের দিককার একটা সিটে । সকাল বেলার সময় । বাসটা প্রায় ফাঁকায় বলা চলে । দেখলাম একটু পরে মেয়েটা আমার কাছে পাশে এসে বসল ।-আপনার পায়ের কি খবর ?ভাল ।আসলে আমি সত্যি সরি ।না ঠিক আছে ।কথা চলতে থাকলো মেয়েটির কলেজে যাওয়ার আগ পর্যন্ত । সময় বলতে গেলে ভাল কাটলো বেশ ।যখন সামনের কয়েকটা স্টপেজ থেকে মেয়েটির কলেজের কয়েকজন উঠলো দেখলাম মেয়েটি একটু নড়েচড়ে বসলো । কয়েকজন কে দেখে তো হাতও নাড়ালো । মনে হয়েছিল যে মেয়েটি মনে হয় উঠে চলে যাবে । কিন্তু গেল না । বসেই রইলো । মেয়েটি যখন নেমে গেল ওর কলেজের সামনে গেটের কাছে দাড়িয়ে মেয়েটি আমার দিকে হাত নাড়লো । কেন জানি বেশ ভাল লাগলো বিষয়টা ।-ভাইয়া আপনার মোবাইল নাম্বারটা দেবেন ?পেছনে তাকিয়ে দেখি এক পিচ্চি একটা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । পিচ্চিকে চিনি না ।কেন ? আমার নাম্বার দিয়ে কি করবা ?জিনিয়া আপু চেয়েছে ।তোমার আপু আমার নাম্বার নিয়ে কি করবে ?আমি তো জানি না ।তোমার আপুকে বল আমি পিচ্চিদেরকে আমার নাম্বার দেই না ।পিচ্চি ছেলেটি চলে গেল ।তিন-এই ছেলে দাড়াও ।সন্ধ্যা বেলা টিউশনী থেকে বাসায় আসছিলাম । মোড়ের মাথায় আসতে কয়েকটা ছেলেকে দেখতে পেলাম । এলাকার বড় ভাই যতদুর জানি । এদের সাথে আমি কোন দিন লাগতে যাই না । এড়িয়েই চলি । আমি দাড়ালাম ।তোমার নাম অপু ?-জি ।কোথায় থাকো ?এই তো গালির শেষ মাথায় । মাহতাব সাহেবের বাসায় ।জিনিয়াকে চিনো ?আমি চুপ করে রইলাম । কি বলবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না । কি হল কে জানে ?জি । একটু চিনি ।-কিভাবে ?সেদিন জিনিয়া সাইকেল চালাতে গিয়ে আমার পায়ের উপর সাইকেল তুলে দিয়েছিল । বেশ ব্যাথা পেয়েছিলাম ।আর কিছু না জি । আর কিছু না -গুড । এমনই যেন হয় । সে আমার বোন । মনে রেখো কথাটা ।জি আমি বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম । এলাকার বাড়িওয়ালার মেয়েদের পিছনে ভাড়াটিয়ার ছেলেরা গেলেই যত সমস্যা বাঁধে । ভাগ্য ভাল আমি একদমই এগোই নি । মাইর খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল । কদিন বেশ ঝামেলা ছাড়াই কেটে গেল । জিনিয়া কিংবা তার ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়া ছাড়াই ।কিন্তু পুরোপুরি মুক্তি মিলল না । কয়েকদিন পরে বিকেল বেলা আবারও বের হয়েছি তখনই জিনিয়াকে দেখতে পেলাম রাস্তায় দাড়িয়ে আছে । আজকে জিন্স কিংবা টিশার্ট পরে নি আজকে সেলোয়ার কামিজ পরেছে #
দক্ষিণের জানালা খুলে ঘুমিয়ে আছি। রুমে একা একা থাকি,ভয় লাগে না। মাঝে মাঝে ভয় পাই, তখন পাশের রুমে গিয়ে আপুর পায়ের কাছে মাথা রেখে ঘুমিয়ে থাকি। প্রতিদিনের মত আজও ঘুমিয়ে আছি,হঠাৎ নূপুরের আওয়াজ কানে আসলো। মাঝে মাঝে হাতের চূরির আওয়াজ আসছে কানে।আমি - কে ওখানে?কোনো কথার আওয়াজ আসছে না ওইপাশ থেকে।আমি- আবার জিগ্যেস করলাম কে ওখানে?
এবার আওয়াজ আসলো, বললো আমি পেত্নী।
আমি- ওহ, তা কাকে চান?
পেত্নী - আপনাকে ( হেসে হেসে)
আমি - কেনো, ঘার মটকাবেন নাকি?
পেত্নী - নাহ, ভালবাসার উষ্ণ আদর দিবো।
আমি - পেত্নী কি আবার ভালবাসতে জানে নাকি?
পেত্নী - এতকথা বলতে পারবো না, পুকুরপাড়ে এসো।
আমি - ভয় লাগে, পেত্নী যদি ঘার মটকে দেয়।
পেত্নী - তুমি ঘর থেকে বের হয়ে আসবে নাকি আমি ঘরে গিয়ে তোমার ঘার মটকাবো।
আমি - ওরে বাপরে, পেত্নী রেগে গেছে, এবার ঘরে বসে থাকা যাবে না।রুম থেকে বের হয়ে দেখি আব্বু ঘরের প্রধান দরজায় চেয়ার পেতে বসে আছে, আস্তে আস্তে গিয়ে দরজা খুললাম, আব্বু বুঝবে দূরের কথা, চুর যদি দরজা খুলা নিয়ে ডিগ্রী নেয় তারপরও আমার মত পারবে না, কারন এটা আমার দৈনিক কাজের মধ্যে এটা একটা কাজ। তো পুকুরপাড়ে গিয়ে দেখি পেত্নী মানে তাহমিনা বসে আছে,
আমি - কাশি দিলাম।তাহমিনা - এতক্ষণে তেমার আসার সময় হল?আমি - কি করবো বল? রুম থেকে বের হয়ে দেখি মেইন দরজা বন্ধ, দরজার পাশে একটা চেয়ার,চেয়ারে আব্বু বসে আছে, তারপর… তাহমিনা আমার মুখ চেপে ধরলো।
তাহমিনা - চুপ,এজন্যই তোমাকে কথা বলার সুযোগ দেই না।
আমি - থাক আর কথা বলবনা, শুধু একটা কথা জিগ্যেস করবো, উত্তর দিবা?তাহমিনা - বল।আমি - আচ্ছা তুমি আমার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকো কেনো?তাহমিনা - কৈই, আমি সবসময় তোমার পাশে থাকি, তোমাকে নজরে নজরে রাখি,আমি - মিথ্যা কথা, থামো কে যেন এদিকে আসছে।তাহমিনা - আসুক, আমি কি কাউকে ভায় পাই নাকি?বাবা - কিরে রনি, তুই একা একা পুকুরপাড়ে কি করিস?আমি - কৈই, আমি একা নাতো, আমার সাথে তাহমিনা আছে।বাবা - আর কত আমাকে জ্বালাবি?
এই বলে আব্বু আমাকে বাসার দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
তাহমিনা তুমি এখান থেকে যেওনা, আমি আবার আসবো।
তাহমিনা আর আমার বাড়ী একই পাড়ায়, আমরা দুইজন একই ক্লাসে পড়তাম, দুইজনে একই সাথে স্কুলে যেতাম আবার একসাথে বাড়ী আসতাম, দুজন দুজনকে না দেখে একদিনও থাকতে পারতাম না, আমরা দুজন ভাল বন্ধু বললে ভুল হবে, সুখ- দুঃখে দুজন দুজনার পাশে থাকতাম, দেখতে দেখতে কখন যে বড় হয়ে গেছি নিজেরাও জানতাম না। দুজন S S C পরীক্ষা দিয়ে পাসও করলাম। একদিন বিকেল বেলা রুমে ঘুমিয়ে ছিলাম,কোথা থেকে আমার বন্ধু আরিফ এসে বললো তাহমিনা কে কয়েকজন লোক দেখতে এসেছে, আমি ততক্ষণাৎ দৌড় দিলাম তাহমিনার বাড়ীর দিকে,
আমি - হাপাতে হাপাতে, কিরে তোকে কয়েকজন লোক দেখতে এসেছিল?তাহমিনা - হুম, এসেছিল।
আমি - তো, তুই কি বললি?
তাহমিনা - আমি কিছু বলিনি, সব তারাই বলেছে।
আমি - কি বলেছে? বলনা কি বলেছে?
তাহমিনা - বলবো?আমি - বল? কি বলেছে। কিরে চুপ করে আছিস কেনো?তাহমিনা - তারা আমাকে পছন্দ করেনি।
আমি - ( বাচলাম) কিছু না বলে বাড়িতে চলে আসলাম।
বাড়ী এসে আপুকে সব বললাম, আমার তো মা নেই, একটি শিশু কথা শিখার প্রথম শব্দ হচ্ছে মা,আমি সেই শব্দটা শিখার আগেই আমার মা ওপারে পাড়ি দিয়েছেন। তাই আমার মনের সব কথা আমার আপুর কাছে সেয়ার করি। তাহমিনাকে যে আমার ভালো লাগে সেটাও বলেছি। আমি আব্বু কে কিছু দরকার নাই, যা বলার আপুই বলবে।
আপুর সব কথা শুনে আব্বু রাজি হলেন। প্রস্তাব নিয়ে গেল তাহমিনার বাড়ী, কিন্তু তারা কন্যা দান করতে রাজি হলনা। বলবো তারা নাকি তাহমিনা কে অনেক বড় ঘরে বিয়ে দিবে।
আমি আব্বুর মুখে সব শুনে তাহমিনার বাড়ী গেলাম। তাহমিনার বাবা - মার হাতে পায়ে ধরে বললাম আমাকে কয়েকটা বছরের সুযোগ দিন,আমি আমার নিজের পায়ে দাড়িয়ে তাহমিনাকে আমার বাড়ী নিয়ে যাবো। তারা রাজি হলেন।আমি - আব্বু আমি বিদেশ যাবো।
আব্বু - কেনো? তুই কেনো বিদেশ যাবি?
আপু - ভাই আমার কথা শুন, পাগলামি করিস না, বরং তুই তাহমিনা কে ভুলে যা, আমরা একটা মেয়ের জন্য তোকে হারাতে পারবো না,আমি - আরে, আমি হারাবো কোথায়? জাষ্ট কয়েকটা বছর তোমাদের কে ছেড়ে দূরে থাকতে হবে এটাই তো।আব্বু - তুই যা ভাল মনে করস কর, আমি কিছু বলবো না।আমি - আব্বুর পায়ের পাশে বসে কেঁদে কেঁদে বললাম, আব্বু তুমি চাওনা তোমার ছেলে সুখে থাকুক? ভালো থাকুক?
শেষ মেস আব্বু রাজি হলেন।সাত বছর পর বাড়ী আসলাম, সব কিছু কেমন যেন পাল্টে গেছে, চিনার কোনো সুযোগ নাই।
আমি - আপু, আমি তাহমিনা বাড়ী যাচ্ছি।
আপু - তাহমিনা আর নাই, এই বলে আপু কাঁদতে লাগলেন।
আমি - আপু, তুমি কাঁদছ কেনো?
আপু - তুই বিদেশ যাওয়া ১( এক) বছর পর তাহমিনার বিয়ে ঠিক হয় একটা ৪০ ( চল্লিশ) বছরের লোকের সাথে, সেই লোকের নাকি তাহমিনার সমান একটা মেয়ে আছে, তারা লোকটির বয়স দেখেনি, দেখেছে লোকটির টাকা - পয়সা। তাহমিনা বিয়ের আগে আমার কাছে অনেক বার এসেছিল, কিন্তু সেখানে আমার কিছু করার ছিলনা।
তাহমিনা তোর ভালবাসাকে অন্যের হাতে তুলে দেয়নি, সে বাসর রাতে বিষ খেয়ে আত্ম হত্যা করেছে।
( আপু শুধুই কেঁদেই চলেছে)আপুর সব কথা শুনে যেন আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো। তারপর থেকে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি।তাহমিনা মরে নি, তাহমিনা বেচে আছে আমার শরীরের শীরা- উপ শীরায়.......
কত রাত যে জেগে জেগে কাটিয়েছি তার কোনো হিসাব নাই।
# #
নীল বাড়ি যাবে ।। দুই দিন পর তার বোনের বিয়ে কিন্তু কাজের চাপ থাকার জন্য দুই দিন আগে যেতে হচ্ছে ।। তারাতারি করে রেডি হয়ে ৯ টার মধ্যে বাস স্টান্ডে গেলো ।। আর কিছু সময় পর বাস ছেড়ে দিবে তাই নীল বাসে উঠে নিজের সিটে বসতে যাবে এখন দেখে তার সিটে অচেনা একটা মেয়ে বসে আছে,হ্যালো সিট টা আমার ।জ্বী আমি জানি ।ওও জানেন তো বসছেন কেন ?না আমার একটু সমস্যা আছে তো তাই আপনার সিটে বসছি । সমস্যা তো আমারও আপনার একার না । ( মুখ বাকা করে)এমন করে বলছেন কেন ?? আপনার সিট তো কি হয়ছে ?? আমি উঠতে পারব না । (রেগে)আমার সিটে বসে আমার আমাকে বড় বড় কথা শুনাচ্ছেন ।দেখুন আমার সমস্যা তাই আপনার সিটে বসছি ।।
আমার সিটে আমি বসবো ।। মেয়েটা মন খারাপ করে বলল ,, ঠিক আছে বসেন ।।
- নীলের তখন খারাপ লাগলো তাই নীল বলল না আপনি আমার সিটেই বসুন ।। আমি এখানে বসবো ।।
- ধন্যবাদ ।।
নীল ব্যাগ রেখে বসলো ।। বাস ছেড়ে দিলো ।। নীলের গরম লাগছে তাই বলল,,
- আমার গরম লাগছে জানালাটা খুলে দেন।।
- পারবো না ।। রোদ লাগে ।।
- নীল কিছু বলে না ।। কারন মেয়েটা খুব সুন্দর আর মায়াবী চেহারা ।। নীল মনে মনে বলছে বালিকা তোমার ১২ টা আজ আমি বাজাবো ।।
- দয়া করে সিটে বসতে দিলাম তার আবার এত গরম ।। নিজের সিট হলে না জানি কি হতো ।। (আস্তে আস্তে)
- এই কি বললেন ।। আপনি দয়া করছেন ??
- হুম ।। দয়া করছি বলেই তো আপনি জানালার পাসে বসতে পেরেছেন ।।
- আপনি দয়া করার কে ??? সিটে বসতে দিয়ে কি ভাব ।।
- হুম তাই তো ।।
মেয়েটা আর কিছু বলে না চুপ থাকে ।। আর নীল ভাবছে না মেয়েটার সাথে বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে তাই সরি বলার দরকার ,, কিন্তু মেয়েটার নাম জানা হলো না,,
- আপনার নাম টা জানতে পারি ??
- আমার নাম জানি না ।। (রেগে)
- বাহ খুব সুন্দর নাম তো আপনার ।। তো জানি না আপনি জাবেন কোথায় ???
- জাহান্নামে ।।
- আরে আমিও তো যাবো চলেন এক সাথে যাই ।।
- ওই আপনিনিনিনি ....।।।
- জানি জানি কি বলবেন ।। তবে আপনার নাম এন্গী বার্ড হলে ভাল হতো ।।
- আমার ভাল খারাপ আপনে দেখার কে ??
- না ।। এত ভাল একটা নাম দিলাম আপনাকে একটা ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ ছিলো ।।
- আমার ধন্যবাদের দাম আছে ।। আপনাকে দিয়ে সেই দামটা কমাতে চাই না ।।
- ও আচ্ছা ।। তা কত দাম আপনার ধন্যবাদের ?? আমি একটা ধন্যবাদ কিনে নিতাম ।।।
- এই আপনি চুপ করবেন ??? ওকে চুপ ।।তারপর নীল আর কথা বল না ।। মনে মনে হাসতে থাকে ।। এই রকম একটা এন্গী বার্ড পেলে তো ভালই হয় ।। যদি একে পাই তাহলে আরো ভাল হয় ।। নীল হাসে আর চিন্তা করে ।।
তবে নীলের মেয়েটাকে রাগাতে ভালই লাগছে ।।।
এই সব ভাবতে ভাবতে নীল যে কখন ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারে নাই ।। তারপর হটাৎ করে ঘুম ভেঙে যায় নীলের ।। তাকিয়ে দেখে মেয়েটা নীলের কাদে ঘুমাচ্ছে ।। ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েটাকে অসাধারন লাগেছে ।। জানালা দিয়ে আলো পরছে মুখে মনে হচ্ছে কোনো এক মায়াবী রাজকন্য এসে তার কাধে ঘুমাচ্ছে ।। নীল আর মেয়েটাকে জাগালো না কারন নীলের খুব ভাল লাগছে ।। নীল মনে মনে ভাবছে যদি সারা জীবন এই ভাবে কাধে ঘুমাতে তাহলে খুব ভাল হতো ।। হটাৎ করে আমার ফোন চলে আসে সাথে সাথে মেয়েটার ঘুম ভেঙে যায় ।। মেয়েটা সব কিছু বুঝতে পারে তাই একটু চুপ হয়ে যায় ।।
নীল ফোনটা বের করে দেখে তার বোন রিছিভ করে,,
- এই তুই ফোন দেওয়ার সময় পেলি না ??
- কেন ?? তুই কোথায় আগে তাই বল ??
- আমি চলে আসছি প্রায় ।। তুই এখন রাখ ।।
- ওকে তারাতারি আয়।।
ফোন কেটে দেয় নীল ।।
মেয়েটা কি বলবে বুঝতে পারছে না ।।
- দেখুন আমি বুঝতে পারি নাই।। সরি !!
- ওকে ।। ঘুমানোর সময় মনে থাকে না ??
- আরে ভুল করে হয়ে হয়ে গেছ ।। সরি বললাম তো ।।
- হয়েছে ।। সিট টা তো প্রথমেই নিয়েছেন ।। সাথে কাধটা এখন নিলেন ( দুষ্টুমির ছলে)
- এই যে মিঃ এত লাফান কেন ?? আপনি মানুষ নাকি ??
- আমি না আপনি লাফাচ্ছেন ।ডং দেখে বাচি না । এন্গী বার্ড । আল্লাহ কেন যে আপনার সাথে দেখা করায়ে দিলো । ওরি বাবা । দয়া করে চুপ করুন ।সারা রাস্তা প্রায় এই ভাবে রাগাতে রাগাতে আসলো নীল ।। মেয়েটা রেগে লাল হয়ে আছে ।। কিছু সময় পর নীল নেমে গেলো আর বলল বাই এন্গী বার্ড ।। মেয়েটা চোখ বড় বড় করে তাকালো ।। নীল আর কিছু বল নাহ ।। মেয়েটা চলে যায় ।। আর নীল কিছু কেনাকাটার জন্য বাজারে যায় ।। নীল সব কাজ শেষ করতে করতে সন্ধার আগে বাড়ি পৌছালো ।। বাড়িতে অনেক মানুষ।। নীলের সব রিলেটিভ চলে এসেছে ।নীল ব্যাগ রেখে ফ্রেস হয় বসে আছে আর মেয়েটার কথা চিন্তা করছে ।। মেয়েটাকে ভালবেসে ফেলে নীল । কিন্তু কি ভাবে খুজে বের করবে । না আছে তার ঠিকানা না আছে ফোন নাম্বার ।। এই সব ভাবতে ভাবতে নীলের ছোট বোন খাবার জন্য ডাকলো।। নীল খাবার টেবিলে বসবে তখন নীল সামনে তাকিয়ে অবাক,আরে আপনি এখনে আমারও তো একই প্রশ্ন ?নীলের বোন বলছে,, কিরে নীল ভাই তুই ওকে চিনিস ??মেয়েটা তখন বলল, কি এই লোক তোর ভাই ।হুম ।। আজকে যা করেছে তা আমি জীবনেও ভুলব না ।নীল বলছে,, এই তোর কি হয় ?? ভাইয়া বসো, আমি সব বলছি ,, ও আমার বন্ধু নীলা ।।ওওও।। কিন্তু তোরা একে অপরকে চিনিস কি ভাবে ??? আজ ওর সাথে আমি বাসে আসলাম ।। বাকিটা পরে বলবো ।রাতের খাওয়া শেষ করে নীল ছাদে যায় গিটার নিয়ে আর গান গাচ্ছে ।। তার কিছুক্ষন পর রিমি আসলো ।। রিমি আমার ছোট বোন দুই দিন পর ওরই বিয়ে ।কিরে এসেই গিটার নিয়ে বসে গিছিস ??
- হুম ।। কি করব ভাল লাগছে না তো ।আচ্ছা তুই নীলাকে কি ভাবে চিনিস ?তারপর নীল সব বলল ।। আর রিমি শুনে হাসতে লাগলো ।। পিছন থেকে নীলা মুখ চেপে ধরে ।।নীল আরো বলে জানিস আমি নীলা কে ভালবেসে ফেলছি ।নীলা বলে মরে গেলেও রাজি হব না ।তারপর সবাই ছাদ থেকে নেমে আসে ।দেখতে দেখতে দুই দিন পার হয়ে গেলো।। আজ বিয়ে বর পক্ষ চলে এসেছে ।। আর কিছু সময় পর রিমিকে নিয়ে যাবে ।। নীলের ভাল লাগছে না ।। বোনটা আজ চলে যাচ্ছে ।। কিন্তু এটাই নিময়, নিজেকে শক্ত করে রিমিকে গাড়িতে তুলে দিলো নীল ।। তার দুই দিন পর নীলা চলে যায় ।। নীলের খুব খারাপ লাগেছে ।। নীল আর থাকতে পারছি না ।। অবশেষে রিমি # #
মৃ'ত্যু আসার আগেই আপনার পরিবারকে যেসব বিষয়ে ওসিয়ত করে যাবেন।
১. আমার মৃ'ত্যুর সংবাদ শুনলে "ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন" পড়বেন।
২. আমার মৃ'ত্যুকে অকাল মৃত্যু বলবেন না, কারণ আমি আমার নির্ধারিত রিযিক ভোগ করে ফেলেছি।
৩. আমাকে নিয়ে বিলাপ মাতম করবেন না, জোরে জোরে কান্নাকাটি করবেন না কারণ এটা সুন্নাহ বিরোধী এবং রাসুল (সাঃ) কতৃক নিষিদ্ধ কাজ।
৪. আমার মৃ'ত্যুতে চল্লিশা, কুল-খানি, মিলাদ করবেন না। কারণ এটা স্পষ্ট বিদ'আত।
৫. যারা আমার মৃ'ত্যুর খবর শুনবেন তারা অবশ্যই আমার জানাজায় অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করবেন।
৬. আমার লাশ মাহরাম ছাড়া অন্য কাউকে দেখাবেন না।
৭. আমার লা"শকে সুন্দরভাবে বিশ্বস্ত মানুষ দ্বারা গোসল করানোর ব্যবস্থা করবেন।
৮. লা"শ দাফনে ইসলামিক রীতিনীতি অবলম্বন করবেন, সমাজের নয়।
৯. আমাকে কবরস্থ করার পর কিছুক্ষণ সেখানেই থাকবেন আর পড়বেন "আল্লাহুম্মা সাব্বিতহু আল্লাহুম্মা সাব্বিতহু"। আমার কবরের আজ!ব লাঘবের জন্য ও মুনকার নাকিরের প্রশ্নের উত্তর যেন দিতে পারি সেই দোয়া করবেন "আল্লাহুম্মা সাব্বিত হু আলাল ইমান"।
১০. আমার হয়ে দান-সাদাকা করবেন। আমার সাদাকায়ে জারিয়া চালু থাকলে সেটার খবর নিবেন, সে গুলোকে সমুন্নত করার চেষ্টা করবেন।
১১. আমার মৃ'ত্যু থেকে এই শিক্ষা নিয়ে ফিরে যাবেন। আপনার সময়ও অতি নিকটে।
১২. আমার ছবি কোথাও দিবেন না, আমার আইডি বা অন্য কারো কাছে আমার ছবি থাকলে তা ডিলিট করে দিবেন। বাসায় আমার ছবি থাকলে ফেলে দিবেন, দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখবেন না।
১৩. আমার পাওনা আমার পরিবারকে ফিরিয়ে দিবেন, না পারলে আমার জন্য সাদকাহে জারিয়া করবেন, তাও না পারলে আজীবন আমার জন্য দু'আ করবেন, আমি ক্ষমা করে দিব ইনশাআল্লাহ।
১৪. আপনি আমার কাছে কিছু পেয়ে থাকলে আমার জীবিত অবস্থাতেই আমার কাছে চেয়ে নিবেন, আর যদি ম"রে যাই পরিবারের কাছে চাইবেন (পরিবারের লোকেদের বলবো আপনারা তাদের পাওনা দয়া করে দিয়ে দিবেন)। আর পরিবার না দিলে আল্লাহর জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিবেন, এতে আল্লাহ ও আপনাকে ক্ষমা করবেন।
১৫. আমার জন্য বেশি বেশি দুআ করবেন। আমার নামে গী'বত করবেন না। কারণ, আমি আমার স্থানে পৌঁছে গিয়েছি।
আল্লাহর কাছে আকুলতা, আল্লাহ যেন আমাদের ইমানের সহিত ক!লিম! উচ্চারণের মাধ্যমে শ"হী'দি মৃ'ত্যু দান করেন। আমিন।
#চিন্তা করবেন Md Alamin Miah
samiha38
Deletar comentário
Deletar comentário ?
Md osman
Deletar comentário
Deletar comentário ?